কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
গণতন্ত্রের লক্ষ্য হল, নাগরিকদের জন্য শান্তি-সুস্থিতির ব্যবস্থা করা। বহু টাকা খরচ করে, বহু সময় নিয়ে, বিপুল লোকবল কাজে লাগিয়ে ভোটের আয়োজন করা হয় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখতে। আদর্শ পরিবেশে ভোট প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে কোনও অশান্তি হওয়ার কথা নয়। পুরোটাই সাংবিধানিক ব্যবস্থা মতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই দস্তুর। কিন্তু বৃহত্তম গণতন্ত্র এই পরীক্ষায় বারবার ফেল করছে। ভোটের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত পক্ষগুলি এই ব্যাপারে কতটা সচেতন এই প্রশ্ন ধারাবাহিকভাবে উঠছে। এনিয়ে বিরামহীন বিতর্কও চলছে। তবু বাস্তবিকই হেলদোল নেই রাজনীতির কারবারিদের। নানারকম অশান্তির মধ্যে দিয়ে একটি করে নির্বাচন পর্ব মেটে আর আমরা স্বপ্ন দেখি, আগামী দিনের ভোট হবে শান্তিপূর্ণ এবং রক্তপাতহীন। আগামীকাল বৃহস্পবিার বাংলার নির্বাচন ও রাজনীতির ইতিহাসে আর একটি উল্লেখযোগ্য দিন। এদিন ভোট নেওয়া হবে ভবানীপুরসহ রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে। ভবানীপুরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সারা দেশের মোদি-বিরোধী প্রধান মুখ। স্বভাবতই এই ভোট নিয়ে আগ্রহ সারা ভারতের। সবার কৌতূহলের এই ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়াটাই কাম্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার স্বচ্ছতা বাজায় রেখে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়। এটা দরকার একদিকে রাজ্যের লজ্জার ‘ঐতিহ্য’-কে অতীত করে দেওয়ার জন্য, অন্যদিকে উপস্থিত সময়ের কথা মনে রেখে।
বস্তুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে পুজোর আবহে। পশ্চিমঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসব এটাই। এমনিতেই সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার অন্ত নেই। তার মধ্যে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলছে মহামারীর আতঙ্ক। সবে আশার কথা শোনা গিয়েছে যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসছে না। এটাকেই পুজোর সবচেয়ে বড় উপহার বলে মনে করছে দেশবাসী। বহুদিন বাদে মানুষের মনে কিছুটা হলেও আনন্দ ফিরে এসেছে। এই আনন্দের রেশ ধরে রেখেই মানুষ উৎসবে যোগ দিতে চায়। ভোটগ্রহণ ৩০ সেপ্টেম্বর। তার দু-দিন বাদে, ৩ অক্টোবর ভোটগণনা। অতএব কেউ চায় না ভোটগ্রহণ, গণনা এবং তার আগে-পরে সামান্য গন্ডগোলও হোক। কারণ, ভোটগণনার দু-দিন বাদেই, অর্থাৎ ৬ অক্টোবর মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসানে দেবীপক্ষের সূচনা। পুজো শুরু (পঞ্চমী) ১০ অক্টোবর থেকে। ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী পর্যন্ত এক অখণ্ড আনন্দঘন মুহূর্তের জন্য বাঙালি একটি পুরো বছর অপেক্ষা করে থাকে। কারও পক্ষেই উচিত হবে না, জাতিকে আশাহত করা। অথচ, সোমবার ভবানীপুরেই লক্ষ করা গেল তাল কেটে যাওয়ার লক্ষণ। ভোট প্রচারের শেষদিনে তৃণমূল-বিজেপির রেষারেষিতে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ভবানীপুর। এমনকী, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের এক রক্ষী পিস্তল উঁচিয়ে তাণ্ডবও করেন বলে অভিযোগ। এই স্পর্শকাতর সময়ে সব পক্ষেরই উচিত ভীষণ সংযত থাকা। নির্বাচন কমিশনের জন্যও এটা নিঃসন্দেহে এক অগ্নিপরীক্ষা। রাজনৈতিক দলগুলি এবং কমিশনের সদিচ্ছা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করছে, উৎসবের বাংলা এবার কতটা উৎসবমুখ থাকতে পারবে।