মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
গঙ্গাসাগর মানেই লাখো লাখো তীর্থযাত্রীর সমাগম। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় প্রশাসন ও পুলিসকে। কিন্তু এদিন যেন সেই ব্যস্ততা উধাও! মুড়িগঙ্গা নদীতে খালি বার্জ যাচ্ছে। ভেসেলে উপচে পড়া ভিড় নেই। গতবার মেলার প্রাক্কালে বিভিন্ন ঘাটে তীর্থযাত্রীদের সমাগমে কালো মাথার ভিড় ছাড়া কিছুই দেখা যেত না। এবারে সংক্রান্তির দু’দিন আগে সেটা নেই। সৈকতে যাওয়ার রাস্তাগুলি একপ্রকার ফাঁকা। স্নানের সৈকতে লোকজন রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
মহাকুম্ভের কারণেই কি এবার গঙ্গাসাগরে ভিড়ে এই ভাটা? এই প্রশ্ন উঠছে। যদিও তীর্থযাত্রীদের অনেকে জানাচ্ছেন, গঙ্গাসাগরেই পুজো দিয়ে তাঁরা পুণ্যলাভ করেছেন আর কুম্ভে যাবেন না। আবার কারও দাবি, কুম্ভদর্শন করেই এসেছেন এখানে। যেমন নাগপুর থেকে ১০০ জনের একটি দল এদিন গঙ্গাসাগরে এসেছে। সদস্যরা বলেন, ‘নতুন যে ভাইরাস আবার দেশে ঢুকেছে তার ভয়ে বেশি ভিড় ঠেলে পুজো দিতে ইচ্ছুক নই। তাই সংক্রান্তির আগেই কপিলমুনির দর্শন সেরে ফেলা হল।’ রাজস্থানের আলোয়ার থেকে মহিলাদের একটি দল পুজো দিতে এসেছে এদিন। তারাও এক বাক্যে জানিয়েছে, কুম্ভে যাওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই। শুধুমাত্র গঙ্গাসাগরের ভিড় এড়াতেই এবার এখানে আগাম পুজো দিতে আসা তাদের।
এদিকে ২ নম্বর বিচ থেকে মন্দির যাওয়ার রাস্তা ধুলোয় ঢেকে গিয়েছে। বালি পড়ে থাকার ফলে সারাক্ষণ বিভিন্ন গাড়ি যাচ্ছে আর তার ফলে উড়ছে ধুলোবালি। তাতেই জেরবার হচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। প্রতিবার এই রাস্তায় জল ছিটিয়ে ধুলো ‘মারার’ কাজ হয়, এবারে তা হয়নি বলেই অভিযোগ।
মেলা পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তীর্থযাত্রীরা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে গিয়েছে মেলা চত্বরে। যেমন হাওড়ার উলুবেড়িয়া থেকে দেড়শো জনের একটি দল এসেছিল। তাঁদের একজনের কাছ থেকে একটি ব্যাগ ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা। তার মধ্যে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিল। মেলাপ্রাঙ্গণে অস্থায়ী পুলিস ক্যাম্পে অভিযোগ জানিয়ে ব্যাগটি ফেরতও পেয়েছেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু তার মধ্যে টাকা ও মোবাইলের কিছুই ছিল না। দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছে মহারাষ্ট্র থেকে আসা একটি দলও।
এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, মেলাপ্রাঙ্গণে এখনও পর্যন্ত ২২টি চুরির ঘটনা গিয়েছে। ওইসব ঘটনায় পুলিস গ্রেপ্তার করেছে মোট ১৫ জনকে। ১৮টি ঘটনায় খোয়া-যাওয়া সামগ্রী উদ্ধারও করেছে পুলিস। ভিড় প্রসঙ্গে মন্ত্রীর দাবি, ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে স্নান সেরে ফিরে গিয়েছেন ৪২ লক্ষ পুণ্যার্থী। -নিজস্ব চিত্র