সুখেন্দু পাল, বর্ধমান: ২০১৯ সালের নির্বাচনে দুর্গাপুরের দু’টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে পিছিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রেই বিজেপির জয় নিশ্চিত করেছিল। ২০১৯ সালের গেরুয়া শিবিরের ‘গড়’ ভাঙতে ইস্পাতনগরীকে পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। দলের প্রার্থী কীর্তি আজাদ সেখানেই বেশি সময় দিচ্ছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ড ধরে ধরে তিনি প্রচার করছেন। অন্যদিকে, বর্ধমান উত্তর এবং দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছে বিজেপি। দলের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ প্রায় প্রতিদিনই বর্ধমান শহরে কোনও না কোনও কর্মসূচি নিচ্ছেন। সকালে প্রাতঃভ্রমণ দিয়ে প্রচার শুরু করছেন। শহরের বিভিন্ন জায়গায় চা চক্রের আসর বসাচ্ছেন।  বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন গ্রামেও তিনি চষে  বেড়াচ্ছেন। দুর্গাপুরে অবশ্য তাঁর ‘টিম’ কাজ করছে। বিজেপির একাংশের মতে, দুর্গাপুরের দু’টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এবারও তাদের ভালো ফল হবে। বর্ধমানের উত্তর এবং দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে  ভোট বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণেই অঙ্ক কষেই তারা এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে জোর দিয়েছে। 
এদিকে, তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকেই মনে করছেন, ভাতার, মন্তেশ্বর এবং বর্ধমানের দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রে তাদের সংগঠন ভালই রয়েছে। ওখানকার স্থানীয় নেতাদের এলাকায় যথেষ্ট ভাল প্রভাব রয়েছে।  লিড পাওয়া নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলি তৃণমূলের দখলে রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। গেরুয়া শিবিরের সংগঠনের হালও অত্যন্ত খারাপ। সেই কারণে রাজ্যের শাসকদল  এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলি নিয়ে খুব বেশি দুঃশ্চিন্তায় নেই। বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ বলেন, সব জায়গা থেকেই আমরা লিড পাব। কিছু এলাকায় উপদ্রুত হয়ে রয়েছে। ওই এলাকা গুলিতে মানুষ জবাব দেবেন। তৃণমূলের প্রতি ভোটাররা বীতশ্রদ্ধ  হয়ে রয়েছেন।  পাঁচ বছর মানুষের পাশে থাকব বলেই এখানে এসেছি। তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ একটি সভায় বলেন, এই কেন্দ্রের মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। তাতে আমি অভিভূত। দিদির উন্নয়ন দেখে মানুষ আমাদেরকে ভোট দেবেন। যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই মানুষের ভালো সাড়া পাচ্ছি। 
 বিজেপি সূত্রের আরও জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের গোদার মাঠে সভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটি এলাকা থেকেই  বিজেপির কর্মী সমর্থকরা সেদিন জমায়েত হবেন। সভার জন্য বর্ধমান শহরকে বেছে নেওয়ার পেছনে বিজেপির একাধিক অঙ্ক রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এখানে সভা করলে বর্ধমানের দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারদের মধ্যে অনেক বেশি সাড়া পড়বে বলে নেতৃত্ব মনে করছে।
বিজেপিকে পাল্টা জবাব দিতে বর্ধমান শহরে পদযাত্রা করবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া ২ মে এই লোকসভা কেন্দ্রের নেতৃত্ব সঙ্গে বর্ধমানে বৈঠক করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইস্পাত নগরীতে ও শাসকদলের একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। বর্ধমানের দুটি বিধানসভা কেন্দ্রের পাশাপাশি ইস্পাতনগরী থেকে লিড নেওয়াই তাদের টার্গেট। ভাতার এবং মন্তেশ্বর নিয়ে বিজেপি ও খুব বেশি আশাবাদী নয়। এই দুই কেন্দ্র থেকে লিড আসবে বলেই তৃণমূল নিশ্চিত। যদিও বিজেপিও হাল ছাড়ছে না। তারাও সেখানে প্রচার করছে। যদিও সেই প্রচারে জোর নেই।