শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
শরীর সুস্থ রাখতে এবং দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে যেতে পর্যাপ্ত ঘুমের দরকার, এমন কথা জানেন সকলেই। কিন্তু কলকাতার অভিজ্ঞতা বলছে, ঘুম-কাড়া জীবনে অভ্যস্ত হতে জুড়ি নেই এই শহরের। গোদরেজ ইন্টিরিও’র করা ওই সমীক্ষায় যে তথ্য ধরা পড়েছে, তাতে ঘুম নিয়ে পুরনো ধ্যানধারণাকে একেবারে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে নয়া প্রজন্ম। একটি জনপ্রিয় প্রবাদ আছে, আগে বিছানায় যাওয়া এবং আগে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসে মানুষ স্বাস্থ্যবান, বুদ্ধিমান এবং বিত্তবান হয়। কিন্তু সেসব প্রবাদকে আমল দিতে নারাজ সবাই। সমীক্ষায় বলছে, এ শহরে রাত ১০টায় ঘুমোতে যাওয়ার হার শতকরা এক শতাংশেরও কম। অথচ এই প্রজন্মের ৬১ শতাংশ বলছে, রাত ১২টার পরই তারা ঘুমনোর কথা চিন্তা করে। ৩৩ শতাংশ শিশু বা কিশোরের স্পষ্ট বক্তব্য, তারা সারা রাতে ছ’ঘণ্টার কম সময় ঘুমোয়। ঘুম-চুরির এই এপিসোডে অবশ্য গোটা দেশ হাত মিলিয়েছে একসঙ্গে। ৯৩ শতাংশ মানুষ সমীক্ষায় জানিয়েছে, তারা পর্যাপ্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত।
বিছনায় গড়িয়ে পড়লেই অনেকে এক ঘুমে রাত কেটে সকাল দেখে। অনেকে আবার কিছুক্ষণ গড়াগড়ি খায়। টিভি দেখে। বই পড়ে। বা পড়ার বইয়ে চোখ রেখেই চোখ জুড়িয়ে আসে অনেকের। কিন্তু এসব অভ্যাসকে দূরে ঠেলে জেনারেশন ওয়াইয়ের চোখ এখন মোবাইলে। ঘুম-চুরির কারণ খুঁজতে গিয়ে এই তথ্য সামনে এনেছে সমীক্ষা। ‘বেড টাইম’-এর আগে এখন অভিধানে নতুন শব্দ ‘স্ক্রিন টাইম’। তা সেই স্ক্রিন যতটা টিভির, তার চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট ফোনের। টিভির পর্দায় কোনও ভালো ম্যাচ বা সিরিয়াল হলে আলাদা কথা। তাছাড়া টিভিতেও তেমন মন নেই। তার চেয়ে মোবাইলের স্ক্রিনে অনেক বেশি বিনোদন, গল্পগাছা। হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক ছাপিয়ে ঘুমের আগে আরও বেশি করে চোখ টানে ইউটিউব, নেটফ্লিক্স। সেই মোহ উপেক্ষা করে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাসে ফিরতে রাজি নয় অনেকেই। সমীক্ষায় ৪৭ শতাংশ কচিকাঁচা জানিয়েছে, টিভি ও মোবাইলে বিনোদন খোঁজা তাদের নিত্য রুটিন। এর বাইরে ঘুম তো বটেই, বেঁচে থাকাই পানসে।
তাহলে উপায়? সমীক্ষাটি অবশ্য এই ঘুম চুরির কোনও কিনারা করতে পারেনি। বরং তারা খুঁজতে চেয়েছে কম ঘুমের পরিণতি। সেখানে ১৮ বছরের নীচে থাকা কিশোর-কিশোরীরা জানাচ্ছে, সকালে ঘুম থেকে উঠেও তাদের ঘুম-ঘুম ভাব কাটে না। ঢুলুনি আসে। ম্যাজম্যাজ করে গা। ক্লান্ত লাগে। স্কুল যাওয়া, টিউশন, পড়তে বসা বা খেলাধুলোর আগ্রহও যে কমিয়ে দেয় ওই কম ঘুম, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দিনের শুরুতেই উদ্যম হারিয়ে ফেলে নয়া প্রজন্ম। মানসিক বিকাশও যে কোথাও থমকে যায় নিদ্রাহীনতাকে আকঁড়েই, তা মানেন অনেকে। কিন্তু নিজের এই ক্ষতিকে আমল দিতে নারাজ নতুন প্রজন্ম। সুস্বাস্থ্য নয়। বিত্ত নয়। বুদ্ধির বিকাশ নয়। অর্ধেক রাত জেগে কাটানোই এই জেনারেশনের বারোমাস্যা। তাকে খণ্ডাবে কে?