নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বীরভূমে বোমা-বন্দুক উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত জেলা পুলিসের। ক’দিন আগে একরাতে একাধিক তল্লাশি অভিযানে বিপুল সংখ্যায় বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তার পরই পুলিস কর্তাদের আশঙ্কা, জেলাজুড়ে একাধিক জায়গায় বোমা-অস্ত্র মজুত থাকতে পারে। সেগুলির হদিশ পেতেই ধারাবাহিক অভিযান বলে পুলিস সূত্রের খবর। কিন্তু প্রশ্ন হল, এখন ভোট নেই। রাজনীতির তাপ-উত্তাপও নেই। তা সত্ত্বেও এত বোমা-গুলি জেলা ঢুকছে কেন? কোথা থেকেই বা আসছে? তার চেয়েও বড় কথা কারাই বা মজুত করছে? অভিযানের পাশাপাশি প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজতে মরিয়া তদন্তকারী অফিসাররা। এর মধ্যেই মঙ্গলবার সিউড়িতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। তিনি বলেছেন, ‘জেলায় অকারণে বাড়ছে বোমাবাজি। কোথাও পুলিসকে মারধর করা হচ্ছে। এসব মাস খানেক আগেও ছিল না!’ জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে অভিযানে নেমে পুলিস একরাতে ৮৫টি বোমা উদ্ধার করে। সেইসঙ্গে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১২টি কার্তুজও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। দুবরাজপুর, নানুর, ইলামবাজার, লোকপুর, মুরারই, রামপুরহাট, তারাপীঠ, মহম্মদবাজার, সাঁইথিয়া সহ আরও দু’টি থানার তরফে অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে সঠিক কোন পথ ধরে সেসব জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল, তা এখনও অস্পষ্ট। কার হাত ধরে সেসব জেলায় ঢুকছে তাও অজানা। পুলিস ধৃতদের জেরা করছে। প্রাথমিকভাবে খবর, এনিয়ে এখনও কোনও সূত্র সামনে আসেনি। বিষয়টি পুলিস মহলকে ভাবিয়ে তুলছে। সেক্ষেত্রে তদন্তে নেমে পুলিসকে খানিকটা বেগ পেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ঝাড়খণ্ড ও বিহার যোগ নিয়ে জল্পনা চলছে পুলিস মহলে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার নেপথ্যে কোনও পাচার চক্র সক্রিয় রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাজেয়াপ্ত করা বোমা ও বন্দুক কী কারণে মজুত করা হয়েছিল, তাও জানার চেষ্টা চলছে।
অপরাধ দমনে বীরভূম জেলা পুলিস ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। জেলাজুড়ে সারপ্রাইজ নাকা চেকিং জারি রয়েছে। আন্তঃরাজ্য ঝাড়খণ্ড সীমানায় নজরদারি শক্ত করা হচ্ছে। এরই মাঝে পুলিস কর্তাদের একাংশের আশঙ্কা, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আরও বোমা ও বন্দুক মজুত থাকতে পারে। যদিও এবিষয়ে পুলিসের তরফে স্পষ্ট কোনও তথ্য জানা যায়নি। তবে জেলা পুলিস সেসব উদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সোর্স কাজে লাগানো হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে ভর করে সন্দেহভাজনদের গতিবিধির ওপরও নজদারি চলছে। জেলা পুলিস কর্তাদের দাবি, দ্রুত গতিতে তদন্ত চলছে। খুব তাড়াতাড়ি সেসবের হদিশ মিলবে। পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, তদন্ত চলছে। বিভিন্ন সোর্স কাজে লাগানো হচ্ছে। যদি আরও কোথাও বোমা, বন্দুক মজুত থাকে, সেসব উদ্ধার করা হবে। সেইসঙ্গে এই ঘটনায় জড়িতদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। -নিজস্ব চিত্র