উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
রাজনীতির কারবারিদের মতে, খাড়্গে এই কথা বলে একজন দায়িত্বশীল রাজনীতিকের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন, যে কোনও সরকারেরই নিজেদের আর্থিক সামর্থ্য বুঝে প্রতিশ্রুতি দেওয়া উচিত। ভোটে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারলে দল ও নেতা-কর্মীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। কংগ্রেস সভাপতির এই সদর্থক পর্যবেক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা পাওয়া উচিত ছিল। কারণ গত দশ বছরে দেশের মানুষকে একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারপর যেভাবে তিনি তা ভঙ্গ করেছেন, তাতে এসব নিয়ে মন্তব্য করার আগে আয়নায় নিজের মুখটা দেখে নিতে পারতেন তিনি। একথা মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই যে, ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার তাগিদে বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি যুবসমাজের সঙ্গে নিদারুণ ঠাট্টা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিল ‘আচ্ছে দিন’ আসবে দেশে। বলেছিলেন, বিকশিত ভারতের কথা। দিয়েছিলেন, সবকা সাথ সবকা বিকাশের গ্যারান্টি। কিন্তু তাঁর দু’দফার শাসনের নির্মম পরিণতি হল, দেশের প্রায় প্রতিটি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যর্থতার নজির গড়েছে মোদি সরকার। তাঁর শাসনে বড়লোক-গরিব লোকের আর্থিক ব্যবধান বৃদ্ধি, সম্পদ বণ্টনে সীমাহীন অসাম্য, অপুষ্টি, ক্ষুধাসূচক, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির সাঁড়াশি চাপে গরিব-মধ্যবিত্তের আধমরা অবস্থা তৈরি হয়েছে। আট বছর আগে কালো টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে নোটবন্দি করেছিলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা চূড়ান্ত ব্যর্থ ও হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগে মোদির নিজেরই কাঠগড়ায় দাঁড়ানো উচিত।
প্রতিশ্রুতিভঙ্গের মতো মোদি জমানায় ধাপ্পাবাজির আরও নানা নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে ‘খয়রাতির’ রাজনীতিতে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছিল এই প্রকল্প। যা অনুকরণ করে পরবর্তীকালে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্প চালু করে বাজিমাত করেছিল বিজেপি। এছাড়া দেশের ১১ কোটি কৃষকের জন্য বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য, ভোটের আগে দেশের ৮০ কোটি মানুষকে রেশনের মাধ্যমে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের ঘোষণা করে সেই খয়রাতির রাস্তায় হাঁটতে হয়েছিল মোদিকে। এখন মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটের আগেও ‘লড়কি বহিন’ প্রকল্পের ঘোষণা করে ভোটে জেতার ছক করেছে বিজেপির জোট সরকার। মুখে বিরোধীদের ‘খয়রাতি’-র রাজনীতির কড়া সমালোচক হলেও বিভিন্ন রাজ্যে খোদ বিজেপি সরকারের এই খয়রাতি বিলির রাজনীতিই চালু থাকায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য হাস্যাস্পদ হয়ে উঠছে না কি? তাই মন্তব্য করার আগে দুবার ভাবা বা এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকলেই বোধহয় সম্মান রক্ষা হতো।