কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
গতবছর করোনার আবহে ঘরবন্দি থাকার একঘেয়েমি কাটাতে দুর্গাপুজোর পরিকল্পনা করেন তাঁরা। জানানো হয় ‘ভালোবাসা’র কর্মকর্তা আব্দুস সামাদকে। আবাসিকদের উন্মাদনা দেখে রাজি হয়ে যান সামাদ সাহেব। শুরু হয় মহাযজ্ঞের প্রস্তুতি। ‘সবার রঙে রঙ মেলাতে’ তাঁরাই প্রতিবেশী আদিবাসী মহল্লায় গিয়ে পুজোতে শামিল হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আসেন। পুজোয় এই রেসিডেন্সির মুসলিম কর্মীও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। পুজোর দিনগুলি পরিণত হয় সম্প্রীতির মিলন ক্ষেত্রে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন শান্তিনিকেতন থানার তৎকালীন ওসি ও পুলিস সুপার। তাঁরাও মণ্ডপে গিয়ে আবাসিকদের উৎসাহ দেন।
বর্তমানে এখানে ২২ জন আবাসিক রয়েছেন। এরমধ্যে ১২ জন বৃদ্ধা ও দশজন বৃদ্ধ। বয়স বাড়লেও মন তাঁদের এখনও তরুণ। বছরভর গল্পের বই পড়া, বাগান চর্চা, রান্নাঘরে বিভিন্ন ব্যাঞ্জন রান্নার নির্দেশ দিতে দিতেই তাঁদের সময় কেটে যায়। কিন্তু দুর্গাপুজো এগিয়ে আসতেই তাঁদের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়ে গিয়েছে। আলোকসজ্জা, মণ্ডপসজ্জা, নিজেদের মধ্যে চাঁদা তোলা এসব নিয়ে এখন তাঁদের ব্যস্ততার শেষ নেই। আবাসিক বিদ্যুৎ ভৌমিক, বিশ্বরূপ ঘোষ বলেন, আমরা দুর্গাপুজোর সময় নিজেরাই বাজারহাট করা, পুজোর সামগ্রী জোগাড়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রসাদ বিতরণ প্রভৃতির দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছি। ইতিমধ্যেই সেসব কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে। এখন শুধু অধীর আগ্রহে বসে আছি, কবে মা দুর্গার মূর্তি আমাদের আবাসনে আসবে।
পুজো নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা জানালেন আর এক আবাসিক শিপ্রা রায়। তিনি বলেন, আমাদের আবাসিকদের মধ্যে অনেকেই ভালো আচার, দইবড়া শুকনো খাবার প্রভৃতি তৈরি করতে জানেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সেগুলি খোয়াইয়ের শনিবারের হাটে বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে। তাতে পুজোর খরচ তো বেরিয়ে আসবেই পাশাপাশি আদিবাসী শিশুদের পোশাক ও পড়াশোনার সামগ্রী কেনার টাকাও অনায়াসে উঠে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। সামাদ সাহেব বলেন, এই বয়সেও ওঁদের উন্মাদনা অনুকরণযোগ্য। পুজোর চারটে দিন যেভাবে তাঁরা নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগ করে নেন তাতে মনে হয় না যে এই মানুষগুলি পরিবার থেকে এত দূরে এসে আছেন। ভালো-মন্দ মিশিয়ে ‘ভালোবাসা’য় এভাবেই যদি তাঁদের দিন কেটে যায় মন্দ কী!