যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
এরাজ্যে প্রচুর সংখ্যক বি-স্কুল রয়েছে আবার প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যারা বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং ম্যানেজমেন্ট কোর্স পড়িয়ে থাকে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলি ন্যাশনাল বোর্ড অব অ্যাক্রিডিটেশন (এনবিএ) শংসাপ্রাপ্ত এবং এআইসিটিই অনুমোদিত কিনা দেখে নেওয়া দরকার। এছাড়াও ফ্যাকাল্টি প্রোফাইল, কারিকুলাম, এগজাম সিস্টেম, সিবিসিএস (চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম) রয়েছে কিনা ভালো মতো জেনে নেওয়া প্রয়োজন। বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা ম্যানেজমেন্ট নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলি রেগুলার মোডে এবং ডিসট্যান্স মোডে পড়িয়ে থাকে। ফ্রেশারদের জন্য রেগুলার মোড এবং যারা কোনও পেশায় যুক্ত তাদের ডিসট্যান্স মোডে পড়লে অনেকটা সুবিধা পাওয়া যায়।
উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, পে-রোল ম্যানেজমেন্ট বা এই ধরনের সার্টিফিকেট কোর্স করা যায়। এছাড়াও ইআরপি (কম্পিউটার বেসড) প্যাকেজ করলে অনেকটা এগিয়ে থাকা যায়। অনেক সময় স্নাতক স্তরে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পড়লে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ার সময় বুঝতে সুবিধা হয়। এমনই কিছু বিষয়ের মধ্যে রয়েছে-
ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
যে কোনও প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, সময় এবং মানব সম্পদের পরিচালনা করা বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাজ। এক কথায় প্রতিষ্ঠানের লিডারশিপ নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া বিজনেস অ্যাডনিস্ট্রেটররা করে থাকেন। আর এই কাজটিতে সাফল্য আনতে গেলে আগে থেকেই অনেকটা এগিয়ে রাখে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোর্সটি।
একজন সুদক্ষ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের চাহিদা বরাবরই খুব বেশি। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের আরও দক্ষ এবং উন্নত করে তুলতে পার্সোনাল ডেভেলপমেন্টের দিকটিও অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের দেখতে হয়। অবার গ্রুপ ওয়ার্কের মাধ্যমে যে কোনও কাজ সম্পন্ন করা এই অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদেরই করতে হয়।
চাকরির গুরুত্ব বুঝে এরাজ্যে অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা বিবিএ পড়াচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল পাশ করে পড়া যায় বিবিএ। বিবিএ মেজরের মধ্যে থাকে হেলথ কেয়ার অ্যান্ড হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট, ফিনান্সিয়াল মার্কেটিং, ফিনান্স অ্যান্ড মার্কেটিং, লজিস্টিক অ্যান্ড সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট।
বিবিএ ইন সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট
বর্তমান পরিস্থিতিতে সাপ্লাই অ্যান্ড চেন ম্যানেজমেন্ট খুবই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। অনলাইনে যখন কোনও জিনিস কেনা হয় তা প্রোডাকশন হাউজ থেকে ক্রেতার হাতে আসে এই সাপ্লাই অ্যান্ড চেন ম্যানেজমেন্টের হাত ধরে। কীভাবে জিনিসটি আসছে, কতটা রাস্তা এসেছে সব জানা যায়। শুধু অনলাইন শপিং নয়, বড় বড় হসপিটালে ওষুধ আসা থেকে শুরু করে যেকোনও প্রতিষ্ঠানে মালপত্র পৌঁছনো এখন এই সাপ্লাই অ্যান্ড চেন ম্যানেজমেন্টের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
চাকরির ক্ষেত্রে এই ম্যানেজমেন্টের কদর রয়েছে। বিভিন্ন আইটি কোম্পানি, রিটেল কোম্পানি, বিভিন্ন বিজনেস হাউজ, লজিস্টিক কোম্পানি এই বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটদের নিয়ে থাকে।
হোটেল অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
কোভিডের জন্য হোটেল এবং হসপিটালিটি বিজনেস কিছুটা পিছু হটলেও ধীরে ধীরে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে এই ইন্ডাস্ট্রি।
হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার পর সাধারণত কাজ মেলে অ্যাকোমোডেশন ম্যানেজার, ক্যাটারিং ম্যানেজার, ইভেন্ট অর্গানাইজার, রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার, হোটেল ম্যানেজার, কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজার, রিটেল ম্যানেজার এবং ট্যুর ম্যানেজার হিসেবে।
অন্যদিকে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট পড়ার পর কাজের সুযোগ রয়েছে সার্ভিস সেক্টরে। ট্রাভেল, ট্যুরিজম, এয়ারলাইন্স, রিটেল সেক্টর, মল, সুপার মার্কেট, মাল্টিপ্লেক্স, ফুড কোর্ট, ব্যাঙ্কিং সহ ফেসিলিটিজ ম্যানেজমেন্টে।
ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট
করোনা ভাইরাসের কবল থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। আর তার সঙ্গে বাঙালির ভ্রমণও বেড়ে গিয়েছে। ভ্রমণার্থীদের জন্য সঠিকভাবে ট্যুর গাইড করা, হোটেল খুঁজে দেওয়া, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের মতো আনন্দের ব্যবস্থা করা, ইকো ট্যুরিজমের ব্যবস্থা করা, নানা ধরনের লং রুট- শর্ট রুটের প্ল্যানিং, প্রোগ্রামিং করে দেওয়া সবই ট্রাভেল-ট্যুরিজমের কাজের মধ্যে পড়ে। কোর্স শেষে সরকারের ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্টে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া ফ্রন্ট অফিস জব, বিভিন্ন হোটেলে কাজের সুযোগ রয়েছে। নিজস্ব সংস্থাও খোলা যায়। পরিবহন সংস্থা, জাহাজ – বিমান পরিষেবা, হাসপাতাল এবং হোটেলে কাজের সুযোগ রয়েছে।
হসপিটাল ম্যনেজমেন্ট
সরকারি বা বেসরকারি দু’ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হচ্ছে দক্ষ মানব সম্পদের। কোভিড মহামারীর সময় এই দক্ষ মানব সম্পদ সব ধরনের আপডেট দিতেও সাহায্য করেছেন। সব ধরনের ডেটা মেন্টেন, ম্যানেজমেন্ট কন্ট্রোল, ডিপার্টমেন্টের মধ্যের সঠিক সম্পর্ক স্থাপন করে কাজের সুবিধা তৈরি করার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে এই নন-মেডিক্যাল স্টাফদের। এরাজ্যে অনেকগুলি কলেজ হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট পড়িয়ে থাকে।
আন্ডার গ্র্যাজুয়েট স্তরে পড়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রবেশিকা পরীক্ষা থাকে। আবার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্তরে বি-স্কুলগুলিতে ভরতির জন্য সর্বভারতীয় প্রবেশিকার সাহায্য নিতে হয়। তার মধ্যে রয়েছে ম্যানেজমেন্ট অ্যাপটিটিউড টেস্ট (MAT), কমন অ্যাডমিশন টেস্ট (CAT), JEMAT, GMAT, NMAT, XAT, CMAT অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট স্কুল টেস্ট (AIMS), টেস্ট ফর ম্যানেজমেন্ট অ্যাডমিশন (ATMA)। ম্যানেজমেন্ট কোর্সগুলির মধ্যে সবার আগে রয়েছে এমবিএ বা মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। জেনারেল এমবিএ ছাড়াও এমবিএ ট্যুরিজম সহ বেশ কিছু চাকরিমুখী বিষয় রয়েছে। বেশ কিছু নতুন ধরনের বিষয়ের মধ্যে রয়েছে এমবিএ ইন স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট, এমবিএ ইন হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, এমবিএ ইন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট।