সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ
এখনও রাজ্যে সরকারি হাসপাতালের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল চিকিৎসা ব্যবস্থা। কিন্তু তা চাহিদার তুলনায় কম বলেই অথবা মনমতো উন্নতমানের পরিষেবা পেতে মানুষকে ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে। রাজ্যে প্রায় ৪ হাজার বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম রয়েছে। এরমধ্যে কলকাতাসহ বিভিন্ন জেলায় আছে ৮০টি বড় হাসপাতাল, যাদের শয্যা সংখ্যা ১০০-র বেশি। যদিও সরকারি হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসা মেলে, উন্নতমানের চিকিৎসাও হয়। পাশাপাশি বেসরকারি অধিকাংশ হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ বেলাগাম। অকারণ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, প্রয়োজনের তুলনায় বেশিদিন ভর্তি রাখা, প্রয়োজন না হলেও রোগীকে ভেন্টিলেশনে রাখা, সমস্ত ধরনের পরীক্ষা, অস্ত্রোপচার, শয্যা ভাড়া ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে বেসরকারি হাসপাতাল নার্সিংহোমের একাংশের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ। এরসঙ্গে রয়েছে গরমিল করে বিল বাড়িয়ে দেখানোর অভিযোগ। এক কথায়, স্বাস্থ্য পরিষেবা নয়, আদ্যোন্ত একশ্রেণির বেসরকারি হাসপাতাল ব্যবসায়ী সংস্থায় পরিণত হয়েছে, যেখানে লাভই শেষ কথা বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। এই প্রসঙ্গেই, বিশেষত দক্ষিণের রাজ্যগুলির নামজাদা হাসপাতালের চিকিৎসা খরচের সঙ্গে কলকাতার বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা খরচের তুলনা টেনে আনেন অনেকে। একথা ঠিক, বেসরকারি হাসপাতাল ‘চ্যারিটি’ করতে আসেনি। তাদের উন্নত ও আধুনিক পরিকাঠামো এবং ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট লুকের জন্য উপভোক্তাকে প্রয়োজনীয় মূল্য দিতেই হবে। কিন্তু সেই মূল্য কত হওয়া উচিত তারই ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিতে চায় রাজ্য সরকার। উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে ভালো। এর প্রয়োজনও আছে।
ঠিক হয়েছে, একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি এই কাজ করবে। কমিটিতে স্বাস্থ্যকর্তাদের পাশাপাশি চিকিৎসক ও বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনগুলির কর্তারাও রয়েছেন। খুব দ্রুত এই কমিটি বৈঠকে বসবে। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, ২০১৭ সালে স্বাস্থ্য কমিশন গঠন হওয়ার পর তারা এ পর্যন্ত ৩৩টি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। হাসপাতালের ফার্মাসি বিলে ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার নির্দেশও কমিশনের। আবার চিকিৎসার গাফিলতি সংক্রান্ত ১৫০০ মামলার নিষ্পত্তির পাশাপাশি অন্তত ৬৫০টি ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছে কমিশন। সব মিলিয়ে ৬ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তবু লাগাম পরানো যায়নি। কথায় বলে, আশায় মরে চাষা। তবু রাজ্যের এই উদ্যোগে আশায় বুক বাঁধছেন সাধারণ মানুষ। তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে একটা কাঁটাও থেকে যাচ্ছে। মানুষের বিপদের দিনে জনস্বার্থে প্রাইভেট হাসপাতাল নার্সিংহোমগুলি এবার কতটা সহযোগিতার হাত বাড়ায় সেটাই এখন দেখার।