কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
গেরুয়া বাহিনীর এই ‘কীর্তি’ অবশ্য নতুন নয়। যেকোনও বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার খেলায় যোগীর পথপ্রদর্শক অবশ্যই মোদি সরকার। অতীতে দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ, কৃষকস্বার্থ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে এবং গত লোকসভা ভোটের আগেও দলীয় ইস্তাহারে যেসব দাবি করা হয়েছে তা বাস্তবের থেকে অনেক দূরে বলেই প্রমাণিত হয়েছে। অসত্য কথা বলার দৌড়ে দিল্লীশ্বর বাকি সকলকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন। এনিয়ে কম চর্চা হয় না। একইভাবে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া তথ্য বা জাল ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিজেপির আইটি সেল যে ‘দক্ষতা’ দেখিয়েছে তা সবাইকে লজ্জায় ফেলে দিতে পারে। যেমন এরাজ্যে বিভিন্ন জেলার গোলমালে ভোজপুরি সিনেমার দৃশ্য, বাংলাদেশ বা নাইজিরিয়ার ছবিও ব্যবহার করার নজির রয়েছে তাদের ঝুলিতে। আবার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রী ফোটোশপ করা বন্যা পরিদর্শনের ছবি, আবাস যোজনার বিজ্ঞাপনে কলকাতার এক মহিলার ছবি নিয়েও জলঘোলা হয়েছে প্রচুর। মহাজনকে অনুসরণ করে যোগীরাজ্য যেন সেই ‘কীর্তির স্বাক্ষরই রাখল।
আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন। রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, গত চারবছরে যোগী আদিত্যনাথের জনপ্রিয়তায় ভাটার টান। দলের মধ্যেই তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী তৎপর হয়েছে। এই অবস্থায় তাঁকে ফের ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ’ না-করারও জোরালো দাবিও উঠেছিল। কিন্তু এতে ভুল বার্তা যেতে পারে বলে মোদি-শাহরা তাঁদের পোস্টারবয়কে সামনে রেখেই পরের নির্বাচনের বৈতরণী পেরতে চাইছেন। কিন্তু ঘটনা হল, রামরাজ্য গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যোগী ক্ষমতায় বসেছিলেন তা অনেকাংশেই ব্যর্থ। তাই হয়তো এখন অন্যের সাফল্যের দিকগুলিকে নিজেদের সাফল্য বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে! শুধু তাই নয়, যোগী সরকার সরকারি কর্মীদের ফেক তালিকাও প্রকাশ করে তরুণ ছেলেমেয়েদের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে অসত্য দাবিও করেছে। প্রকৃতপক্ষে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনও কাজই হয়নি ওই রাজ্যে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও লজ্জাজনক। নারী নির্যাতনে দেশের মধ্যে পয়লা নম্বরে। ব্যর্থতা কোভিড মোকাবিলাতেও। শ্মশানে জায়গা না-পাওয়া কোভিডে মৃতের সারিবদ্ধ লাশ জ্বালিয়ে দেওয়ার ছবি, বহমান গঙ্গায় মৃতদেহ ভেসে যাওয়ার ছবি তো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ধিক্কৃত হয়েছে। তবে ভোটের লক্ষ্যে অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের কাজ ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে শেষ করতে অর্থ, নিষ্ঠা সরকারি তৎপরতার কোনও খামতি নেই। এবার ওই রাজ্যেই বিজেপির দীর্ণ অবস্থা প্রকাশ পেল পশ্চিমবঙ্গের ছবিকে হাতিয়ার করায়। তাই ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’-এর তত্ত্বকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। যারা গুজরাত মডেল নিয়ে গলা ফাটায় তাদেরই ভোটভিক্ষার বিজ্ঞাপনে ‘মা’ উড়ালপুলের ছবি যেন পরোক্ষে বাংলার উন্নয়নেরই স্বীকারোক্তি। আসলে বেঙ্গল মডেলই ভরসা। তাই কি বেঙ্গল মডেল হাতিয়ে নিজেদের উন্নয়নের ঢাক পেটানোর অপচেষ্টা হল? যাই হোক, এনিয়ে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় যোগী প্রশাসনকে অবশ্যই বেকায়দায় ফেলল।