যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
করলা: করলা এবং উচ্ছে একই প্রজাতির সব্জি। করলা আকারে বড়। উচ্ছে ছোট। পশ্চিমবঙ্গে করলা ও উচ্ছে সেদ্ধ করে খাওয়া হয়। মোটামুটি ১৫-২০ গ্রামের একটি করলা সেদ্ধ করে খাওয়া যায়। এক্ষেত্রে জলে করলা কেটে দেওয়ার পর ওই জল ফুটে চারভাগের একভাগ থাকতে নামিয়ে নিতে হবে। আবার ভাত ফোটানোর সময় তার মধ্যে করলা দিয়ে সেদ্ধ করেও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।
মাত্রা: যাঁরা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করবেন বলে খাচ্ছেন, তাঁরা সপ্তাহে ৪- ৫ দিন খান। আর প্রি ডায়াবেটিকরা ৬ দিন খেতে পারেন। ইতিমধ্যেই ডায়াবেটিস হয়ে গেলে একটু বেশি পরিমাণে করলা সেদ্ধ করে খেতেই পারেন রোজ। রোজ সিদ্ধ বা রস খেতে ভালো না লাগলে এক-আধদিন ভাজাও খেতে পারেন।
মেথি: এই ভেষজটি শুধুমাত্র চিকিৎসার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়। রোজ ৩ গ্রাম পরিমাণে মেথিচূর্ণ নিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন ডায়াবিটিসের রোগী! চূর্ণের বিকল্প হিসেবে সারা রাত ৫ গ্রাম মেথিচূর্ণ জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে উঠে সেই জল খালি পেটে পান করা যায়।
কালমেঘ: কালমেঘের বড়ি খেতে পারেন সুস্থ ও রোগী উভয়েই। লিভারের স্বাস্থ্য উন্নত করে। পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী কালমেঘের বড়ি। আবার সুগারের রোগী রোজ সকালে কালমেঘের পাতা থেঁতো করে তার রস ১ চামচ থেকে ২ চামচ করে খেতে পারেন খালিপেটে। রোগ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে খেতে চাইলে সপ্তাহে ৫ দিন খাওয়াই যথেষ্ট।
চিরতা: গোটা চার-পাঁচ চিরতা পাতা থেঁতো করে জলে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ছেঁকে নিয়ে খালি পেটে চিরতা ভেজানো জল পান করা যায়।
কাঁচা হলুদ: দৈনিক সকালে খালি পেটে এক গাঁট করে কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস জল পান করুন। ১ চামচ করে ২ বার কাঁচা হলুদের রসও খাওয়া যায়।
ইন্দ্রযব: ইন্দ্রযব চূর্ণ করে ৫০০ মিলিগ্রাম করে সুগার রোগীরা দিনে দু’বার খেতে পারেন। আর যদি রোগী না হন, শুধু প্রতিষেধক হিসেবে খেতে চান, তাহলে রোজ সকালে অর্ধেক গ্রাম করে খেতে হবে।
নিম: সুগারের রোগী রোজই দেড় গ্রাম করে দিনে দু’বার নিম পাতা চূর্ণ খেতে পারেন। প্রতিষেধক হিসেবে খেলে সপ্তাহে তিন-চারদিন খান।
গুড়ুচি বা গুলঞ্চ: ডায়াবেটিসে গুড়ুচি অত্যন্ত উপকারী। গুলঞ্চের আঙুল প্রমাণ মোটা কাণ্ড ২-৩ ইঞ্চি আকারে নিয়ে থেঁতো করে ১ কাপ জলে রাতভর ভিজিয়ে রাখুন। পর দিন সকালে খালি পেটে এই জল পান করতে পারেন। অথবা গুড়ুচির শুকনো কাণ্ড চূর্ণ করে দিনে একবার খালি পেটে খাবেন। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, বিপাকীয় সমস্যা কমে, পিত্ত দোষ শান্ত হয়।
মনে রাখবেন—
• তেতোরস উষ্ণবীর্য। অগ্নির দীপ্তি ঘটায়। অর্থাৎ আমাদের যে বিপাকক্রিয়া তাকে সঠিক পথে নিয়ে আসে। ফলে বিপাকক্রিয়ার গণ্ডগোল জনিত অসুখ— যেমন সুগার, কোলেস্টেরল, থাইরয়েডের রোগ নিরাময়ে এই ধরনের প্রকৃতিজ উপাদানগুলি অত্যন্ত উপযোগী। করলা কফ, বায়ু এবং পিত্তর ভারসাম্যহীনতা জনিত সমস্যা থেকেও রক্ষা করে ।
• ভেষজগুলিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলস ধ্বংস করে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়।
• ভেষজগুলি রক্ত শোধনে সাহায্য করে। রক্তে থাকা আম দোষ বা বিপাকীয় ক্রিয়ার ফলে যে অপক্ব অন্ন রস তৈরি হয়, তাকেই আম বলা হয়। এই ধরনের আম শরীরের নানা জায়গায় প্রদাহ তৈরি করে। ত্বকের পক্ষেও অত্যন্ত ক্ষতিকর। রক্ত শোধন করতে পারে বলে ভেষজগুলি বিভিন্ন জয়েন্ট ও ত্বকের অসুখের বিরুদ্ধেও কাজ করে।
• ভেষজগুলির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ফাংগাল এবং অ্যান্টিভাইরাল প্রভাবও আছে। তাই কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
• করলার খাদ্যতন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
রোজই কি সব ধরনের ভেষজ খাবেন?
• খুব বেশি তেতো খেলে বায়ুর বৃদ্ধি হবে। শরীরে অস্বস্তি বাড়বে। শরীরের ক্ষয়ের প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রয়োজনের বেশি তেতো খাবেন না। সপ্তাহে পাঁচদিন খাওয়াই যথেষ্ট।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করতে হলে সারাদিনে যে কোনও একটি ভেষজ খাওয়াই যথেষ্ট।
• ওষুধ হিসেবে খেলে তা চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই খাওয়া উচিত।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক