বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
কলকাতা থেকে হাতির দাঁতের তৈরি বিভিন্ন জিনিস বিদেশে পাচার হচ্ছে- ডিআরআইয়ের কাছে অনেক দিন ধরেই এই খবর আসছিল। কিন্তু জিনিসগুলি কোথায় তৈরি হচ্ছে, তার সন্ধান পাচ্ছিলেন না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। খোঁজ চালাতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, কেরলের এক চোরাশিকারী এই সামগ্রীগুলি পাঠাচ্ছে। এরপরই দক্ষিণ ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে তল্লাশি শুরু হয়। তা করতে গিয়েই জানা যায়, কেরালা থেকে হাতির দাঁত আসছে কলকাতায়। একটি গাড়িতে করে তা আনা হচ্ছে। ওই গাড়ির নম্বর জোগাড় করা হয়। সাঁতরাগাছি এলাকায় অফিসাররা ওই গাড়িটিকে আটক করেন। তাতে বসে ছিল সুদীশচন্দ্র বাবু ও তার মেয়ে অমিতা এসসি বাবু। তল্লাশি চালাতেই গাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয় ৩.১৪ কেজি ওজনের হাতির দাঁত। কিন্তু এর স্বপক্ষে কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি সুদীশচন্দ্র ও তার মেয়ে। অফিসাররা নিশ্চিত হন, চোরাপথে এগুলি আনা হয়েছে। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় বাবা ও মেয়েকে। ধৃত দুজনকে মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক তাদের জেল হেফাজতে পাঠিয়ে দেন।
ধৃতদের জেরা করে অফিসাররা জানতে পারেন, কসবার রাজডাঙা এলাকায় তাদের বাড়ি রয়েছে। সেখানে হাতির দাঁত কেটে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করার জন্য ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটও খোলা হয়েছে। সেখানে তৈরি করা হচ্ছে মূর্তি, ও অলঙ্কার। এরপরই তাদের নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হন তদন্তকারী অফিসাররা। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১০টি মূর্তি ও অন্যান্য সামগ্রী। সেগুলি আসল হাতির দাঁতের তৈরি কি না, তা যাচাই করে দেখতে খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরকে। তাদের অফিসাররা এগুলি পরীক্ষার পর জানিয়ে দেন, সমস্ত সামগ্রীই হাতির দাঁতের তৈরি।
কিন্তু কোথা থেকে আনা হতো এই হাতির দাঁত? তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, গোটা পরিবারটাই চোরাশিকার ও চোরাকারবারে জড়িত রয়েছে। সুদীশচন্দ্রের বাবা আগে এই ব্যবসা করত। পরে এই ব্যবসায় নামে সুদীশচন্দ্র। দক্ষিণ ভারতের বড় বড় চোরাশিকারীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ গড়ে ওঠে। সেই সূত্রেই কলকাতায় ব্যবসা জমিয়ে বসে। এরপর ছেলেকেও চোরাশিকার কারবারে নামায়। বাবা-মেয়ে মিলে ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট খোলে। ছেলে কেরল থেকে হাতির দাঁত কলকাতায় পাঠাত। তা সংগ্রহ করত অমিতা ও সুদীশচন্দ্র। এছাড়া অন্য চোরাকারবারিদের কাছ থেকেও তা সংগ্রহ করা হতো। ডিআরআই জেনেছে, সুদীশচন্দ্র ও তার স্ত্রী কেরলে চোরাশিকারের মামলায় একবার গ্রেপ্তারও হয়। কসবায় তৈরি হওয়া বিভিন্ন সামগ্রী পাঠানো হতো নেপালে। সড়কপথে শিলিগুড়ি হয়ে তা বিদেশে যেত। সেখানে বেড়াতে আসা বিদেশি পর্যটক ও সংগ্রাহকদের কাছে চড়া দামে তা বিক্রি করা হত। এই চক্রে আর কারা জড়িত রয়েছে, তাদের নাম জানার চেষ্টা হচ্ছে।