পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক ... বিশদ
প্রসঙ্গত, সোমবার কাটোয়া-আহমদপুর শাখার কেতুগ্রামের জ্ঞানদাস কান্দরা স্টেশনে রিলস ভিডিও করতে গিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠায় দশম শ্রেণির পড়ুয়া মহম্মদ ইব্রাহিম চৌধুরী ওরফে দিসানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ওভারহেড তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঝলসে যায় তার শরীর। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সবাই বারণ করা সত্ত্বেও সে শোনেনি। তিন বন্ধু মিলে রিলস করতে স্টেশনে এসেছিল। তাদের মধ্যে দিসানই তরতরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা চার কামরার রেকের ছাদে উঠে পড়ে। আরপরই দুর্ঘটনা ঘটে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মুর্শিদাবাদের আহিরণ সেতুতে রিলস করতে গিয়ে মালগাড়ির ধাক্কায় তিন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনায় আরও দু’জন জখম হয়েছিল। এছাড়া উত্তরপ্রদেশ, বিহার সহ বিভিন্ন রাজ্যে রিলস করতে গিয়ে একাধিক মানুষ মারা গিয়েছেন। কেউ রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছেন। আবার কেউ চলন্ত ট্রেন থেকে রিলস করতে গিয়ে ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা খেয়ে মারা গিয়েছেন। রেলের পক্ষ থেকে স্টেশনে বা ট্রেনের কামরায় রিলস করার নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও হুঁশ ফিরছে না।
কান্দরা স্টেশন লাগোয়া বাসিন্দা সঞ্জীব নন্দী বলেন, এই শাখায় সারাদিনে দু’টি ট্রেন চলাচল করে। তাই কার্যত ফাঁকা থাকে স্টেশন চত্বর। অল্পবয়সিদের ভিড় বাড়ছে। স্টেশন যেন রিলস তৈরির জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমরা নিষেধ করলেও কেউ শোনে না। একজনকে জীবন দিয়ে তার খেসারত দিতে হল। কাটোয়া জিআরপির ওসি তন্ময় পুরকাইত বলেন, আমরা স্টেশন এলাকায় সচেতনতার প্রচার চালাব। নিয়মত স্টেশনগুলিতে নজরদারি চালানো হয়। তবুও ফাঁক গলে কেউ বিপজ্জনক এলাকায় চলে গেলে আমাদের কিছু করার থাকে না।
মঙ্গলবার সকালে কেতুগ্রামের মৃত পড়ুয়ার শেষকৃত্য হয়। গ্রামের প্রতিবেশীদের চোখেমুখেও শোকের ছাপ দেখা যায়। এক প্রতিবেশী বলেন, এখনকার ছেলেমেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে দেওয়ায় এমন পরিণতি নেমে আসছে। মৃতের বাবা সুজন চৌধুরী বলেন, আমি বাইরে থাকি। ছেলেকে বারণ করা সত্ত্বেও বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মোবাইল নিয়ে বেরিয়ে যায়। বহু কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া শেখাচ্ছিলাম। আমার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।
গানের সঙ্গে নায়ক-নায়িকার ভঙ্গিমায় রিলস তৈরি এখন নতুন ট্রেন্ড। চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়েও অনেকে ভিডিও বানাচ্ছে। আবার কেউ রেললাইনে নেমে ঝুঁকি নিয়ে হিন্দি সিনেমার কায়াদায় স্টান্টবাজির ভিডিও করছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ রিলস বন্ধ হওয়া দরকার। তাছাড়া অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। কাটোয়া জিআরপি এবার রীতিমতো অভিযান চালাবে। রিলস করতে দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।