কারও কাছ থেকে কোনও দামি উপহার লাভ হতে পারে। অকারণ বিবাদ বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্য ... বিশদ
১৯৪৮সালে জয়কৃষ্ণপুর হাইস্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে আগাগোড়াই সরস্বতী পুজোর চল ছিল। প্রতিবছর ঠাকুর আনা থেকে অঞ্জলি, বিসর্জন অবধি পড়ুয়ারা ব্যস্ত থাকত। এই স্কুলে সংখ্যালঘু পড়ুয়ার সংখ্যাই বেশি। পুজোকে ঘিরে দেখা যেত সম্প্রীতির ছবি। কিন্তু ১৯৯৩ সালের পর থেকে পরিচালন সমিতি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্বের জেরে সরস্বতী পুজো বন্ধ হয়ে যায়। এমনটাই জানালেন স্কুলের বর্তমান টিচার-ইনচার্জ অনুপকুমার সাহা। তিনি বলেন, ৩৫বছর ধরে এখানে শিক্ষকতা করে আসছি। স্কুল বিদ্যালাভের জায়গা। সেখানেই বিদ্যার দেবীর আরাধনা না হওয়ায় পড়ুয়াদের পাশাপাশি আমাদেরও মন খারাপ হতো।
সম্প্রতি এই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোনীত হন সাক্কার আলি। তিনি এবং তৃণমূলের দখলবাটি অঞ্চল সভাপতি রুহুল আমিন স্কুলে ফের সরস্বতী পুজো করতে উদ্যোগী হন। তিনদিন ধরে প্রস্তুতি সেরে পুজোর আয়োজন করা হয়। পুরোহিত হন স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র তথা বর্তমানে রামপুরহাট কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া অরূপ মহন্ত। তিনি বলেন, পঞ্চম শ্রেণি থেকে এই স্কুলে পড়েছি। কোনও বছর পুজো হতে দেখেনি। সরস্বতী পুজোর সময় বন্ধুদের সঙ্গে রামপুরহাটের জে এল বিদ্যাভবনে গিয়ে পুষ্পাঞ্জলি দিতাম। এবার প্রাক্তনী ও পুরোহিত হিসেবে নিজের স্কুলে সরস্বতী পুজোয় অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
স্কুলের শিক্ষিকা মিতা মণ্ডল, শিক্ষক সুব্রত সাহা বলেন, যে স্কুলে শিক্ষকতা করছি, সেখানে সরস্বতীর বন্দনা না হওয়ায় খুবই খারাপ লাগত। এবছর সোমবার ভোরেই স্কুলে চলে এসেছিলাম। পড়ুয়াদের সঙ্গে আলপনা দেওয়া, পুজোর জোগাড় সেরে আলাদা অনুভূতি হচ্ছে। প্রাক্তনীদেরও অনেকে হাজির হয়েছিলেন। স্কুলে পুজো হওয়ায় খুশি সুমিত দাস, আরিয়ান আলিরা। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া, হুল্লোড় করে পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছিল তারা।
সাক্কার আলি ও রুহুল আমিন বলেন, স্কুলটি ৭৭বছরের পুরনো। অনেকদিন ধরে সরস্বতী পুজো বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা আনন্দ করতে পারত না। পড়ুয়াদের জন্যই এবছর থেকে ফের সরস্বতী পুজোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের স্কুলে সমস্ত সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা একসঙ্গে পুজো আয়োজনে অংশ নেয়। বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওই স্কুলে সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে সম্প্রীতির বাতাবরণ গড়ে উঠেছে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি।