ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
বুধবার রাতে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি ও মারধরের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নানুর থানার থুপসরা পঞ্চায়েতের সাঁতরা গ্রাম। গ্রামবাসীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত প্রায় ১১টা নাগাদ গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয়। তারপর দুই দলের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারামারি হয়। এই ঘটনার জেরেই গ্রামে শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর। দুই পক্ষই থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছে। সাঁতরা গ্রামের বিজেপি সমর্থকদের অভিযোগ, বুধবার রাতে হঠাৎ বাগদিপাড়ায় বোমাবাজি করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। পাড়ার মহিলারা প্রথমে বিষয়টি দেখতে গেলে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারধর ও শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। পরে মহিলাদের চিৎকারে অন্যান্যরা ঘর থেকে বাইরে এসে প্রতিরোধ করলে বোমা ফাটাতে ফাটাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। বোমাবাজি ও মারধরের ঘটনায় বিজেপির বেশ কয়েকজন আহত হন। তাঁদের বৃহস্পতিবার সকালে নানুর ব্লক প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় বিজেপির পক্ষ থেকে নানুর থানায় ন’জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিজেপির আরও অভিযোগ, লোকসভা ভোটে গ্রাম থেকে বিজেপি লিড দিয়েছিল। সাঁতরা গ্রামেই তৃণমূলের দাপুটে নেতার বাড়ি। সেই এলাকাতে বিজেপি তাদের প্রভাব বিস্তার করছে তা মানতে না পেরে এই আক্রমণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, তৃণমূল তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা পাল্টা দাবি করেছে, বুধবার রাতে বিজেপি আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী গ্রামে অশান্তি শুরু করে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় সশস্ত্র অবস্থায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গ্রামের তৃণমূল সমর্থকদের উপর চড়াও হয়। তাদের কয়েকজন কর্মীকে ব্যাপক মারধর করা হয় ও গ্রামে বোমাবাজিও করা হয়। মারধরে তৃণমূলের কয়েকজন সমর্থক আহত হন। তাঁদের স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বিজেপির পাল্টা তৃণমূলের পক্ষ থেকেও পাঁচজন বিজেপি সমর্থকের নামে নানুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গ্রামে অশান্তি ও বোমাবাজির ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকায় ছিল ব্যাপক উত্তেজনা। বুধবার রাতে বোমাবাজির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নানুর থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এদিন সকালেও গ্রামে পুলিসি টহল দেখা যায়। গ্রাম আপাতত শান্ত থাকলেও এলাকা দখলের রাজনীতির জেরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে, সেই আশঙ্কায় দিন গুনছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সাঁতরা গ্রামের বিজেপি সমর্থক অন্ন মাঝি বলেন, বুধবার রাতে হঠাৎ বোমাবাজি শুরু করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। গ্রামে থাকতে গেলে বিজেপি করা যাবে না, তৃণমূল করতে হবে। সেই কথা না শুনলে মারধর, অত্যাচার করা হবে। আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। প্রশাসন সাহায্য না করলে কীভাবে গ্রামে বসবাস করব বুঝতে পারছি না।
বিজেপির নানুর মণ্ডল সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, সাঁতরা গ্রামে তৃণমূলের নানুর এলাকার নেতা কেরিম খানের বাড়ি। সেই গ্রামেই ধীরে ধীরে আমাদের সংগঠন বাড়ছে, তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না তৃণমূল। তাই এইভাবে আক্রমণ করে ভয় দেখিয়ে বিজেপি কর্মীদের গ্রাম ছাড়া করতে চাইছে।
যদিও এবিষয়ে নানুর ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, পুলিসে অভিযোগ করা হয়েছে। সেইমতো পুলিস তদন্ত করে ঘটনার আসল সত্য দেখবে।