আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
‘ভারত’-এর দৌলতে সলমনের কেরিয়ারে সাময়িক খরা কাটল একথা লেখাই যায়। ‘টিউবলাইট’ ও ‘রেস ৩’ দর্শকদের পছন্দ হয়নি। কিন্তু ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর পর সলমনকে হারানো জমি আবার ফিরিয়ে দিয়েছে ‘ভারত’। দশ দিন পরেও বক্সঅফিসে ‘ভারত’ এর যাত্রা অব্যাহত। জাতীয় বক্স অফিসে এখনও পর্যন্ত এই ছবি আয় করেছে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা। সারা বিশ্বে এই ছবি এখনও পর্যন্ত ঘরে এনেছে ২৫০ কোটি টাকা। ঈদে মুক্তির নিরিখে এখনও পর্যন্ত প্রথম দিনে সলমনের কেরিয়ারের সেরা ছবিও ‘ভারত’। প্রথম দিনেই এই ছবি বক্সঅফিসে ৪২.৩ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। প্রায় ৪৭০০ পর্দায় মুক্তি পেয়ে এই বছরের হায়েস্ট গ্রসার ছবির তালিকায় ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর পরেই রয়েছে এই ছবি। এরপর ভাইজানের ‘দাবাং ৩’ বা ‘ইনশাআল্লাহ’ এই রেকর্ড ভাঙতে পারবে কিনা তার অপেক্ষায় দিন গুনছেন অগণিত সলমন ভক্ত।
সলমন পারলেন। কিন্তু শাহরুখ ও আমিরের পরিস্থিতি কীরকম? মজার বিষয় তিন খানই দারুণ বন্ধু। প্রকাশ্যে তাঁরা কখনও একে অপরের বিরোধিতা করেননি বা কারও বিরুদ্ধে কথা বলেননি। তা সত্ত্বেও বলা যায় স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা তিনজনই পছন্দ করেন। তাই একজনের ছবি হিট করলে অন্যের কপালে ভাঁজ পড়াটা স্বাভাবিক। সবাই জানে এই তিনজনের মধ্যে ছবির গুণগত মান বা বিষয়ের নিরিখে বরাবর আমির এগিয়ে রয়েছেন। চরিত্রের প্রতি নিবেদিত প্রাণ তিনি। ছবির ভালোর জন্যই হোক বা প্রচার, সবসময় তাঁর মৌলিকত্ব ভক্তদের মন জয় করে নিয়েছে। সেই আমির খান এবারে দর্শককে নিরাশ করেছেন। ২৫০ কোটি বাজেটের ‘থাগস অব হিন্দোস্তান’ বক্সঅফিসে ব্যবসা করেছে মাত্র ১৫২ কোটি টাকার! ‘ধুম ৩’-এর পর আমিরের সব থেকে হতাশাজনক ছবি এটাই। ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ ছবিতে আমির ছিলেন অনেকটা সাপোর্টিং কাস্টের মতো। ঠিক যেমন ‘তারে জমিন পর’ এ অর্ধেকের বেশি জমি ছেড়ে দিয়েছিলেন ছোট্ট দর্শিল সাফারিকে। এবারে আমিরকে ‘লাল সিং চাড্ডা’ ছবিতে দেখা যাবে। টম হ্যাংকস অভিনীত ‘ফরেস্ট গাম্প’ (১৯৯৪) এর রিমেক এই ছবি। শোনা যাচ্ছে চরিত্রের জন্য আমির তাঁর মতো করে প্রস্তুতি নেওয়াও শুরু করেছেন। দেখা যাক আবার আমিরি চালে দর্শক কিস্তিমাত হন কিনা।
সব শেষে আসা যাক বলিউড ‘বাদশা’ শাহরুখের প্রসঙ্গে। তিন খানের মধ্যে বক্স অফিসে তাঁর অবস্থা সবথেকে করুণ। ‘যব হ্যারি মেট সেজল’ বা ‘জিরো’— শাহরুখের সাম্প্রতিক কেরিয়ারে পরপর ফ্লপ ছবি। ভারতীয় বক্সঅফিসে ‘জিরো’ ব্যবসা করেছিল মাত্র ৯০ কোটি টাকা! অন্যদিকে ‘রইস’ বক্সঅফিসে মুখ রক্ষা করলেও দর্শকের মধ্যে এই ছবি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল। ফিল্ম বোদ্ধাদের মতে এর মধ্যে মনে রাখার মতো ছবি একমাত্র ‘ডিয়ার জিন্দগি’। কিন্তু সুপারস্টারের ছবির সঙ্গে যে বক্সঅফিস ওতপ্রতভাবে জড়িত। তাই বলা যায় কিং খান এখন মাঝ নদীতে। আধুনিক ভারতের বদলে যাওয়া দর্শকদের কথা মাথায় রেখে তিনি কনটেন্ট বাছবেন নাকি তাঁর চিরাচরিত রোমান্টিক অবতারেই আটকে থাকবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। অনেক আগেই ঘোষণা করেছেন যে, মহাকাশচারী রাকেশ শর্মার বায়োপিকে তিনি অভিনয় করছেন না। ভাবলে অবাক হতে হয়, শেষ ছবি মুক্তির পর ছ’মাস অতিক্রান্ত হলেও শাহরুখ এখনও পর্যন্ত নতুন ছবির ঘোষণা করেননি! শোনা যাচ্ছে মন্নতে বা রেড চিলিজের অফিসে বসে বাদশা এখন একটাই কাজে মন দিয়েছেন— চিত্রনাট্য পড়া। আর কোনও চিত্রনাট্য পছন্দ হলেই তাঁর তরফে সবুজ সংকেত মিলবে। একই সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের থেকেও তিনি পরামর্শ নিচ্ছেন। বলিউডে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে পরপর ব্যর্থতায় শাহরুখ এখন অবসাদে ভুগছেন। কিন্তু সবাই জানে ‘বাজিগর’ শাহরুখ এত সহজে হেরে যাওয়ার পাত্র নন। তাই বলিউডে খানেদের রাজত্ব কি শেষের পথে, এই বহুল চর্চিত প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়। সলমন এ যাত্রায় পরীক্ষায় উতরে গিয়েছেন। এখন মুখ রক্ষার জন্য শাহরুখ ও আমিরের প্রয়োজন একটা বক্সঅফিস কাঁপানো হিট ছবি। এই আর্তি কোনও ব্যক্তির নয়, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা খানেদের অগণিত ভক্তর। আশা করা যায় শাহরুখ ও আমির নিজেরাও সেটা উপলব্ধি করতে পারছেন।