মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, রায়গঞ্জ, বিএনএ: তৃণমূল কংগ্রেস থাকতে একজনকেও রাজ্য থেকে তাড়াতে পারবে না বিজেপি। ওরা এনআরসি’র নামে অসমের ভূমিপুত্রদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বিজেপি এখন বলছে এরাজ্যেও এনআরসি করে দেবে। এখানকার রাজবংশী ভূমিপুত্রদেরও নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে এরাজ্যে এনআরসি হবে না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী থাকতে রাজ্যের একজন মানুষকেও তাড়াতে পারবে না বিজেপি। বৃহস্পতিবার রূপাহারে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের দলীয় প্রার্থী তপন দেব সিংহের সমর্থনে প্রচারে এসে একথা বলেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণীকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বলেন, আমরা গ্রামগঞ্জে প্রচারে গিয়ে মানুষের কাছে এনআরসির আতঙ্কের কথা শুনতে পারছি। মানুষ এনআরসির ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাহারাদার হয়ে থাকবেন। বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করছি, কেউ এনআরসিকে ভয় পাবেন না। ভোটে ওদের যোগ্য জবাব দিন।
বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকার বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের রূপাহার গ্রাম থেকে ভোটের প্রচার শুরু করেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। একটি হুডখোলা গাড়িতে প্রার্থী তপন দেব সিংহকে নিয়ে তাঁরা বিস্তীর্ণ এলাকায় রোড শো করেন। প্রার্থীকে নিয়ে প্রচার শুরু হতেই মহিলারা উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি দেন। ফুল ছিটিয়ে প্রার্থীকে স্বাগত জানান। প্রার্থী, মন্ত্রী, নেতারা হাত নেড়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। হুডখোলা প্রচার গাড়ি গ্রামীণ রাস্তায় যত এগিয়েছে, প্রার্থীকে দেখতে রাস্তার দু’ধারে শয়ে শয়ে মানুষের ভিড় তত বেড়েছে। কয়েকশ যুবক পেছনে মোটর বাইক নিয়ে র্যা লিতে ছিলেন।
রোড শোয়ে পা মেলানো উত্তর রূপাহারের বাসিন্দা প্রতিমা দাস, সাবিত্রী রায়রা বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শিক্ষিত মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী যোগ্য লোককে প্রার্থী করেছেন। বৈশ্যপাড়ার বাসিন্দা সুধীর দাস বলেন, লোকসভা ভোটে আমরা বিজেপির পক্ষে ছিলাম। কিন্তু অসমে এনআরসির ফলে অনেক মানুষ নাগরিকত্ব হারিয়েছেন।
রাজীববাবু বলেন, রাজ্যের মানুষ আগে অন্যান্য দলের কাজকর্ম দেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর কৃষি, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়ন করেছেন। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল কলেজ, আইটিআই কী হয়নি! পরিশ্রুত পানীয় জলের পরিষেবা গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। রাস্তা গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছেন। রাজ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ছুটে যান। বিপর্যয়ের সময় বিজেপির নেতারা কোথায়? দেশের অর্থনীতির হাল খারাপ করে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বেকারত্ব সমস্যার সমাধান নেই। বেসরকারিকরণের দিকে বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। প্রবীরবাবুর দাবি, কালিয়াগঞ্জে আমাদের প্রার্থী জয়ী হলে এখানকার স্বাস্থ্য পরিষেবাকে ঢেলে সাজানো হবে। গ্রামীণ রাস্তার উন্নয়ন পরিশ্রুত পানীয় জল, মহিলা কলেজ সহ সার্বিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার নজর দেবে। এদিন মন্ত্রী ও বিধায়ক বীরঘইয়ে রোড শো করে পরে বিকেলে কালিয়াগঞ্জের অনন্তপুরের কুড়গ্রামে ও ভবানীপুরে সভা করেন। সন্ধ্যায় কালিয়াগঞ্জের ভাণ্ডারের বাঘন এলাকায় নির্বাচনী সভা করেন শাসকদলের ওই নেতামন্ত্রীরা। প্রচারে তাঁদের সঙ্গে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, রাজ্য঩নেতা অসীম ঘোষও ছিলেন।