রাজ্য

আড়াআড়ি বিভক্ত আন্দোলন, রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে যোগ দিতে বাধা ডাক্তারদের একাংশের

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লাখো লাখো মানুষের চরম ভোগান্তি। একের পর এক মৃত্যু। মুমূর্ষু রোগীদের জন্য প্রিয়জনের কান্না। বাধ্য হয়ে রক্ত জল করে জমানো টাকা দিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালের দ্বারস্থ হওয়া। ১৫ দিন ধরে চলা জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে ধীরে ধীরে ধৈর্যের ও সহ্যের বাঁধ ভাঙছে গরিব, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষের। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনে দোষীদের কঠোরতম শাস্তি, ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী এবং সামগ্রিকভাবে নারীসমাজের সুরক্ষার দাবিতে শুরু হয়েছিল এই আন্দোলন। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমর্থনও পেয়েছিল। কিন্তু তারপর বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নেয়। রাজ্য, কেন্দ্র, এমনকী সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত বারবার কর্মবিরতি তুলে নিতে অনুরোধ করেছে জুনিয়র ডাক্তারদের। তা সত্ত্বেও রাজ্যে আন্দোলন প্রত্যাহার না হওয়ায় ক্রমে সেটি ‘জনবিরোধী’ চেহারা নিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারী ও তাঁদের পরামর্শদাতাদের মধ্যেও শুরু হয়েছে মতবিরোধ। একটি অংশ মনেপ্রাণে চাইছেন ফের কাজে যোগ দিতে। অন্য অংশ কর্মবিরতিতে অনড়। ফলে আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে গিয়েছে গোটা আন্দোলন। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার দুপুর একটায় সাংবাদিক সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সূত্রের খবর, চাপের মুখে এবার কর্মবিরতি থেকে সরে আসতে পারেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
শুক্রবার আর জি কর হাসপাতালের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক সারেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা বেরিয়ে যাওয়ার পর ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা। কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে আসেন একদল আন্দোলনকারী। অধ্যক্ষ ডাঃ মানসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এসে দেখা করে কাজে ফেরার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। আপাতদৃষ্টিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন ‘অরাজনৈতিক’ বলে মনে হলেও, তাঁদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের একটি বড় অংশ এসইউসির ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও সমর্থক। এআইডিএসও-র রাজ্যস্তরের এক শীর্ষ নেতা শনিবার দুপুরে বলেন, ‘সরকার অধিকাংশ দাবিদাওয়া মেনে নিয়েছে। সিবিআই তদন্তও চলছে। ফলে লাখো মানুষকে কষ্টে রেখে আন্দোলন আর চালিয়ে যাওয়ার কোনও মানে হয় না। তাছাড়া ওরাও তো জানাল, শনিবার থেকে আংশিকভাবে কাজ শুরু করবে। কিন্তু কই তার লক্ষণ তো দেখছি না!’ আন্দোলনকারীদের একাংশ আরও একটি বিষয়ে বিরক্ত। যেভাবে ‘উত্তরবঙ্গ লবি ভাঙতে হবে’ এবং পুরনো ব্যক্তিগত শত্রুতা মেটানোর পথ খোঁজা হচ্ছে, তাতে আন্দোলনের ফোকাস সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। 
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের নকশালপন্থী জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ আবার কর্মবিরতি তুলতে নারা‌জ রাজনৈতিক কারণে। তাঁরা চান, এই আন্দোলন যেন তৃণমূল সরকারের পতন ডেকে আনে। তাই যে কোনও মূল্যে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী। প্রাইভেট হাসপাতালের সিপিএমপন্থী ডাক্তারদের একাংশও এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দলে। তাঁরাও এই আন্দোলনের সাফল্যের সঙ্গে তৃণমূলের পতনের স্বপ্ন দেখছেন।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার দুপুরে আর জি কর-এর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ কৌস্তভ নায়েক। আবার পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এদিন সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন যৌথ মঞ্চের ডাক্তাররাও। স্বাস্থ্যসচিব ও কলকাতার পুলিস কমিশনারকে সিবিআই জেরা, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল ভেঙে দেওয়া, উত্তরবঙ্গ লবির নেতাদের তদন্তের আওতায় আনা সহ ১২ দফা দাবিও জানান। বৈঠক শেষে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটেও পড়েন যৌথ মঞ্চের ডাক্তাররা। ফলে বোঝাই যায় বৈঠক নিষ্ফলা। এমনকী যৌথ মঞ্চের ডাক্তারদের একটি অংশ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাবও দেন। যদিও তাঁদের বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, গোটা বিষয়টিতে শাসকদল তৃণমূলকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।
এদিনের এই বৈঠকে আন্দোলনকারীদেরও ডাকা হয়েছিল রাজ্যের তরফে। কিন্তু তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন। আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ডাঃ অনিকেত মাহাত বলেন, ‘আমাদের সমস্যা। আমরা আন্দোলন করছি। যৌথ মঞ্চের ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করার থাকলে সরকার করুক। আমরা সেই বৈঠকে একসঙ্গে বসব না। তাছাড়া এত অল্প সময়ে গোটা রাজ্য থেকে আমাদের প্রতিনিধিরাও আসতে পারবে না। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে ৪৮ ঘণ্টা সময় চাইছি। তার মধ্যে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের চেষ্টা করব।’ সব মিলিয়ে আন্দোলন এখন রাজনৈতিক স্বার্থে টুকরো টুকরো হওয়ার জোগাড়। আর সেই আঁচে পুড়ছেন শুধু সাধারণ মানুষ! 
পাঁচদিন পরও চিকিৎসা পাননি সুন্দরবনের বৃদ্ধ। -নিজস্ব চিত্র
19d ago
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

বহু প্রচেষ্টার পর আটকে থাকা কাজের জটিলতা মুক্তি। কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায় বিশেষ উন্নতি। আয় বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৭.৭৯ টাকা১১১.৩৩ টাকা
ইউরো৯০.৯৫ টাকা৯৪.১৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা