আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
নৈনিতাল শহরে প্রবেশ করলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে নৈনিহ্রদের ছবি। হ্রদের ধারে সবুজে ঢাকা পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে স্থানীয়দের বসতি আর হোটেল পরিপাটি করে সাজানো। শহরটাও বেশ পরিচ্ছন্ন। হ্রদের জলে বোটিং করা যায়। জলের ধারেই বোট ক্লাব, নয়না দেবীর মন্দির আর গুরুদ্বার। লেকের গা দিয়ে ম্যাল রোড ধরে হাঁটতে ভালো লাগে। লেক লাগোয়া মাল্লিতাল থেকে কেবল কারে চেপে পৌঁছনো যায় স্নো ভিউ পয়েন্টে। এছাড়াও এখানে দেখবেন চায়না পিক, খুরপা তাল, ইকোপার্ক কেভ গার্ডেন, চিড়িয়াখানা। শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে আরণ্যক পাহাড়ি গ্রাম কিলবারি থেকে হিমশৃঙ্গের শোভা অপরূপ দেখায়। শহরের অদূরে রয়েছে হনুমান গাড়ি সানসেট ভিউ পয়েন্ট।
নৈনিতালের আশপাশের কয়েকটি হ্রদ-দর্শন এই সফরের বাড়তি পাওনা। পর্যটকদের কাছে এটি লেক ট্যুর নামে পরিচিত। নৈনিতাল থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে সাততাল। আরণ্যক পরিবেশের মাঝে এই অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে সাতটি হ্রদ। যার মধ্যে কয়েকটিতে বোটিং করা যায়। নিরালা প্রকৃতির মাঝে দিনভর কানে বাজে পাখিদের কলতান। এই অঞ্চলে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে কয়েকটি। সাততাল বেড়িয়ে চলুন ১২ কিলোমিটার দূরের নওকুচিয়াতাল। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ ঘিরে এই হ্রদকেও। এখানেও হ্রদের তীরে রাত কাটাতে পারেন। রয়েছে জলবিহারের ব্যবস্থা। এই হ্রদ থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে আরও একটি হ্রদ ভীমতাল। জলের মাঝে ভেসে রয়েছে এক টুকরো সবুজদ্বীপ। হ্রদের কাছে রয়েছে ভীমেশ্বর মহাদেব মন্দির। এই হ্রদের কাছেই হোটেল রয়েছে। এই ট্যুরে এছাড়াও দেখবেন ভক্তিস্থল মন্দির।
নৈনিতাল থেকে পাহাড়ি পথ ধরে পাড়ি দিন বিনসর। দূরত্ব ৯৬ কিলোমিটার পথ গিয়েছে আলমোড়া হয়ে। অরণ্যে ছাওয়া বিনসর জনপদে একসময় ছিল স্থানীয় চাঁদ রাজাদের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী। বিনসর অরণ্যের মাঝে কেএমভিএন-এর ট্যুরিস্ট লজে রাত কাটানো এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা। পরিষ্কার আবহাওয়া থাকলে এখান থেকে দৃশ্যমান হয় দিগন্তব্যাপী হিমালয়ের একাধিক হিমশৃঙ্গ। সূর্যোদয়ের দৃশ্যও খুব সুন্দর দেখতে লাগে এখানে থেকে। বিনসর অরণ্যের মধ্যে দেখবেন ঝান্ডি ধরে ভিউপয়েন্ট, সানসেট পয়েন্ট, বিনসর মহাদেব মন্দির। অরণ্যে রয়েছে হরিণ, লেপার্ড, অজস্র পাখি।
বিনসর থেকে অচেনা পথে এবার গন্তব্য জাগেশ্বর। দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। যাত্রাপথে দেখে নিন বনবিভাগের তেণ্ডুয়া পার্ক, চিতাই গ্রামের গোলুদেবা মন্দির। এই যাত্রাপথের প্রায় পুরোটাই পাইন গাছে ছায়া ঢাকা পাহাড়ি পথ। পাইন, দেওদার গাছের ঘেরাটোপে গড়ে উঠেছে প্রাচীন পাহাড়ি গঞ্জ জাগেশ্বর। এখানে রয়েছে শতাধিক নানা মাপের মন্দির। কারুকার্যময় মন্দিরগুলি বেশিরভাগই শিবের। শিবরাত্রিতে এখানে বড় উৎসব হয়। এমন নির্জন পাহাড়ি দেবভূমিতে রাত কাটাতে মন্দ লাগবে না।
প্রয়োজনীয় তথ্য
হাওড়া থেকে কাঠগোদাম বাঘ এক্সপ্রেস অথবা লালকুঁয়া এক্সপ্রেস আসছে যথাক্রমে কাঠগোদাম ও লালকুঁয়াতে। দিল্লি থেকেও ট্রেন আসছে এই দুই স্থানে। ট্রেন আসছে লখনউ থেকেও। নৈনিতাল থেকে দূরত্ব কাঠগোদাম ৩৫ কিলোমিটার, লালকুঁয়া ৬০ কিলোমিটার। এই পথে গাড়ি, বাস পাবেন। সড়কপথে নৈনিতাল থেকে দিল্লির দূরত্ব ৩২৬ কিলোমিটার। নৈনিতালের লেক লাগোয়া অঞ্চলে থাকার অনেক হোটেল রয়েছে। KMVN-র সরকারি ট্যুরিস্ট লজের ব্যবস্থা ভালো। এদের ওয়েবসাইট www.kmvn.gov.in
ছবি: সুবীর কাঞ্জিলাল