সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ
কলাভবন প্রাঙ্গণে আচার্য নন্দলাল বসু ও রামকিঙ্কর বেইজের মূল্যবান ভাস্কর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এই দুই প্রাণপুরুষের যৌথ উদ্যোগে ১৯৩৪ সালে মাটি, আলকাতরা ও অন্যান্য মৌলিক উপাদান দিয়ে তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী কালোবাড়ি। রক্ষণাবেক্ষণ করত কলাভবন কর্তৃপক্ষ। বেশ কয়েক মাস আগে গাছ পড়ে কালোবাড়ির অ্যাসবেসটসের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও তা সংস্কার করেনি বিশ্বভারতী। শুধুমাত্র ত্রিপল ঢেকে রাখা হয়েছে। সেই ত্রিপল ফেটে বৃষ্টির জল ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি। একটা সময় পর্যন্ত কালোবাড়িকে অন্যান্য হস্টেলের মতোই ব্যবহার করতেন ছাত্ররা। মূলত স্নাতকোত্তর স্তরের নির্বাচিত পড়ুয়ারা কালোবাড়িতে আবাসিক হিসেবে থাকার সুযোগ পেতেন। কিন্তু প্রায় একবছর ধরে তা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কালোবাড়ির সমস্ত চাবি কলাভবন থেকে নিয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমশ ধ্বংসের দিকে এগচ্ছে ভবনটি।
বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য ও ভবনগুলি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করে এএসআই। অথচ, সেই তালিকায় কালোবাড়ি অন্তর্ভুক্ত নেই। এমনটাই বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে। পুরো বাড়িটি মাটির তৈরি বলে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত কলাভবনের দক্ষ অধ্যাপকরা কালোবাড়ির বিভিন্ন মূর্তি সংস্কার নিজের হাতেই করতেন। তবে রাষ্ট্রপতির আসার আগে তা এএসআইকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হয়।
রাষ্ট্রপতি কলাভবন ঘুরে দেখবেন—বিষয়টি জানাজানি হতেই রাতের ঘুম উড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। আপাতত ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছে কলাভবন। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মৌখিক নির্দেশে ভগ্নবাড়িটির সংস্কারের কাজও শুরু করেছিল কলাভবন কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, এর মাঝে ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব এএসআইকে মেইল করে সংস্কারের কাজ শুরু করতে বলেন। এমতাবস্থায় কাজ বন্ধ করে দেয় কলাভবন। বাকি আর তিনদিনের মধ্যে সংস্কারেরর কাজ সম্পূর্ণ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্ট মহল। ভগ্নপ্রায় বাড়িটি রাষ্ট্রপতির নজরে পড়লে কর্তৃপক্ষের মুখ পুড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।
একই অবস্থা গান্ধী মূর্তির ক্ষেত্রেও। এর আগে রাষ্ট্রপতি হিসেবে রামনাথ কোবিন্দ কলাভবনে এসে গান্ধীমূর্তির ভগ্নদশা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্তৃপক্ষকে সংস্কার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশও কার্যকর করা হয়নি। এমনটাই কলাভবনের অন্দরের খবর। এবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পরিদর্শনের আগে কর্তৃপক্ষ সেগুলি সংস্কার করতে পারে কি না সেদিকেই তাকিয়ে সব মহল।