উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
এতদিন কলম্বোর মাহাওয়েলা গার্ডেন্স এলাকার সাদা বাড়িটাকে সম্মান করত সবাই। পরিবারের সদস্যদেরও সামাজিক সম্মান ছিল, প্রতিপত্তি ছিল। কিন্তু রবিবারের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পর বদলে গিয়েছে সব। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে এই পরিবারই শ্রীলঙ্কার সবথেকে ভয়ানক জঙ্গিহানার মাস্টারমাইন্ড। যে হামলায় সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে তার নেপথ্যে ছিল এই ইব্রাহিম পরিবার। বাড়ির বেশিরভাগ সদস্যই মারা গিয়েছেন। পরিবারের কর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইস্টার সানডেতে হামলার পর দীর্ঘ সময় কোনও সংগঠন ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। দু’দিন বাদে হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। তবে তার আগেই ইব্রাহিম পরিবারের জঙ্গি যোগাযোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল প্রশাসন।
এনডিটিভি-র সূত্রের খবর, এই বাড়ির বড় ছেলে ইনসাফ ইব্রাহিমই কলম্বোর অন্যতম বিখ্যাত হোটেল সাংরিলাতে আঘাত হানে। প্রাতরাশের লাইনে দাঁড়িয়ে নিজের সঙ্গে থাকা বোমা ফাটিয়ে দেয় ইনসাফ। মৃত্যু হয় বহু মানুষের। এরপর সেদিনই ইব্রাহিমদের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। বিপদ বুঝতে পেরে ইনসাফের ছোট ভাই ইলহাম আত্মঘাতী বোমা ফাটায়। তাতে মৃত্যু হয় তার। একই সঙ্গে তার স্ত্রী এবং তিন সন্তানেরও প্রাণ যায়। শ্রীলঙ্কা পুলিস সরকারিভাবে এখনও এই খবর জানায়নি। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একটি বিশেষ সূত্র থেকে এই খবর জানতে পেরেছে।
পুলিস যতই প্রমাণ করার চেষ্টা করুক না কেন স্থানীয়রা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে পরিবার আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াত, তারাই এমন একটা ভয়ানক কাজ করেছে। এই বাড়ির পাশেই থাকেন ফাতিমা ফাজলা নামে এক গৃহবধূ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ওদের দেখে খুব ভাল মানুষ বলে মনে হতো। ওরা যে কারও বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ত। শুধু সামাজিক সম্পর্ক নয় আর্থিক দিক থেকেও এই পরিবার ছিল যথেষ্ট সচ্ছল। পরিবারের কর্তা মহম্মদ ইব্রাহিম শ্রীলঙ্কার অন্যতম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। এই মশলা ব্যবসায়ী প্রভাব সর্বজন বিদিত। একটি সূত্র বলছে দেশের ব্যবসায়ী মহল কীভাবে পরিচালিত হবে তা নির্ধারণ করতে ইব্রাহিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। একসময় জঙ্গি ইনসাফ ইব্রাহিমের বাবা ইউসুফ ইব্রাহিম শ্রীলঙ্কার বামপন্থী দল জনতা ভিমুখী পেরামুনা পার্টির হয়ে নির্বাচনও করেছিলেন। তিনি শ্রীলঙ্কার বর্তমান শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ঋষথ বাথিউডেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। তাঁকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও দেখা গিয়েছে। স্থানীয়রা পুলিসও জানিয়েছে, তিন কন্যা এবং ছয় পুত্রের বাবা ইউসুফ ইব্রাহিম খাবার এবং টাকা দিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে থাকতেন। তবে এই ঘটনার পর তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলা সম্পর্কে সে কতটা কী জানে বা আদৌ কিছু জানে কিনা তা জানতেই তাকে নিজেদের হেপাজতে নিয়েছে পুলিস।