খেলা

ফুটবলে পিছচ্ছে ভারত, দাম বাড়ছে আনোয়ারদের!

সোমনাথ বসু, কলকাতা: নিস্তরঙ্গ ময়দানে ঢেউ তুলেছেন আনোয়ার। তাঁকে নিয়ে কলকাতার দুই প্রধানের দড়ি টানাটানির প্রভাব পড়েছে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যেও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রাখলেই এর প্রমাণ মিলবে। শোনা যাচ্ছে, পাঁচ বছরের জন্য তাঁর পিছনে খরচ প্রায় ৩২ কোটি! কিন্তু আনোয়ার কি এত বড় মাপের ডিফেন্ডার? মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, তরুণ দে, দীপক মণ্ডলের কথা বাদই দিলাম, পারফরম্যান্স এবং ধারাবাহিকতায় তিনি স্বরূপ দাসকেও পিছনে ফেলতে পারবেন না। তা সত্ত্বেও এক আকাশ চাহিদা আনোয়ারের। আসলে ভারতীয় ফুটবলকে শেষ করে দিচ্ছে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন এবং বেশ কয়েকজন স্বার্থান্বেষী এজেন্ট। তাঁদের জন্য পাঁচ টাকার ফুটবলারের দাম ধার্য হচ্ছে একশো টাকা। শুধু আনোয়ার কেন, আপুইয়া-জিকসন সিংদের নেওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় ফুটবল ক্রমশই পিছনের দিকে হাঁটছে। এই ছবি অব্যাহত থাকলে আইএসএলে অংশগ্রহণকারী ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিকেও ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের মতো প্রদীপ জ্বালিয়ে আকাশ দেখতে হবে। মনে রাখা দরকার, আর্থিক সমস্যায় জেসিটি, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার মতো ক্লাব উঠে গিয়েছে। অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া, ডেম্পো, সালগাওকরের মতো ক্লাবগুলি। অতীতে মোহন বাগান, ইস্ট বেঙ্গলের পাশাপাশি তারাই ছিল ভারতীয় ফুটবলের সাপ্লাই লাইন। 
 ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন ভারত ১২৪তম স্থানে। উন্নতির কোনও সম্ভাবনা খালি চোখে কেন, চশমা পরেও দেখা যাচ্ছে না। শুধুমাত্র বিদেশি কোচের বুলি দিয়ে এগনো সম্ভব নয়। পরিসংখ্যান বলছে, গত দশটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারতীয় দল হেরেছে সাতটিতে। বাকি তিনটি ড্র। গোল হজম করেছে ১৯টি। সিরিয়া, আফগানিস্তান, উজবেকিস্তানের মতো দলের বিরুদ্ধেও লড়াই মেলে ধরতে ব্যর্থ গুরপ্রীত সিংরা। লজ্জার এখানেই শেষ নয়। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৭৯তম স্থানে থাকা মরিশাসকেও হারাতে পারে না মানোলো মার্কুয়েজের দল। ভাবতে পারেন, সুনীল ছেত্রীর বুটে পা গলানোর মতো কেউ নেই ১৪০ কোটির দেশে! 
এফএসডিএলের সৌজন্যে আইএসএলে অবনমন নেই। খেতাবের দৌড়ে তিন-চারটি দল। জাঁকজমকে কমতি নেই, কিন্তু খেলার মান অষ্টরম্ভা। বিদেশি ফুটবলাররাই এই লিগের ভরকেন্দ্র। ভারতীয় ফুটবলারদের অধিকাংশই ঠেকা দেওয়ার জন্য রয়েছেন। কিন্তু তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। প্রতিযোগিতার বাজারে সবাই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে দল গড়তে ব্যস্ত। আর এর সুযোগ নিয়ে রমরমিয়ে ব্যবসা ফেঁদেছেন কয়েকজন এজেন্ট। নিজেদের পকেট ভরার জন্য তাঁরাই ফুটবলারদের দাম আকাশছোঁয়া করে দিচ্ছেন। মোদ্দা কথা, ভালো প্লেয়ারের আকাল বলে এখন রাম-শ্যাম-যদু-মধুরা কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। আর আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ দেশের ফুটবল। ফেডারেশন এবং এফএসডিএল এই ব্যাপারে সতর্ক না হলে বিপদ আরও বাড়বে। আর প্রয়োজন ফুটবলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা প্রত্যেকের আন্তরিক সদিচ্ছার। না হলে অদূর ভবিষ্যতে গলায় দড়ি দিতে হবে ভারতীয় ফুটবলকে।

অলোক মুখার্জি: প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে আশঙ্কিত। এভাবে চলতে পারে না। ফুটবলের মান পড়ছে হুড়মুড়িয়ে। মরিশাস, সিরিয়াকে হারানো যাচ্ছে না। আইএসএলের চাকচিক্যও আঁধার ঢাকতে ব্যর্থ। এজেন্টদের পকেট ভরা ছাড়া কোনও উন্নতি নেই। ফেডারেশনও ভিশন দেখাতে পারছে না। রাজনীতি সরিয়ে সদিচ্ছা না দেখাতে পারলে ফুটবল নিয়ে অস্তিত্বের সঙ্কট তৈরি হবে।

শিশির ঘোষ: গোড়ায় গলদ। দীপু গড়গড়ি, মুরারী শূর, অচ্যুত ব্যানার্জির মতো ফুটবলের মাস্টারমশাইরা আজ কোথায়? ঘুনপোকারা কুরে কুরে খাচ্ছে সিস্টেম। ফেডারেশন ঠুঁটো জগন্নাথ। ফুটবলার তুলে আনার রাস্তা বন্ধ। গিমিক, চমক, চটকের যুগে আখেরে ভারতীয় ফুটবলের কোনও লাভ হচ্ছে না। বরং ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে। পারফরম্যান্সে তা বারবার প্রমাণিত।

দেবজিৎ ঘোষ: ফেডারেশনের সিস্টেমই ভুলে ভরা। আশঙ্কা জাগে, অদূর ভবিষ্যতে স্যাফ কাপও জুটবে তো? সাপ্লাই লাইন ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। কারও তাপ উত্তাপ নেই। গালভরা প্রতিশ্রুতি শুনতে শুনতে বড় ক্লান্ত। ভারতীয় ফুটবলে শুধু এজেন্টদের রমরমা। মিষ্টি কথায় প্রোডাক্ট বিক্রির মতো ফুটবলার গছিয়ে দেওয়ার কাজ করছে এজেন্টরা। ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে কঙ্কালসার দশা বেরিয়ে এসেছে। আর কবে দায়িত্ব পালন করবে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা?
21d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৯ টাকা৮৪.৮৩ টাকা
পাউন্ড১০৯.৪৭ টাকা১১৩.০৪ টাকা
ইউরো৯১.০৬ টাকা৯৪.২৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা