প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। তবে তা বাস্তবায়িত হওয়াতে সমস্যা আছে। লৌহ ও ... বিশদ
কিন্তু এই অন্যায় অনির্দিষ্টকালের নিয়ম হতে পারে না। সারা পৃথিবীতে ছি ছিক্কার পড়ার পর মোদি সরকার ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু তাতে সব মানুষের, এমনকী সব গরিব মানুষেরও কভারেজের গ্যারান্টি নেই বলে মনে করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিক ইচ্ছায় সারা রাজ্যে চালু করা হয়েছে বিকল্প স্বাস্থ্য প্রকল্প। মমতার স্বাস্থ্যসাথী বাংলার ‘প্রতিটি’ মানুষের জন্য ঘোষিত হয়েছে। হিন্দু মুসলিম খ্রিস্টান শিখ উচ্চবর্ণ নিম্নবর্ণ বিপিএল গরিব মধ্যবিত্ত প্রভৃতি কারও বাধা নেই। এমনকী ধনীরাও স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে সরকারি/ বেসরকারি হাসপাতাল/ নার্সিংহোমের চিকিৎসা পরিষেবা নিতে পারেন। পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ মিলবে। বাংলার বাইরে ভেলোর বা এইমসের মতো নামী প্রতিষ্ঠানেও ‘ক্যাশলেস’ চিকিৎসা পাওয়া যাবে। মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলে দিয়েছেন, রাজ্যের কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যসাথীর গ্রাহককে ফেরাতে পারবে না। এই অন্যায় নজরে এলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করতে পারে সরকার।
রাজ্য সরকারের এই মনোভাবই বুঝিয়ে দেয়, নাগরিকদের স্বাস্থ্য/ চিকিৎসা পরিষেবার বিষয়ে তারা নীতিগতভাবে কী অবস্থান নিয়েছে। শুধু মুখে বলা নয়, স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া নিয়ে এই সরকার রোজ নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে। রাজনৈতিক বিভাজনের নোংরামিতে যে-রাজ্য বরাবরের চ্যাম্পিয়ন, সেই পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে স্বাস্থ্যসাথী নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী সত্য। এই প্রকল্পের সবচেয়ে সমালোচক এবং বিরোধী যে বিজেপি, তাদের কট্টর সমর্থক এমনকী নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদেরকেও এতে শামিল করা হয়েছে। সম্প্রতি লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পরিবারের সদস্যরাও। কেউ তাঁদের বাধা দেয়নি। বরং তাঁদের সমানাধিকারকেই প্রতিষ্ঠা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। দিলীপবাবুর পরিবার কোনও ভুল করেনি। তাদের ধন্যবাদ যে, সরকারি কর্মসূচিকে তারা রাজনীতি ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছে কোনওরকম কুণ্ঠা ছাড়াই। কন্যাশ্রীর মতোই এক মডেল হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্যসাথী। কোনও সন্দেহ নেই। এটাকে স্বাস্থ্য বিপ্লব বললে অত্যুক্তি হবে না। স্বাস্থ্যসাথীর এই অভাবনীয় সাফল্য আগামিদিনে সারা ভারতকে ভাবতে বাধ্য করবে। পাল্টে দেবে রাজনীতির গতিপথ। নাগরিকের সুস্বাস্থ্যের গ্যারান্টি না দিয়ে কোনও পার্টি সরকার গড়ার পর্যায়ে পৌঁছতে পারবে না।