কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
যদিও হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক এদিনও শিশুমৃত্যুর কারণ জানাতে গিয়ে অপুষ্টি, কম ওজনের দিকগুলিই প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর পর্যন্ত যে তিনটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাদের বয়স যথাক্রমে ন’মাস, ৩৪ দিন ও ১ মাস ১৫ দিন। হাসপাতাল সুপার বলেন, ন’মাস বয়সি জলপাইগুড়ি জেলার বীরপাড়ার শিশুটি ও কাঠামবাড়ির ৩৪ দিনের শিশুটির ওজন অনেকটাই কম ছিল। অপুষ্টির কারণে ওদের নিউমোনিয়া হয়েছিল। শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ির হাতিঘিষার ১ মাস ১৫ দিনের শিশুটি সেপসিসে আক্রান্ত হয়েছিল। ওদের সকলকেই সঙ্কটজনক অবস্থায় মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এদিন সন্ধ্যায় আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়। দেড়মাস বয়সের ওই শিশুটির বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের কালাগছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এসএনসিইউ’র সামনে কালাগছের মৃত শিশুর দাদু মহম্মদ তালিফ বলেন, নাতনির জ্বর, শ্বাসকষ্ট হওয়ায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এটা অনেক বড় জায়গা, ভেবেছিলাম, নাতনিকে সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারব। কিন্তু, সন্ধ্যায় হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে জানানো হয় নাতনিকে ওঁরা বাঁচাতে পারেনি। এদিন মৃত শিশুদের পরিবারের সদস্যরা মেডিক্যালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হন। তাঁদের অভিযোগ, ইঞ্জেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁদের শিশু মারা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ডিন ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, সাধারণ মানুষের পক্ষে চিকিৎসার জরুরি ও শেষ পদক্ষেপ সম্পর্কে ধারণা নেই। যখন দেখা যায়, সবরকম চেষ্টা করেও কোনও শিশু বা রোগী সাড়া দিচ্ছে না, ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে, তখন শেষ চেষ্টা হিসেবে জীবনদায়ী কিছু ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তাতে কেউ বেঁচে যায়, আবারও কারও মুত্যু হয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। যাঁদের শিশু মারা গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের মনে হয়েছে ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্যই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
তবে পরিস্থিতি যে ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে তা বুঝতে পেরেই এদিন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ ইন্দ্রজিৎ সাহা জরুরি বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকে ডিন ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্ত, হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক, শিশু বিভাগের প্রধান ডাঃ মধুমিতা নন্দী সহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের প্রধানরা ছিলেন। বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনে পরপর এতগুলি শিশু মৃত্যুর কারণ নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। কোথাও কোনও ত্রুটি বা গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করার জন্য বলা হয়। এখানে উন্নত পরিকাঠামো রয়েছে, তারপরেও কেন রেফার হয়ে আসা সঙ্কটাপন্ন শিশুদের সুস্থ করা গেল না। এ ক্ষেত্রে কোথাও গাফিলতি রয়েছে কি না, সেই দিকটিও দেখা হয়। তাতে শিশু বিভাগের চিকিৎসকদের আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।