উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
অধিকাংশ জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস অবান্তর প্রমাণিত হয়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী হ্যারিস বস্তুত ধরাশায়ী। ট্রাম্প-ওয়েভ এমন প্রবল বেগে বয়ে গিয়েছে যে সেনেট, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও হোয়াইট হাউসে একযোগে ‘ত্রিফলা’ জয়ে নিরঙ্কুশ রিপাবলিকান শিবির। রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পই আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। তাঁর এই প্রত্যাবর্তন সত্যিই ঐতিহাসিক। চারবছর আগের ভোটে জো বাইডেনের কাছে পর্যুদস্ত হন ট্রাম্প। যদিও সেই পরাজয় মানতে চাননি, কিন্তু আদালতেও ধাক্কা খান তিনি। অতঃপর তাঁরই ‘একরোখা’ মানসিকতা থেকে ঘটে যায় ‘ক্যাপিটল’ হিংসার মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা। পর্নতারকা কাণ্ড-সহ একাধিক গুরুতর অপরাধেও দোষী সাব্যস্ত হন ট্রাম্প। আততায়ীর ভয়াবহ হামলার শিকারও হয়েছেন তিনি দু’বার। এতকিছুর পরও কোনও নেতার ফের ক্ষমতার শীর্ষপদে গণতান্ত্রিকভাবে ফেরাটা সন্দেহাতীতভাবেই চমকপ্রদ! এই নিরিখে ১৩২ বছরের পুরনো নজির স্পর্শ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাঝে একবার হেরেও দু’বার আমেরিকার মসনদে বসার রেকর্ড এতদিন ছিল একমাত্র গ্রোভার ক্লেভল্যান্ডের দখলে।
সেই তালিকায় ঢুকছে ট্রাম্পের নাম। তাঁর জয় নিশ্চিত হতেই আমেরিকায় ‘স্বর্ণযুগ’ ফেরাবার প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। আমেরিকাই যাঁর কাছে সবসময় ‘অগ্রাধিকার’—প্রথম ভাষণে তিনিই ঘোষণা করেছেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করব। শান্তির পথে ফেরাব পৃথিবীকে।’ স্বভাবতই নড়েচড়ে বসেছে তামাম দুনিয়া। রাশিয়া বনাম ইউক্রেন, ইজরায়েল বনাম হামাস-লেবানন-ইরান যুদ্ধে যবনিকা পতন কি তবে আসন্ন? জল্পনা চরমে। যুদ্ধ-বিরোধী পক্ষ অবশ্যই আশায় বুক বাঁধবেন। ট্রাম্প যে ঘোষণা ও দাবি করেছেন, তার বাস্তবায়ন অত্যন্ত কঠিন। তবু তাঁর এই ভাবনা ও অনুভবের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা থাক। আমরা তা গ্রহণ করি ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাশুল বিশ্ব অর্থনীতি গুনছে প্রায় তিনবছর যাবৎ। পরবর্তীকালে তীব্র অশান্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিম এশিয়া। এমনকী আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে মুসলিম মৌলবাদ হাতির পাঁচ পা দেখেছে! হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আদিবাসী প্রভৃতি সংখ্যালঘু নাগরিকদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে সেদেশের স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তি। কানাডার ট্রুডো সরকারের অসুস্থ ভারত-বিরোধিতার নীতির পিছনেও পরিষ্কার সক্রিয় বাইডেন প্রশাসনের পরোক্ষ মদত। ভারসাম্যের কূটনীতি এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের ভূমিকা এতটাই ব্যর্থ যে সাম্প্রতিক অতীতে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ বেধে যাওয়ার আশঙ্কাই প্রবল হয়েছিল। সব মিলিয়ে দুনিয়া জুড়ে গরিব, মধ্যবিত্ত ও গণতন্ত্রপ্রিয় শ্রেণির নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। এর দায় বহুলাংশেই বর্তায় বাইডেন প্রশাসনের উপর। তাই বাঁচার রাস্তা খুঁজছে শান্তিকামী পক্ষ। বাইডেন প্রশাসনের পরোক্ষ ভারত-বিরোধী নীতি নিয়েও আমাদের সমস্যা ছিল। মোদি-ট্রাম্পের পুরানা দোস্তির যুগ ফিরে আসারও সোনালি রেখা দেখছেন অনেকে। আমেরিকাকে পাশে পেলে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে ভারতের পক্ষে উজ্জ্বল হয়ে ওঠার সুযোগ বাড়ে বইকি। সুন্দর সম্ভাবনাগুলির দিকে ট্রাম্পের সার্বিক উদ্যোগ একপাও অগ্রবর্তী হলে তা হবে বড় প্রাপ্তি, সবারই জন্য।