হাজিপুর (বিহার): এ যেন কোনও বলিউডি মুভির দৃশ্য! বাড়ির কাছেই একটি জামাকাপড়ের দোকানে দাঁড়িয়ে স্থানীয় কাউন্সিলার। আচমকা তিন দুষ্কৃতী বাইক থামিয়ে গুলি চালাতে শুরু করল। প্রাণভয়ে পালিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়লেন নেতা। তাঁকে ধাওয়া করে সেই বাড়িতে ঢুকে পড়ল দুষ্কৃতীরাও। এলোপাথাড়ি গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেল তাঁর দেহ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিহারের গাজিপুরে শ্যুটআউটের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, নিহত কাউন্সিলারের নাম পঙ্কজ রাই। তিনি লালুপ্রসাদ যাদবের পার্টি আরজেডির নেতা। দলীয় নেতাকে এইভাবে খুনের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন লালু-পুত্র তথা প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে নিশানা বানিয়েছেন তিনি। আরজেডি বিধায়ক মুকেশ রোশনের তোপ, বিহারে ‘জঙ্গলরাজ’ চলছে। আরজেডি ক্ষমতায় থাকাকালীন এনডিএ শিবির হামেশাই ‘জঙ্গলরাজে’র অভিযোগ তুলত। এবার সেই অস্ত্রেই নীতীশ কুমারের সরকারকে বিঁধল আরজেডি শিবিরও। 
হাজিপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছিলেন রাই। দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পুলিস সূত্রে খবর, মাস ছয়েক আগে একটি বিবাদের ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন রাই। পরিবারের অভিযোগ, পুলিস এবিষয়ে কোনও পদক্ষেপই নেয়নি। কাউন্সিলার খুন হওয়ার পর তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যান পুলিস সুপার হরকিশোর রাই সহ উচ্চ পদস্থ কর্তারা। পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্তদের ধরতে এলাকার সিসি ক্যামেরাগুলির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও খুনের এই ঘটনায় বিহারের রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের তোপ, নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএর গুন্ডারা রাতে গুলি করে খুন করেছে কাউন্সিলার পঙ্কজ রাইকে। মুখ্যমন্ত্রী ও দুই উপ মুখ্যমন্ত্রী যখন শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন, তখন তাঁদের গুন্ডারা তাণ্ডব চালাচ্ছে। বিধায়ক মুকেশ রোশন বলেন, কাউন্সিলার পঙ্কজ রাই দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁর খুনের ঘটনা দেখাচ্ছে, এমনকী জনপ্রতিনিধিরাও তাঁদের বাড়িতে পর্যন্ত নিরাপদ নন। বিহারে জঙ্গলরাজ চলছে।