কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
করোনা নিয়ে কিছু বিষয়ে নানা মুনির নানা মত। সন্দেহ নেই। কিন্তু সারা পৃথিবীর চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা একমত যে, সমাজের সমস্ত শ্রেণিকে করোনা পরিস্থিতি থেকে বের করে আনার একটাই পথ—তার নাম ভ্যাকসিন গ্রহণ। এটাই ভবিতব্য অনুমান করে বিশ্বজুড়ে সরকারগুলি নিজ নিজ গবেষকদের ভ্যাকসিনের রিসার্চে উৎসাহ দিয়েছে। দুই থেকে তিন শত ভ্যাকসিন আবিষ্কারও করেছেন রাশিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেন, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের গবেষকরা। এফিসিয়েন্সি, এফেক্টিভনেস এবং সেফটির নিরিখে ভ্যাকসিন ব্যবহারের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেই বিচারে বিভিন্ন দেশের সরকার এখনও পর্যন্ত ২২টি ভ্যাকসিনকে মানবদেহে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ভারতের প্রস্তুত কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিন। টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা কোনও দেশ অস্বীকার করেনি। একটা সময় পর্যন্ত কিছু মানুষের মধ্যে ভয়, দ্বিধা, সংশয় ছিল অস্বীকার করা যাবে না। তবে অল্পদিনেই মানুষ সেসব কাটিয়ে উঠেছে। টিকাকরণের গুরুত্ব বরং দিন দিন বেশি করে উপলব্ধি করছে সবাই। সারা পৃথিবীতে দৈনিক গড়ে ৩ কোটি ৯ লক্ষাধিক মানুষ টিকা নিচ্ছেন। টিকাকরণ যে দ্রুত গতিতে চলছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সারা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের পূর্ণ টিকাকরণ (দুটি ডোজ) সম্পন্ন হয়ে যাবে।
বিশ্বজুড়ে এই সচেতনতা প্রশংসনীয়। ঠিক এখানেই যেন তাল কেটে দিতে চাইছে ‘প্রথম বিশ্ব’। বিশেষ করে ইউরোপ এবং আমেরিকা তৃতীয় বিশ্বের টিকাকরণের মান নিয়ে সংশয় জারি রেখেছে। ভারতের মানুষ সবচেয়ে বেশি পেয়েছে দুটি ভ্যাকসিন—কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিন। তার মধ্যে কোভিশিল্ডকে সবেমাত্র মান্যতা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনও মান্যতা পায়নি কোভ্যাকসিন। অন্যদিকে, ব্রিটেন এই লেখা পর্যন্ত ভারতের কোনও করোনা ভ্যাকসিনকেই মান্যতা দেয়নি। অথচ ব্রিটেনে বহুব্যবহৃত এবং মান্যতাপ্রাপ্ত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে কোভিশিল্ডের সামান্যতম পার্থক্যও নেই। তফাত এটাই যে প্রথমটি ব্রিটেনে প্রস্তুত এবং দ্বিতীয়টি প্রস্তুত ভারতে ও ভারতীয় সংস্থা কর্তৃক। ধনী এবং তথাকথিত ‘উন্নত’ রাষ্ট্রগুলির এই বৈষম্যের নীতি শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, অপমানজনকও বটে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় অগ্রণী ভারতীয় যুব সম্প্রদায়ের। ব্যবসা এবং পর্যটনের প্রয়োজনে যাঁদের বিদেশে যাতায়াত করতে হয় দুর্ভোগে পড়েছেন তাঁরাও। এই মারাত্মক সমস্যাটির দ্রুত নিষ্পত্তি কাম্য। ভারতে ব্যবহৃত সবগুলি টিকার আন্তর্জাতিক মান্যতা লাভের জন্য ভারত সরকার এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক। এর অন্য প্রয়োজনও আছে। ভারতে ব্যবহৃত টিকার মান নিয়ে সংশয় প্রচারিত হলে নাগরিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়বে। ফের অনীহা তৈরি হবে টিকাগ্রহণের ব্যাপারে। অথচ দেশ প্রস্তুত হচ্ছে কম বয়সিদেরও টিকাকরণের লক্ষ্যে।