সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ
বিজেপির বিজয়রথ রুখে দেওয়ার একটাই রাস্তা—অবিজেপি দলগুলির বেনজির ঐক্য। কারণ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসছে বেশিরভাগ মানুষ। জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য, ব্যাপক বেকারি ও বেরোজগারি তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। ধর্মীয় মেরুকরণ ও ইতিহাসের বিকৃতির ঘটনায় দেশে-বিদেশে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে ভারতের মর্যাদা। ব্যক্তিস্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার হরণের খতিয়ান বৃহত্তম গণতন্ত্রকে বিরাট প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। করসন্ত্রাস, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যবহার, নির্বাচন কমিশন ও আদালতের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা, নানা ক্ষেত্রে জুমলা এবং শ্রমিক, কৃষক ও প্রবীণদের উপর লাগাতার আক্রমণ নস্যাৎ করেছে এই সরকারের গ্রহণযোগ্যতা। অবিজেপি দলগুলির সামনে এত বড় সুযোগ একদশকে আর আসেনি। এটা কি তারা হেলায় হারাবে? বেশিরভাগ অবিজেপি দলের অতিসাম্প্রতিক ঐক্যপ্রচেষ্টাকে তাই বিলম্বিত বোধোদয় বলেই প্রশংসা করতে হয়। তারা অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এককাট্টা হতে পেরেছে। আমরা জানি, ইস্যু দুটি হল আদানি এবং মহিলা সংরক্ষণ বিল। ৭ ফেব্রুয়ারি লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী আদানি ইস্যুতে ছয়টি গুরুতর প্রশ্ন রাখেন। মাস পেরিয়ে গেলেও মোদি তার জবাব দিতে পারেননি। ‘হাম আদানি কে হ্যায় কৌন’ কটাক্ষ সিরিজে নাস্তানাবুদ হয়েও দমছে না সরকার। আদানির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার বদলে বিরোধীদের বিরুদ্ধে এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়ার মারপ্যাঁচ তারা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তাই বিরোধীরা তাদের আন্দোলন বুধবার সংসদ থেকে সড়কে নামিয়ে আনতে বাধ্য হয়। বিজেপি বিরোধী ১৮টি দলের সাংসদ-প্রতিনিধিরা একযোগে ইডি দপ্তর অভিযানে শামিল হন। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টকে সামনে রেখে যৌথ সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিতেও অনড় তাঁরা। কংগ্রেস সভাপতি ও এমপি মল্লিকার্জুন খাড়্গের লেটারহেডে দেওয়া চিঠিতে সই করেন ১৮টি দলের এমপিরা। অন্যদিকে, মহিলা সংরক্ষণ বিলকে সামনে রেখে বুধবার নয়াদিল্লিতে বিরোধীরা আরও একদফায় এক হওয়ার চেষ্টা করেন। কর্মসূচির আহ্বান করেন কেসিআর-কন্যা কে কবিতা। মহিলা বিল সংসদে পাশের দাবিতে কবিতা ১০ মার্চ দিল্লির যন্তরমন্তরে একদিনের অনশন ধর্মঘটও পালন করেন। সেদিন শামিল হন অন্তত নয়টি দলের প্রতিনিধিরা। আর বুধবার তাঁর ডাকে সাড়া দেন ১৩টি অবিজেপি দলের নেতৃত্ব। কবিতা আরও ঘোষণা করেছেন, মহিলা বিল পাশের দাবিতে তাঁদের কর্মসূচি বর্ষব্যাপী জারি থাকবে। লক্ষণীয় যে, প্রথমোক্ত আন্দোলন সবরকমে এড়ানো দুটি উল্লেখযোগ্য দলের নাম তৃণমূল কংগ্রেস এবং এনসিপি। এরপর দ্বিতীয় আন্দোলনে গরহাজির ছিল কংগ্রেস এবং তৃণমূল। মোদি প্রশাসনের দমন-পীড়ন এবং বৈষম্যের রাজনীতির শিকার কমবেশি সবক’টি অবিজেপি পার্টি। সিঙ্গল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিকেও নিত্য এর চড়া মাশুল মেটাতে হচ্ছে। তাহলে এই দু-চারটি দলের তরফে এমন ইচ্ছাকৃত গরহাজিরা কিংবা ‘একলা চলো’র কারণ কী? এতে তাদেরও কি রাজনৈতিক লাভালাভ কিছুমাত্র হবে? দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ানো আম পাবলিক জানতে চায়, স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে যখন অল আউট খেলার বিকল্প নেই, তখন এই কৌশল তাকেই অক্সিজেন জোগাবে না তো?