কারও কাছ থেকে কোনও দামি উপহার লাভ হতে পারে। অকারণ বিবাদ বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্য ... বিশদ
শ্রীপঞ্চমী তিথি একেবারে দোরগোড়ায়। ঘরে ঘরে বাগদেবীর আরাধনায় মেতে উঠবে বাঙালি। প্রায় প্রতি বাড়িতেই এই পুজো ঘিরে নস্টালজিয়া ও আনন্দ হাত ধরাধরি করে থাকে। দুর্গাপুজোর মতো খুব জাঁকজমক না থাকলেও এই পুজো আমাদের বড় কাছের। অন্দরসজ্জা থেকে খাবার পাত, সবেতেই এই পুজোয় সাবেকিয়ানার সঙ্গে আধুনিকতার সমাহার থাকে চোখে পড়ার মতো। শিশুর হাতেখড়ি থেকে কিশোরের প্রেমবিলাস সবেতেই এই দিনটির মাহাত্ম্য তুলনাহীন। তাই এই বিশেষ দিনে অন্দরসজ্জায় আনুন নয়া আবহ। পকেটে বিশেষ চাপ না দিয়েও সরস্বতী পুজোর দিন কীভাবে সাজাবেন ঘরবাড়ি? রইল উপায়।
প্রবেশদ্বার: বাড়িতে অতিথিরা যে পথ দিয়ে প্রবেশ করবেন, প্রথমেই নজর দিন সেদিকে। সরস্বতী পুজোয় স্কুলজীবন থেকেই অনেকের আলপনা দেওয়ার অভ্যাস থাকে। বাড়ির পুজোও আলপনা খুব বড় ভূমিকা নেয়। খড়িমাটি দিয়ে বাড়ির প্রবেশপথে এঁকে দিন নানা নকশার আলপনা। আজকাল অবশ্য প্লাস্টিকের স্টিকার বা রঙ্গোলির রঙেও অনেকে আলপনা দেন। তবে সরস্বতী পুজোয় খড়িমাটির আলপনার কদর বরাবরই বেশি। শুধু প্রবেশপথ নয়, আলপনার ছোঁয়া থাকুক, ঠাকুরদালান বা ঠাকুর রাখার জায়গা, পুজোর ঘট প্রতিষ্ঠা করার জায়গা থেকে প্রতি ঘরের দুয়ারে। তাতে ঘরের রূপবদল ঘটবে। প্রবেশদ্বারের বাইরে মঙ্গলঘট স্থাপন করলে সেখানেও বিশেষ নকশার আলপনা দিতে পারেন। দরজার উপরে ঝুলিয়ে দিতে পারেন রঙিন শিকলি বা পলাশ ফুলের মালা। সকালে পুজো হলেও ইচ্ছা করলে গোটা বাড়ি সাজাতে পারেন আলো দিয়ে। সূর্যাস্তের পর সারা বাড়িতে আলো জ্বলে উঠলে পুজোর আবহ আরও বেশি করে ছেয়ে থাকবে।
পুজোর স্থান: সাজানোর যাবতীয় মুনশিয়ানা ধরে রাখুন এই জায়গাটির জন্য। ঠাকুর রাখার জায়গাটিতেই অতিথিদের বেশি নজর পড়বে। একটু মাঝারি বা বড় আকারের দেবীমূর্তি হলে গোটা ঘরের সৌন্দর্য্যে যোগ হয় বাড়তি নম্বর। কাগজ-কাপড়ের ফুল ও থার্মোকল দিয়ে একটি অস্থায়ী মঞ্চ মতো তৈরি করে সেখানে দেবীমূর্তি রাখতে পারেন। যাঁরা সিংহাসনে দেবীকে বসাবেন, তাঁরা সিংহাসনের চারপাশ আলপনা দিয়ে সাজান। দু’পাশে রাখুন কাগজ ও কাপড়ের নানা ফুল। দেবীর মাথার উপরে চাঁদোয়া খাটিয়ে সেখান থেকে ঝুলিয়ে দিন পলাশ ফুলের গাঁথা মালা। ইদানীং নানা রংবেরঙের চাঁদোয়া বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। কাপড়ের গায়ে সুতোর কাজ ও নানা কাচ বসানো নকশার শামিয়ানাও কিনতে পারেন। সেখান থেকেও পলাশের মালা ঝুলিয়ে দেওয়া যায়। বিগ্রহের পিছনদিকটি কাপড় বা মোটা একরঙা শাল দিয়ে ঢেকে একটি অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করুন। সেখানে থার্মোকল কেটে সুন্দর নকশা করা বীণা, হাঁস, ফুল, বাংলার নানা বর্ণ, ধারাপাতের সংখ্যা ইত্যাদি আটকে দিতে পারেন। পুজোর জায়গাটি সাজানোর জন্য রঙিন কাগজ, কাপড় ও শিকলির নানা নকশা এই সময় বিভিন্ন দোকানে মেলে, সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। ঠাকুরকে সাজান ফুল, চাঁদমালা, কাপড়ের রঙিন মালা ও ফুলের মালা দিয়ে। মোট কথা, নান্দনিকতার সঙ্গে ছিমছাম আবহ দিয়েই বাজিমাত করুন এই অংশের সজ্জা।
আলোকসজ্জা: সাজানোর প্রাথমিক পর্বেই বলা হয়েছে, আলো দিয়ে মুড়ে ফেলতে পারেন গোটা বাড়ি। এছাড়াও মিনিয়েচার আলো ও রঙিন নানা লণ্ঠন দিয়ে সুদৃশ্য আলোকসজ্জা তৈরি করতে পারেন। পুজোর সন্ধেটুকু তাহলে বাড়ির রূপ সম্পূর্ণ বদলে যাবে। সিংহাসনের চারপাশে, উপরের চাঁদোয়ার পাশেও আলোর তার লাগাতে পারেন। ঠাকুরের মণ্ডপের চারপাশ, দেওয়াল, বারান্দার গ্রিলের কার্নিশেও ঝুলিয়ে দিন রঙিন প্রদীপ, মিনিয়েচারের চ্যানেল ও তবে এসব কাজ করার সময় অবশ্যই ইলেকট্রিক কারিগরের সাহায্য নিন ও সাবধানে কাজটি সমাধা করুন।
দেওয়ালসজ্জা: রঙিন কাগজ ও শিকলি নানা জ্যামিতিক নকশায় কেটে লম্বা করে দেওয়ালে টাঙিয়ে দিন। উত্তুরে হাওয়ায় মাঝেমাঝেই তা দুলে উঠবে। সিলিং থেকে থার্মোকল দিয়ে কেটে নানা অক্ষর ও সংখ্যা ঝুলিয়ে রাখলেও ঘরের চেহারা বদলে যাবে। থার্মোকলের গায়ে রং করে নানা উজ্জ্বল রঙের গ্লিটার দিয়ে নকশা বা বর্ডার করলে দেখতে আরও ভালো লাগবে।
বইপত্র, বাদ্যযন্ত্র রাখার জায়গা: বিগ্রহের চরণে বইখাতা ও বাদ্যযন্ত্র রাখার জন্য আলাদা অস্থায়ী পাটাতন তৈরি করুন। ফুল দিয়ে সাজাতে পারেন জায়গাটি।
খেয়াল রাখুন
এইদিন অতিথিরা আসবেন, তাই পুজোর ঘর ছাড়াও অন্যান্য ঘর ও বাথরুমের দিকে নজর দিন। ঘর পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখুন। বাথরুমে পর্যাপ্ত তোয়ালে রাখুন। ভালো
বাথরুম সেট ব্যবহার করতে পারেন। পরিষ্কার বালতি-মগও রাখুন। গিজারের ব্যবস্থা রাখুন।
মনীষা মুখোপাধ্যায়