কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
পড়ুয়াদের টিকা নিয়ে কোনও সংশয় থাকলে তার ফল মারাত্মক হতে পারে। যদিও বাবা মায়েদের দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতেও কেন্দ্র ছোটদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকার যুক্তিটিরই খাড়া করেছে। প্রশ্ন হল, এই যুক্তিতেই কি স্বস্তি পাবেন অভিভাবকরা? কারণ, এদেশে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কার কথা যখন প্রথম শোনা গিয়েছিল তখন বলা হয়েছিল প্রথম দুটির থেকে এই ঢেউয়ের পার্থক্য রয়েছে। শরীরে ইমিউনিটি বেশি হওয়ায় প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ শিশু কিশোরদের উপর তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। কিন্তু তৃতীয় ঢেউয়ে সেই আশঙ্কাই সবচেয়ে বেশি। মাস্ক, স্যানিটাইজার, দূরত্ববিধির ফাঁক গলে এবারের ঢেউ আক্রমণ করতে পারে বাচ্চাদের। এমন আশঙ্কার কথা শুনিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারই আগে সতর্ক করেছিল। অথচ তারাই এখন উল্টো কথা বলছে! একথা ঠিক, বাড়ি থেকে অনলাইন ক্লাস করে ছাত্ররা হাঁফিয়ে উঠেছে। তারা চাইছে স্কুল খুলুক। শিক্ষার স্বার্থেই দেশের কয়েকটি রাজ্যে ইতিমধ্যেই ধাপে ধাপে স্কুল খুলতেও শুরু করেছে। এ রাজ্যেও শারদোৎসবের পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে স্কুল খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ পরিস্থিতি বুঝেই সিদ্ধান্তটি হওয়া উচিত। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কথামতো স্কুল খোলার ক্ষেত্রে বাচ্চাদের টিকা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আর থাকল না। কিন্তু রয়ে গেল কিছু প্রশ্ন। কমবয়সিদের টিকাকরণের কী হবে? একথা ঠিক, বাচ্চাদের ইমিউনিটি বেশি। বড়রা আক্রান্ত হলে তাদের বিপদ বেশি। তাই স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং পড়ুয়ার অভিভাবকদের টিকাকরণ অনেক বেশি জরুরি। কিন্তু বাচ্চাদের টিকাকরণের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি সরকার। তাদের ক্ষেত্রে টিকার জন্য স্পষ্ট নিদান এখনও দেয়নি। তাই আশঙ্কায় অভিভাবকরা। সত্যিটা হল, কেন্দ্র টিকাকরণের সাফল্যের জয়ঢাক যতই পেটাক না কেন ১৮ বছরের নীচে কিশোরদের টিকাকরণ এখনও শুরুই করতে পারেনি সরকার। আর বাজারে বাচ্চাদের জন্য টিকার এখনও দেখা নেই। তথ্য হল, দেশে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের টিকা দেওয়ার সরকারি অনুমতি পেয়েছে একমাত্র জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি ভ্যাকসিন। যদিও বাজারে তা আসেনি। বাচ্চাদের ভ্যাকসিনের জন্য ছাড়পত্রের অপেক্ষায় কোভ্যাকসিনও। তাই বাচ্চাদের জন্য এই মুহূর্তে সরকারের হাতে কোনও টিকাই নেই। ফলে স্কুল খোলার অনুমতি দিতে হলে বাচ্চাদের টিকাকরণ বাধ্যতামূলক না-করা ছাড়া কেন্দ্রের হাতে কোনও উপায়ও নেই। তাই প্রশ্ন, ছোটদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি বলে যুক্তি খাড়া করে কি কেন্দ্র পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে চাইছে? এই পরিস্থিতিতে স্কুলপড়ুয়াদের টিকাকরণের বিষয়ে কেন্দ্রের পরিকল্পনাটি ঠিক কী তা নিশ্চিত করে দেওয়া দরকার।
তথ্য বলছে, ভারতে প্রাপ্তবয়স্কদের ৫৮ শতাংশ প্রথম ডোজ পেয়েছেন। দুটি ডোজ পেয়েছেন মাত্র ১৮ শতাংশ, তার মানে দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের বেশিরভাগের এখনও দুটি ডোজ টিকাকরণ শেষ হয়নি। এর বাইরে রয়েছে ১৮ বছরের নীচের শিশু কিশোররা। তাদের টিকাকরণ কবে শুরু হবে তা কেউ জানে না। প্রশ্ন উঠছে, এর উত্তর সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। যদিও কেন্দ্র বলেছিল, আগস্ট থেকেই তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হবে, যা এখনও শুরুই হয়নি। তবে স্কুল খোলার জন্য শিশুদের ভ্যাকসিন জরুরি নয় ঘোষণাটি পড়ুয়াদের কাছে নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের জন্য ভ্যাকসিনের বিষয়ে নিশ্চিত করে সরকার কোনও বক্তব্য রাখছে ততক্ষণ নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না অভিভাবকরা। তাই এব্যাপারে সরকার তার বক্তব্য স্পষ্ট করুক।