হস্তশিল্পীরা তাদের কাজের সাফল্যের জন্য সুনাম পেতে পারেন। সঙ্গীতাদি চারুকলার ক্ষেত্রে বিশেষ সম্মান লাভের যোগ। ... বিশদ
এদিন বাণিজ্য সম্মেলনে তারকা শিল্পপতিদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। জেএসডব্লু কর্তা সজ্জন জিন্দাল, আইটিসি চেয়ারম্যান সঞ্জয় পুরী থেকে শুরু করে সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, হর্ষ নেওটিয়া, হর্ষবর্ধন আগরওয়ালরা যেমন মঞ্চে ছিলেন, তেমনই এদিনের তারকা মুখ ছিল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী সস্ত্রীক হেমন্ত সোরেন এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। লগ্নির ঠিকানা হিসেবে বাংলা যে অনেক এগিয়ে, এক বাক্যে মানলেন সবাই। ২৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক সহ উপস্থিত ছিলেন ২০০’র বেশি বিদেশি অতিথি। তাঁদের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে মুকেশ আম্বানি বলেন, ‘আপনার নামের অর্থ সমবেদনা বা সহমর্মিতা। আর মমতাদিদি মানে, বাণিজ্য। দিদি হৃদয় দিয়েই শিল্প চান এখানে।’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে সামনে এনে তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘সৌরভ ঠিকই বলেছেন, দিদি যা প্রতিশ্রুতি দেন, রাখেন। তিনি ১৪ বছর ক্ষমতায় আছেন। সেই সুফল পাচ্ছে বাংলা। একসময় ধারণা ছিল, দেশের পশ্চিমভাগ থেকেই ব্যবসা হয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়। কিন্তু সেই যুগ বদলাচ্ছে দ্রুত। বাংলার এই নবজাগরণকে বিশ্বের কেউ আটকে রাখতে পারবে না।’ এদিন মুকেশ আম্বানি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ডিজিটাল পরিকাঠামো থেকে শুরু করে রিটেল, শিল্প ও ভাস্কর্য, পরিবেশ বান্ধব শক্তি প্রভৃতিতে ১০ বছরে ৫০ হাজার কোটি বিনিয়োগ করবেন। বাংলার জন্য তাঁর ‘গ্যারান্টি’তে আশ্বস্ত হয়েছেন সকলেই।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বাংলাকে যতটা শিল্পবান্ধব হিসেবে তুলে ধরেছেন, ততটাই গুরুত্ব দিয়ে সামনে এনেছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথীর মতো সামাজিক প্রকল্পকে। তাঁর কথায়, ‘আগে মানুষ ও মানবিকতা। তারপর অন্য কিছু।’ এদিন তিনি দাবি করেন, আগের সম্মেলনগুলি থেকে ১৯ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল। তার মধ্যে ১২ লক্ষ কোটির প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। বাদবাকি কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। তিনি এদিনও শিল্পমহলকে মনে করিয়ে দেন ভৌগোলিক অবস্থানে বাংলার গুরুত্ব। আশ্বাস দেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, পর্যাপ্ত মেধা ও উপযুক্ত পরিকাঠামোর। স্পষ্ট জানিয়েছেন, বন্ধ বা ধর্মঘটের কোনও জায়গা নেই এ রাজ্যে।
এদিন বক্তব্যের শেষ লগ্নে টাটা-প্রসঙ্গ টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, মঙ্গলবারই তাঁর সঙ্গে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান নটরাজন চন্দ্রশেখরনের কথা হয়েছে। তিনি বাণিজ্য সম্মেলনে আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু অন্য কর্মসূচি থাকায় আসতে পারেননি। তবে তিনি সিইও সহ শীর্ষ আধিকারিকদের পাঠিয়েছেন এখানে। মমতা বলেন, ‘বাংলায় তাঁরা আসতে আগ্রহী। এখানে আরও বিনিয়োগ করতে চান তাঁরা। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে তিনি পরে কলকাতায় আসবেন।’ মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, শিল্প আনার আন্তরিকতায় ফাঁক রাখতে চান না তিনি। তাঁর কথায়, ‘বাংলা উদ্যোগপতিদের সুখের ঘর, আস্থার জায়গা।’
লগ্নি বার্তা
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ
ডেটা ও নেটওয়ার্ক, রিটেল, শক্তি, বাংলার শিল্প-ভাস্কর্য ও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আগামী ১০ বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা
অম্বুজা-নেওটিয়া গ্রুপ
১৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নি। তালিকায় ৫টি হাসপাতাল, যার মোট শয্যা সংখ্যা ১,৩০০। ন’টি হোটেল, যার ঘরের সংখ্যা মোট ১,৪০০। গল্ফ-থিমের টাউনশিপ প্রকল্প এবং বাণিজ্যিক ও আবাসিক প্রকল্প
জেএসডব্লু
প্রথম পর্যায়ে ৮০০ মেগাওয়াটের দু’টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলবে। বিনিয়োগ হবে ১৬ হাজার কোটি টাকা। পরবর্তী পর্যায়ে এমন আরও দু’টি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়তে আগ্রহী তারা। গড়া হবে ২ হাজার একরের শিল্প পার্কও
আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপ
বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষাখাতে ১০ হাজার কোটি টাকা
আইটিসি
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গ্লোবাল সেন্টার অব এক্সেলেন্স।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মুখ্যমন্ত্রী
আমার ফেভারিট মুকেশজি তো সব কিছুই বলে দিয়েছেন। কোনও কিছু বাদ রাখেননি। উনি আজকে ঘোষণা করলেন যে আগামী দিনে তাঁর ‘জিও’র নতুন প্রজেক্ট এই কলকাতা থেকেই বিশ্বের বাজারে ছড়িয়ে পড়বে। আমি খুব খুব খুশি।
বাংলাকে ভুলে যাবেন না, বাংলাও আপনাদের ভুলবে না। বাংলায় আসুন। বাংলায় বিনিয়োগ করুন। বাংলা আপনাকে ফেরাবে না।
রাজ্যের গড় উৎপাদন বেড়েছে ৩.৯৩ গুণ। ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩.৮৫ গুণ।
আমরা বিভাজন করি না। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলি। শিল্প স্থাপনের জন্য ৫ হাজার একর জমি এই মুহূর্তে রাজ্যে রয়েছে। বেসরকারি সংস্থা
যাতে শিল্প তালুক তৈরি করতে পারে, আমরা তার জন্য নীতি তৈরি করেছি।
স্টেট লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। বিনিয়োগের কোনও প্রস্তাব এলেই যাতে তা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করা যায়, তা দেখবে এই কমিটি। এছাড়াও রাজ্যে ছ’টি ইকনমিক ফ্রেট করিডর তৈরি করছি আমরা।
প্রথমে ভালো মানুষ হতে হয়। তবেই নিজেকে নেতা বলা যায়, বা নেতা হওয়া যায়।