উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
তবে কেন ভারতে জনগণনা নিয়ে মোদি সরকারের এই টালবাহানা? এত নিস্পৃহতা? কারণটা সহজেই অনুমেয়। নতুন জনগণনার পরে অনেক অপ্রিয় সত্য ও তথ্যের মুখোমুখি হতে হবে এই সরকারকে। প্রকৃত তথ্য হাতে এলে মোদি সরকারের সব বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, শৌচালয়, পানীয় জল, রান্নার গ্যাস সরবরাহে সাফল্যের দাবি ফানুসের মতো চুপসে যেতে পারে। আবার যে ৮১ কোটি গরিব মানুষকে রেশনের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী, জনগণনা হলে সেই সংখ্যা ৯২ কোটিতে পৌঁছে যেতে পারে। ফলে একদিকে বাস্তবের মুখোমুখি হতে না চাওয়া, অন্যদিকে এই বাড়তি চাপ, দায়িত্ব এড়াতে চায় সরকার। ফলে জনগণনা নিয়ে অনীহার কারণ স্পষ্ট। ঘটনা হল, এখন সরকারি স্তরে যা কিছু পরিকল্পনা হচ্ছে তা ২০১১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে। বাকিটা আন্দাজে। অথচ এই সময়কালে দেশের কোটি কোটি মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ফলে সরকারের যাবতীয় উন্নয়ন ও পরিষেবা প্রকল্পের সঙ্গে বাস্তবের ফারাক হচ্ছে। যার ফলে কোটি কোটি গরিব মানুষ তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এবারে জনগণনার সঙ্গে আরও একটি সঙ্গত দাবি শাসক গোষ্ঠীর কপালে ভাঁজ ফেলেছে। তা হল জাত গণনা। কংগ্রেস সহ বিরোধীরা তো বটেই, এমনকী এনডিএ-র একাধিক শরিকও এই দাবিতে সরব হয়েছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এদেশে তফসিলি জাতি ও উপজাতির হার যথাক্রমে ১৬.৬ এবং ৮.৬ শতাংশ। কিন্তু এর বাইরে যে বিপুল সংখ্যক জনজাতি রয়েছে, যারা ওবিসি শ্রেণিভুক্ত, মণ্ডল কমিশনের তথ্য অনুযায়ী যারা মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ, যারা সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অংশ, তাদের অর্থনৈতিক-সামাজিক-শিক্ষাগত অবস্থা ঠিক কেমন—অর্থাৎ আসল ছবিটা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। তাই এবার জনগণনার সঙ্গে জাত গণনারও জোরালো দাবি উঠেছে। বিজেপি জাত গণনার প্রবল বিরোধী। কিন্তু এখন পরিস্থিতির চাপে আরএসএস জানিয়েছে, সামাজিক কারণে এই তথ্য জানা দরকার। বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারও নাকি এ ব্যাপারে নিমরাজি হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কবে জনগণনা ও জাত গণনার হাতেগরম তথ্য সামনে আসবে সেই প্রশ্নের উত্তর এখন অধরাই রয়েছে।