মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, গত ৪ ডিসেম্বর ছত্তিশগড়ের আইটিবিপি জওয়ানদের ক্যাম্পে এক সহকর্মীর গুলিতে প্রাণ হারান আড়ষার খুকড়ামুড়া গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বরূপ মাহাত। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বৃহস্পতিবার সারাদিন মৃতদেহ শেষবারের জন্য দেখার আশায় মৃত জওয়ানের পরিবার সহ গোটা গ্রাম অপেক্ষা করলেও ওইদিন দেহ এসে পৌঁছয়নি। শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিট নাগাদ আইটিবিপি জওয়ানদের একটি কনভয় কফিনবন্দি জওয়ানের মৃতদেহ খুকড়ামুড়া গ্রামে নিয়ে আসে। আড়ষা থানার ওসি সহ পুলিসকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কফিন বন্দি জওয়ানের নিথরদেহ গ্রামে পৌঁছতেই পরিবারের পাশাপাশি কার্যত গোটা গ্রামেই কান্নার রোল ওঠে। প্রথমেই খুকড়ামুড়া গ্রামে নিজেদের পুরনো বাড়িতে জওয়ানের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পরে জওয়ানের মৃতদেহ তাঁর বর্তমান বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন জওয়ানের মা সহ পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে পরিবারের সদস্যরা শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর কফিনবন্দি জওয়ানের দেহ দাহ করার জন্য গ্রামেরই একপ্রান্তে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। পথে পুরুলিয়ার সংসদ সদস্য জ্যোতির্ময় সিং মাহাত কফিন কাঁধে নিয়ে খানিকক্ষণ হাঁটেন। গ্রামের একপ্রান্তে জওয়ানের মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। যে জাতীয় পতাকায় কফিনটি মোড়া ছিল তা পূর্ণ মর্যাদায় মৃত জওয়ানের বাবা ভীমচন্দ্র মাহাতর হাতে তুলে দেন আইটিবিপি জওয়ানরা। তারপর সেখানেই প্রয়াত জওয়ানকে গান স্যালুটের মাধ্যমে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অন্যদিকে, এদিন সকাল থেকেই পরিবারের পাশেই প্রায় সারাক্ষণ ছিলেন আড়ষা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি উজ্জ্বল কুমার। পরে মৃত জওয়ানের বাড়িতে এসে পৌঁছন অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব লোচন সোরেন, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সুশান্ত মাহাত প্রমুখ। মৃতের মায়ের সঙ্গেও কথা বলেন মন্ত্রী। এবিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মর্মান্তিক এই ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ। মুখ্যমন্ত্রী নিজে আমাদের ফোন করে পরিবারের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন জওয়ানের মা সহ পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাজ্য সরকার জওয়ানের পরিবারের পাশে রয়েছে।
বান্দোয়ানের বিধায়ক বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ওই পরিবারের পাশে সবরকমভাবে রয়েছে। এদিন মৃতের দাদা আশিস মাহাত বলেন, আইটিবিপির পক্ষ থেকে এদিনও কিছু বিস্তারিত জানানো হয়নি। কীভাবে ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে জানি না। শুধুমাত্র থানা থেকেই জানানো হয়েছে। দেশের সেবা করতে গিয়ে ভাইয়ের এভাবে মৃত্যু কোনওমতেই মেনে নিতে পারছি না।
এবিষয়ে মৃতের বাবা ভীমচন্দ্র মাহাত বলেন, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি। ঠিক কী ঘটনা হয়েছিল তা আমাদের জানানো হোক। অন্যদিকে, এদিনই মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার তদন্তের দাবিতে সরব হন আদিবাসী কুর্মি সমাজের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাত। তিনি বলেন, দেশের সেবা করতে গিয়েছিলেন বিশ্বরূপবাবু। তাঁর এভাবে মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না।