মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
এলাকার প্রবীণরা বলেন, কয়েকদশক আগেও এলাকার বিভিন্ন গ্রামে পৌষমাস ভর বিভিন্ন রীতি রেওয়াজ চালু ছিল। যদিও ওইসব রীতির অনেকটাই আর প্রচলন নেই। তবে কয়েকটি রীতি রেওয়াজ আজও চালু রয়ে গিয়েছে। যেমন গোবরের লক্ষ্মী তৈরি, আড়াই পাকের বাউরি দেওয়ার সঙ্গে ঢেকিতে চাল কুটা।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পৌষের শেষদিন বিভিন্ন গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গোবরের লক্ষ্মী তৈরি করা হয়। তৈরি করা লক্ষ্মীগুলি বাড়ির উঠোন, তুলসি মন্দির থেকে বিভিন্ন ঘরের দরজার মুখে কয়েকটি করে রেখে দেওয়া হয়। এরপর পৌষ আগলান বাড়ির মহিলারা। মহিলারা রাতভর লক্ষ্মীর ব্রতকথা, পাঁচালি সহ বিভিন্ন ধর্মীয় গল্পে মেতে থাকেন। মাঝে মধ্যেই দেওয়া হয় উলুধ্বনি। বেজে উঠে শঙ্খ।
এছাড়াও মাসের শেষদিন একটি খড় নিয়ে তৈরি করা বাউরি। এই বাউরি হল একটি খড় নিয়ে বাম হাতে আড়াই পাক দিয়ে কুণ্ডলী পাকান। এই কুণ্ডলী পাকান খড় পৌষের শেষদিন রাখা হয় রান্নাশাল সহ যেখানে খাবার সংরক্ষন করা হয়।
তবে সবচেয়ে আকর্ষণ হল ঢেকিতে পাড় দিয়ে পিঠের জন্য চালের গুড়ো তৈরি করা। যদিও সম্প্রতি অধিকাংশ বাসিন্দা হাসকিং মেশিনের মাধ্যমেই চাল গুড়ো করে থাকেন। তবে গ্রামের সচ্ছল পরিবারগুলিতে এখনও ঢেকিতে পাড় দেওয়ার রীতি রয়ে গিয়েছে। কান্দি ব্লকের রষোড়া গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা ধনঞ্জয় মণ্ডল বলেন, মেশিনের চালগুড়োয় তেমন স্বাদ থাকে না। তাই পিঠে তৈরির জন্য অনেক পরিবারের মধ্যে এখনও ঢেকি পাতার নিয়ম চালু রয়ে গিয়েছে। তাছাড়াও এর একটি ধর্মীয় কারণও আছে। অনেক পরিবারে সারাবছর না হলেও পৌষের শেষদিকে ঢেকি পাতা হয়। মাস পেরোলেই ফের ঢেকি তুলে নেওয়া হয়। প্রায় একই বক্তব্য বড়ঞা ব্লকের শ্রীহট্ট গ্রামের কার্তিক ঘোষের। তিনি বলেন, এবছর আমার বাড়িতেও ঢেকি পাতা হয়েছে। এখানে গ্রামের প্রায় অর্ধেক পরিবার চাল গুড়ো করে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে গোবরের লক্ষ্মী প্রসঙ্গে ভরতপুর ১ ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুরের অনিমা মণ্ডল বলেন, পূর্বপুরুষের রীতি রেওয়াজ অনেকে ছেড়ে দিলেও গ্রামের বহু মানুষ তা ছাড়তে পারেননি। এটা একটা ধারাবাহিক রেওয়াজ। তাই গোবরের লক্ষ্মীর সঙ্গে আড়াই পাকের বাউরি দেওয়া এখনও গ্রামের অনেক পরিবারে রয়ে গিয়েছে। ওই গ্রামের পাগলচন্দ্র মণ্ডল বলেন, আসলে সনাতন ধর্মে গোরবকে লক্ষ্মী মানা হয়ে থাকে। আর পৌষমাস হল লক্ষ্মীর মাস। সেই কারণে গোবরকে এদিন লক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয়।