শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
মহাস্নানের পর আরম্ভ হয় দেবীর পুজো। আরাধনার প্রথম ধাপ সুস্থ দেহ ও স্থির মন। সর্বাগ্রে এটি করা প্রয়োজন, না করলে দেবতার অধিষ্ঠান হতে পারে না। শ্রীরামকৃষ্ণদেব বলতেন, ‘প্রতিমায় আবির্ভাব হতে গেলে তিনটি জিনিসের দরকার— প্রথম পূজারীর ভক্তি, দ্বিতীয় প্রতিমার সৌন্দর্য, তৃতীয় গৃহস্বামীর ভক্তি।’
গৃহে সমাগত অতিথির যেমন সম্মান, অভ্যর্থনা ও পরম যত্নে সেবা করতে হয় সেরূপ সেবাভাব নিয়ে আত্মবৎ পরিচর্যায় দেবতার পুজো করাই শাস্ত্রবিধি। মহানির্বাণ তন্ত্রে মহাপূজার বিধি ষোলোটি উপচারে। সেখানে ষোলোটি উপচারের তালিকা দেওয়া আছে—
—আসনং স্বাগতং পাদ্যমার্ঘ্যমাচমনীয়কম্।
মধুপর্ক তথাচম্যং স্নানীয়ং বস্ত্রভূষণৈঃ।।
গন্ধ পুষ্পে ধূপদীপে নৈবেদ্যং চন্দনং তথা।
দেবার্চনাসু নির্দিষ্টা উপচারশ্চ ষোড়শঃ।।
অর্থাৎ আসন, স্বাগত, পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয়, মধুপর্ক, পুনরাচমনীয়, স্নানীয় জল, বস্ত্র, ভূষণ, গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য ও বন্দনা ক্রম অনুযায়ী এই ষোলোটি হল দুর্গামাতার উদ্দেশে নিবেদিত মহাপুজোর উপচার। ষোলোটি উপচারের মুখ্যত্ব পেলেও কয়েকটি পুরাণে আটত্রিশ, চোদ্দো, বারো, দশ অথবা পাঁচ প্রকার উপচার দেবীকে উৎসর্গের কথাও বলা হয়েছে।
আবার কালিকা পুরাণ সব শ্রেণীর মানুষের সাধ্যের কথা মনে রেখে এক যথার্থ বিধান দিয়ে বলেছে, কোনও দেবী পূজার্থী যদি এইসব উপচার প্রদানে অক্ষম হন তাহলে তিনি পাঁচটি উপচারে পুজো করবেন। এই পঞ্চোপচার হল— গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ ও নৈবেদ্য।
এগুলির সব কটি না পাওয়া গেলে ভক্তি ও শ্রদ্ধায় শুধুমাত্র ফুল ও জল দিয়েও পুজোর বিধান আছে। স্বয়ং গীতাকার ভারতপুরুষ শ্রীকৃষ্ণও বলেছেন, ‘ভক্তিপূর্বক যে আমাকে পত্র, পুষ্প, ফল ও জল অর্পণ করে আমি তার সেই ভক্তি উপহার প্রীতির সঙ্গে গ্রহণ করি।’
সাধক রামপ্রসাদের একটি গান আছে—
শয়নে প্রণাম জ্ঞান
নিদ্রায় কর মাকে ধ্যান,
আহার কর মনে কর
আহুতি দিই শ্যামা মারে।
যত শোন কর্ণপুটে
সবই মায়ের মন্ত্র বটে,
কালী পঞ্চাশৎ বর্ণময়ী
বর্ণে বর্ণে নাম ধরে।
আনন্দে রামপ্রসাদ রটে
মা বিরাজেন সর্বঘটে,
নগর ফের মনে কর
প্রদক্ষিণ শ্যামা মারে।
চৈতন্যময় নন্দ