উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
করিমপুর ১ ব্লক তৃণমূল অফিসে ডাঁই করে রাখা সেই লিফলেট। ব্লক সভাপতি তরুণ সাহাকে জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, করিমপুরে নির্বাচনে এনআরসি অন্যতম প্রধান ইস্যু। চার পাতার লিফলেট আমরা বিলি করছি। প্রার্থীও বহু মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দিচ্ছেন। আমাদের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী মহুয়া মৈত্রর নির্দেশেই এই কাজ করা হচ্ছে। তবে আমরা এনআরসি নিয়ে বহু দিন ধরেই মানুষকে সচেতন করার কাজ করে চলেছি। তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহরায় বলেন, এনআরসি অবশ্যই এবারের নির্বাচনে একটি ইস্যু। আমরা সেইমতো প্রচারও করছি। এই প্রচারে সাড়া পড়েছে।
চারপাতার লিফলেটের উপরে বড় বড় করে লেখা ‘এনআরসি ও বাংলা’। অসমের এনআরসি কেন হয়েছে, তার প্রেক্ষাপট এবং বাংলা এনআরসি কেন হওয়ার কথা নয়, তা নিয়ে বিস্তারিত বোঝানো হয়েছে। ভারতের নাগরিক কারা হবে সে সম্পর্কে আইন কী বলছে তা পরিষ্কার করে বোঝানো হয়েছে। সঙ্গে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য যে কাগজগুলি চাওয়া হয়েছে তা ভারতীয় প্রেক্ষাপটে কতটা গ্রহণযোগ্য তা নিয়ে ওই লিফলেটে বিস্তারিত লেখা হয়েছে। শেষে বলা হয়েছে, এনআরসি নিয়ে বাংলার মানুষের কোনও আতঙ্ক বা ভয়ের কারণ নেই। সংবিধানই এনআরসিকে প্রতিরোধ করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এনআরসিকে প্রতিহত করবেন। এই লিফলেট এলাকার বাসিন্দাদের দেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, করিমপুরের মতো বাংলাদেশ সীমানা ঘেঁষা এলাকায় এবার এনআরসি ভোটে অনেকটাই প্রভাব ফেলবে। এর আগে এনআরসি আতঙ্কে রেশন কার্ডের নতুন আবেদন বা সংশোধনের জন্য করিমপুর ১ এবং ২ বিডিও অফিসে দীর্ঘদিন ধরে লম্বা লাইন পড়েছিল। বিডিও অফিসের কর্মীদের আবেদন নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। এনআরসি আতঙ্ক যে করিমপুরের বহু মানুষের মধ্যেই আছে তা কিন্তু পরিষ্কার। এনআরসি নিয়ে সাধারণ স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। আদপে এনআরসি নিয়ে ঠিক কী হবে তা নিয়ে সকলেই উদ্বিগ্ন।
বিজেপির কাছেও এনআরসি এখন অন্যতম প্রধান ইস্যু। বিজেপিও এনিয়ে প্রচার শুরু করেছে। বিজেপি স্থানীয়দের কাছে বলছে, তৃণমূল মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। এনিয়ে বিজেপির তরফে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে, মোদি সরকার আদতে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে চায়। যা এর আগে কোনও সরকার করেনি। তবে অনুপ্রবেশকারীদের দেশ ছেড়ে যেতে বলা হবে। বিজেপির জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, এনআরসি তো অবশ্যই ইস্যু। অসমের এনআরসি নিয়ে তৃণমূল এত কথা বললেও সেখানে বিজেপি জিতছে। এনআরসি নিয়ে মানুষকে ভয় দেখানোর কাজ হচ্ছে। আমরা সেটা বোঝাচ্ছি। আমাদের প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার সুবক্তা। সেটা তিনি খুব সুন্দর করেই বুঝিয়ে বলছেন। আমাদের প্রশ্ন, তৃণমূল নাগরিকত্ব বিলে সমর্থন করছে, না তার বিরোধিতা করছে তা পরিষ্কার করে তারা জানাক। তারা মুখে এক কথা বলছে, কিন্তু আসলে চাইছে শরণার্থী, মতুয়া বা ওই পাড় থেকে যাঁরা এসেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব না দিয়ে শুধু ভয় দেখিয়ে রাখতে। মানুষ এসব ভাঁওতা ধরে ফেলেছে। আমাদের সভায় বহু সংখ্যালঘু মানুষও স্বেচ্ছায় যোগ দিচ্ছেন। মানুষ সব বুঝতে পারছে।
উপনির্বাচনে সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন গোলাম রাব্বি। কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক নৌসাদ আলি বলেন, এনআরসি এবারের ভোটে অন্যতম প্রধান ইস্যু। বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক দল। এনআরসি করে তারা আদতে বিভাজন করতে চাইছে। আর তৃণমূল ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এনআরসি’র পক্ষে কথা বলেছেন। এখন তিনি উল্টো কথা বলছেন। এনআরসি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি দুই দলই ভুল বোঝাচ্ছে। কংগ্রেস এবং সিপিএমই প্রথম থেকে এনআরসি’র বিরোধিতা করে আসছে।