উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
উল্লেখ্য, খালিস্তানি নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন হল মার্কিন নাগরিক। তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহেই নিখিলকে ধরা হয়েছে। ‘খুনের জন্য বরাত প্রদান’-এর অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কোর্টে নিখিলের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। ভারতের গোয়েন্দা এজেন্সি ‘র’-এর এক প্রাক্তন কর্তার নির্দেশেই নাকি নিখিল ওই যড়ন্ত্রে লিপ্ত হন। আরও দাবি করা হয় যে, ওই প্রাক্তন ‘র’ কর্তাটি হলেন বিকাশ যাদব। মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের দাবি, খালিস্তানি জঙ্গি হত্যার জন্য ১ লক্ষ মার্কিন ডলারের রফা হয়। আততায়ী অগ্রিম বাবদ পেয়ে যায় ১৫ হাজার ডলার। তবে সেই আততায়ী আদতে ছিল মার্কিন প্রশাসনেরই ‘আন্ডার কভার এজেন্ট’। তাতেই নাকি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয় মার্কিন প্রশাসন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে নিখিল নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করার পরেও মার্কিন প্রশাসন তার পিছু ছাড়ছে না। এই ঘটনার ছায়া ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর আগেই পড়েছিল।
বিকাশের নামে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নোটিস জারি হওয়ার দিন দশেকের মধ্যেই, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিযুক্ত করল কানাডা সরকার। কানাডায় নিযুক্ত হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মা-সহ কয়েকজন ভারতীয় কূটনীতিবিদকে সম্প্রতি একটি মামলার তদন্তে ‘পার্সন অফ ইন্টারেস্ট’ করা হয়। এমনকী তাঁদের জেরাও করতে চাওয়া হয় বলে দাবি করা হয়েছে একাধিক রিপোর্টে। নিজ্জর মামলায় সঞ্জয় ভার্মাদের কাছে কোনও তথ্য থাকতে পারে বলে দাবি কানাডার। কানাডা প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নয়াদিল্লি। প্রাথমিকভাবে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি তলব করা হয় ভারতে নিযুক্ত কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার স্টুয়ার্ট রস উইলারকে। এরপর কানাডা থেকে ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ একাধিক কূটনীতিককে ফেরানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বিদেশ মন্ত্রক। একইসঙ্গে ভারতে নিযুক্ত কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার-সহ ছয় কূটনীতিককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানায় নয়াদিল্লি। এখানেই শেষ নয়, কানাডা প্রশাসনের অভিযোগ, সে-দেশে বসবাসরত খালিস্তানি নেতাদের খতম করার গোপন অভিযানে নেমেছে ভারত। ওই চক্রান্তের প্রধান কারিগর নাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং! বুধবার কানাডার সংসদীয় কমিটির সামনে তাদের উপ বিদেশমন্ত্রী ডেভিড মরিসন সরাসরি বলেন, হত্যা-ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে রয়েছে অমিত শাহের পরিষ্কার নির্দেশ। নানাবিধ এজেন্টকে দিয়ে কানাডায় এই ভয়াবহ কাণ্ড ভারত সরকারই ঘটাচ্ছে বলে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’কে তিনিই বলেছেন। এই অস্বস্তিকর মন্তব্য সামনে আসতেই শুরু হয়েছে তোলপাড়। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের সরকারের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’কে পরোক্ষে ‘সুপারি কিলার’ দেগে দেওয়ার এমন দৃষ্টান্ত বেনজির। তাও আবার বলছে কানাডার মতো একটি বন্ধু গণতান্ত্রিক দেশ! সব মিলিয়ে বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না আন্তর্জাতিক মহলের। এই অবাঞ্ছিত অভিযোগ বিদেশ মন্ত্রক গুরুত্ব দিতে না চাইলেও এই প্রবণতা আমাদের ভাবমূর্তির পক্ষে মোটেই ভালো হচ্ছে না। এই প্রশ্নে ভারত সরকারের চুপ থাকা উচিত নয়, অভিযোগ যথাযথরূপেই খণ্ডন করা দরকার এবং এখনই। কানাডার মতো একটি ক্ষুদ্র গণতান্ত্রিক দেশ এমন অবান্তর কথা বলে পার পেয়ে গেলে, বৈরি মনোভাবাপন্ন অন্য স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলি এই দৃষ্টান্ত হাতিয়ার করতে চাইবে। ‘প্রক্সি প্রেশার ডিপ্লোমেসি’র সুযোগ গ্রহণে উৎসুক হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো গোলমেলে বৃহৎ শক্তিও।