হস্তশিল্পীরা তাদের কাজের সাফল্যের জন্য সুনাম পেতে পারেন। সঙ্গীতাদি চারুকলার ক্ষেত্রে বিশেষ সম্মান লাভের যোগ। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈষ্ণব গোপালদাস বাবাজি এই মেলার পত্তন করেন। কথিত আছে, ১১৭৬ বঙ্গাব্দে মন্বন্তরের সময় মাধুকরী করতে বীরভূমের কেঁদুলি পর্যন্ত যান গোপাল দাস বৈরাগ্য। ফিরে এসে দধিয়া বৈরাগ্যতলায় তিনি নিজের সাধন পীঠে কেতুগ্রাম ও বীরভূম এলাকার মানুষের জন্য অন্ন মহোৎসব শুরু করেন। দুর্ভিক্ষের সময় অর্ধাহারে বা অনাহারে থাকা এলাকার গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য এই মহোৎসব মাসাধিককাল চালিয়েছিলেন। সেই মন্বন্তরের স্মৃতিকে জিইয়ে রাখতে আজও মাকুড়ি সপ্তমীতে গ্রামের মানুষ বাবাজির সাধন পীঠে এসে রান্না করে খেয়ে বাড়ি যান। বৈষ্ণব সাধক আউলিয়া সম্প্রদায়ের সন্তরাম আউলিয়ার কাছে দীক্ষা নিয়ে ১১৪৩ সালের এক সময় গোপালদাস ব্রজবাসী দেশ ভ্রমণকালে কেতুগ্রামের দধিয়া গ্রামে আসেন। জঙ্গলের মধ্যে রামসীতাকে রেখে পুজো অর্চনা করতেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে রঘুনাথ জিউকে প্রতিষ্ঠা করেন। বর্ধমানের মহারাজা তিলকচন্দ মহতাব ভুল করেননি বাবাজিকে চিনতে।
১১৫২ সালে গোপাল দাস বাবাজির সাধের রামসীতা ও রঘুনাথ জিউর মন্দির প্রতিষ্ঠা করার জন্য ৬৯ বিঘা জমি দান করেছিলেন। বীরভূমের পাকুরহাঁস গ্রামের এক বিত্তবান সহৃদয় ব্যক্তি গোপালদাস বাবাজির এই সাধনস্থলে পুকুর খনন করে দিয়েছিলেন। শোনা যায়, এক সময় এখানে মেলায় গোরু, গোরুর গাড়ি, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, এমনকি ঘোড়া ও হাতির বেচাকেনা হতো। কাঠের আসবাব পত্র, লোহার সামগ্রী, মাটির তৈজস পত্র সহ গৃহস্থালীর খুঁটিনাটি আজও বিক্রি হয়। মেলাকে ঘিরে বৈষ্ণব ভক্তদের ঘিরে আগ্রহ থাকে এলাকার বাসিন্দাদেরও। পরম্পরা ও রীতি মেনে আজও দধিয়া বৈরাগ্যতলার মেলা তার জনপ্রিয়তা হারায়নি।
কেতুগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুকান্ত রায়চৌধুরী বলেন, গোপাল দাস বাবাজির মেলা হচ্ছে পুরনো প্রথা ও ঐতিহ্য মেনেই। আমরা মেলায় পানীয় জল, স্টেজ করে দিয়েছি। এবার প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়েছে। মেলায় প্রচুর বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষের ভিড় হয়। বাউল গানের সুরে মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ।