আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
সোশ্যাল ওয়ার্কের কাজই হল সমাজ নিয়ে ভাবা, তাকে বিশ্লেষণ করা এবং তার দোষ-গুণের অংশ খুঁজে বার করে অ্যাক্টিভলি সেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা। সোশ্যাল ওয়ার্কার কিংবা সমাজকর্মীদের কাজ সেটাই। আগে এ বিষয় নিয়ে সেভাবে পড়াশোনা করার সুযোগ ছিল না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য, সোশ্যাল ওয়ার্ক বিষয়টি নিয়ে কলেজে পড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয় গবেষণার দিকেও এর রাস্তা খুলে গিয়েছে। আজ যে কোনও ছাত্র সমাজ কর্মকে পেশা হিসেবেও নিতে পারেন। তবে একটা কথা সবসময় মনে রাখতে হবে যে, এই পেশায় আসতে গেলে চাই ভালোবাসা এবং সমাজের উন্নতির জন্য কিছু করার ইচ্ছে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান, বাণিজ্য কিংবা কলা যে কোনও বিভাগে পড়লেই কলেজে এই বিষয় নিয়ে পড়া সম্ভব। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাচেলার এবং মাস্টার্সে (স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে) এই কোর্স পড়ার সুবিধা আছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, কেরল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় সোশ্যাল ওয়ার্ক অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স-এর ব্যাচেলার এবং মাস্টার ডিগ্রি। সরকারি এবং বেসরকারি দু’জায়গাতেই পড়ার সুবিধা থাকায় যে কেউ এই বিষয় নিয়ে পড়তে পারেন।
শুধু এটুকুই নয়। সোশ্যাল ওয়ার্কে ইচ্ছা করলে নেট, সেটও দেওয়া সম্ভব। কলকাতা সহ ভারতের নানা জায়গায় সোশ্যাল ওয়ার্কে গবেষণা করা যাচ্ছে। টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স-এর মতো ইনস্টিটিউটে কোর্সের পর অন ক্যাম্পাসিং চাকরির ব্যবস্থা আছে। এছাড়া পড়াশোনা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে বিদেশে আছে বিস্তৃত জমি। বিষয়ের ওপর রিসার্চ এবং চাকরি দুটোর সুবিধা রয়েছে বিদেশে।
এবার প্রশ্ন আসে কারা এই বিষয় পড়ার উপযুক্ত। সাধারণভাবে পুঁথিগত বিদ্যার থেকেও এখানে যেহেতু বেশি দরকার ফিল্ডে নেমে কাজ করার উদ্যম, তাই প্রথমেই যেটা প্রয়োজনীয় তা হল পরিশ্রম করার মানসিকতা। এছাড়াও কমিউনিকেশন স্কিল, অপরজনের কথা শোনার দক্ষতা, বিশ্লেষণ ক্ষমতা, সহানুভূতি, সহ্য ক্ষমতা, নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতা, বিষয় গভীরতা— এইগুলোও থাকা দরকার। এবার আসা যাক চাকরির প্রসঙ্গে। বিদেশে না গিয়েও কেউ যদি দেশেই এ বিষয় চাকরি পেতে চান তাঁদের প্রথমেই ঠিক করতে হবে কর্পোরেট সংস্থায় চাকরি করবেন নাকি নন-প্রফিটেবেল অরগানাইজেশনের সঙ্গে যুক্ত হবেন। সত্যি কথা বলতে বর্তমানে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে সমস্যা একটা নয়। বেকারত্ব, দারিদ্র্য, অসুখ, চিকিৎসা, অর্থনৈতিক সমস্যা, কৃষি ও নানা ক্ষেত্রে পরিবেশগত সমস্যা— এ রকম বিভিন্ন ক্ষেত্রে সোশ্যাল ওয়ার্কাররা কাজ করে থাকেন। তাঁরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসবের সমাধানের সূত্র খুঁজে বার করার চেষ্টা করেন। ভারতে মূলত নন-প্রফিটেবেল অরগানাইজেশনগুলোতে এই বিষয়ের চাকরি পাওয়া সম্ভব। কথা বলার ক্ষমতা যাঁদের ভালো তাঁরা এই ধরনের কাজে সফল হবে। অন্যদিকে সোশ্যাল এডুকেটারদের কাজও এর অন্তর্ভুক্ত। এঁদের কাজ নানা ধরনের সোশ্যাল ইভেন্ট অরগানাইজ করা, যেখানে স্থানীয় বা জাতীয়স্তরের সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা হবে। গ্রামীণ অঞ্চলে আঞ্চলিক সমাজকর্মী তৈরিতেও এঁরা বড় ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন। এঁরা ছাড়াও রয়েছেন প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর যাঁরা যে কোনও প্রজেক্টের বাজেট থেকে শুরু করে তার সামগ্রিক পরিকল্পনার উপর নজর রাখেন। কর্পোরেট সেক্টরে কাজ করতে চাইলে করা যায় রিসার্চ ওরিয়েন্টেড কাজ। যেমন সংস্থাটি কোনও প্রোডাক্ট লঞ্চ করার আগে তাদের রিসার্চ টিম দেখে নেবে সেই প্রোডাক্ট সমাজের কোনও ক্ষতি করছে কিনা। আর একটু অফ-ট্র্যাক চাকরি চাইলে যাওয়া যেতে পারে সাংবাদিকতা কিংবা বিজ্ঞাপন তৈরির কাজেও। সুতরাং সোশ্যাল ওয়ার্কারদের কাজের কোনও শেষ নেই। শুধু সঠিকভাবে খুঁজে নিজের পছন্দের কাজটি বেছে নিতে হবে। যাঁরা রিসার্চে যেতে চান তাঁরা অধ্যাপনা কিংবা রিসার্চ প্রজেক্টে কাজের সুযোগ পাবেন দেশে এবং বিদেশে। এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য দেখা যেতে পারে, বেশ কয়েকটা ওয়েবসাইট— www.sarvgyan.com/courses/social-work, shiksha.com/bsw-bachelor-of-social-work-chp, shiksha.com/msw-master-of-social-work-chp, collegedunia.com/courses/phd-social-work, idp.com/india/search/social-work/doctorate