উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
গ্রামীণ সড়ক যোজনার অন্তত এক বছর আগে থেকে ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকাও আটকে রেখেছে কেন্দ্র। টাকা না দেওয়ার কারণ হিসেবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কেন্দ্রের দাবি মেনে দুটি প্রকল্পেই সংশোধিত তালিকা তৈরি করে তা পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। তবু বরফ গলেনি। কেন্দ্রের এই অনমনীয় মনোভাবে ১০০ দিনের প্রকল্পে ২৪ লক্ষ শ্রমিক এবং আবাস যোজনা প্রকল্পে ১১ লক্ষ উপভোক্তা চরম বিপদে পড়েন। এই দুটি প্রকল্প মিলিয়ে কেন্দ্রের কাছে বাংলার পাওনা হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। পাওনা আদায় নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার পর এখন শোনা যাচ্ছে, প্রকল্প দুটি নিয়ে জট কাটাতে নাকি উদ্যোগী হচ্ছে কেন্দ্র! কিন্তু কেন্দ্রের টাকা কবে আসবে সেই অপেক্ষায় বসে না থেকে গত মার্চ মাস থেকে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া অর্থ রাজ্যের তহবিল থেকে মেটাতে শুরু করেছে মমতা সরকার। আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির জন্য ১.২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। দু’টি পর্যায়ে এই টাকা দেওয়া শুরু হবে ডিসেম্বর থেকে। এছাড়া আরও অনেক প্রকল্প আছে যার আর্থিক অনুদান থেকে রাজ্যবাসীকে বঞ্চিত করে রেখেছে কেন্দ্র। প্রকল্পের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়-বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেও সাহায্যের ব্যাপারে নীরব থাকছে কেন্দ্র— অভিযোগ রাজ্য প্রশাসনের।
পরিবর্তন নয়, বরং বাংলার প্রতি বঞ্চনার ট্র্যাডিশনই যেন রক্ষা করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রে যখন কংগ্রেসের শাসন ছিল, তখন রাজ্যে বাম সরকার বারবার দিল্লির বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, দিল্লিতে সরকার পরিবর্তন হলেও রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার ধারাবাহিকতায় কোনও বিরাম ঘটেনি। বরং মোদি জমানায় তা আরও প্রকট হয়েছে। অথচ এই কেন্দ্রীয় সামাজিক প্রকল্পগুলি আইন মোতাবেক তৈরি। কোনও কারণ দেখিয়ে এই শর্তহীন অধিকার খর্ব করা যায় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ম-বেনিয়মের জন্য টাকা দেব না—এমন দাবি বেআইনি ও অনৈতিক। এ রাজ্যের নাগরিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা দেওয়াটাও কেন্দ্রের আবশ্যিক কর্তব্য। এই দায় থেকে মুক্ত হতে পারে না কেন্দ্র। দায় অস্বীকার করাটা অধিকার ভঙ্গের শামিল। অথচ দেখা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে চলেছে মোদি সরকার। আসলে এই বঞ্চনা যতটা না অন্যান্য কারণে, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক। হয়তো মোদি-শাহরা চেয়েছেন, প্রকল্প নিয়ে ‘দুর্নীতির’ অভিযোগ করে ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা তুলতে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, প্রকল্পের উপভোক্তারা কেন্দ্রের বঞ্চনাকেই হাতিয়ার করে তাঁদের সমুচিত জবাব দিয়েছেন। একবার নয়, বারবার। এই চরম সত্য থেকে তাঁরা যদি কোনও শিক্ষা নেন তাহলে মঙ্গল সকলেরই।