মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
জেলার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঘটনায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সাত সকালে আট মাসের প্রসূতি স্ত্রীকে নিয়ে বাইকে চাপিয়ে তালাজুড়িতে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলেন চিটা রঘুনাথপুরের বাসিন্দা নির্মল মণ্ডল(৩৮)। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, উল্টো দিক থেকে একটি ডাম্পার আসতে দেখে রাঙ্গনিগোড়ার কাছে বাইক থামিয়ে দেন নির্মলবাবু। নেমে দাঁড়ান তাঁর স্ত্রী। এত সাবধানতা সত্ত্বেও উল্টোদিক থেকে আসা ওই ডাম্পারটি দম্পতিকে সজোরে আঘাত করে। তাঁদের নিয়েই পাশের জমিতে উল্টে যায়। ঘটনায় দু’জনেই গুরুতর জখম হন। তাঁদের উদ্ধার করে কাশীপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক নির্মলবাবুকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর প্রসূতি স্ত্রী বছর তেত্রিশের মঞ্জু মণ্ডলকে সেখান থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিবার সূত্রের দাবি, মঞ্জুদেবী দু’টি পা ও কোমরে ব্যাপক চোট পেয়েছেন। তাঁর গর্ভের শিশুকে বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা।
এই ঘটনার পরেই ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পাথর ভাঙার কারখানায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড়পুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই রমরমিয়ে চলছে পাথরের কারবার। অবৈধভাবে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলনের অভিযোগও নতুন নয়। শুধু তাই নয়, গ্রামীণ রাস্তায় যেখানে ১০টনের বেশি গাড়ি চলাচলের কথা নয়, সেখানের ডাম্পারগুলি ৩৫ টন থেকে ৫০ টন পর্যন্ত পাথর নিয়ে যাতায়াত করছে। সবটাই হচ্ছে পুলিস প্রশাসনের নাকের ডগায়। এর ফলে ওই এলাকার রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। যাতায়াত করা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এনিয়ে আগেও একাধিকবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বাসিন্দারা। কিন্তু, তাঁদের কথা কানে তোলার প্রয়োজনই মনে করেনি পুলিস, প্রশাসন। এদিন সেই পুঞ্জীভূত ক্ষোভই আছড়ে পড়ে। আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা ওই কারখানায় ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কারখানার অফিসে ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। ভেঙে দেওয়া হয় আলো, পাখা, একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। অফিসের পাশেই একটি জ্বালানি তেলের ট্যাঙ্কার রাখা ছিল। তা জ্বালিয়ে দেওয়া হলে বিস্ফোরণ হয়। আগুন লেগে যায় একটি ডাম্পারে। তাও পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিস বাহিনী ও দমকল। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিকেলে ফের নতুন করে কারখানায় উত্তেজনা ছড়ায়। মৃতের গ্রামের বাসিন্দারা পুলিসকে ঘিরে ক্ষোভ উগরে দেন। ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। গ্রামের বাসিন্দা পরেশ মণ্ডল বলেন, যে রাস্তায় ১০টনের বেশি ভারী যান চলাচল নিষেধ রয়েছে, সেই রাস্তায় ওভারলোডেড ডাম্পার চলে কী করে? পুলিস প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে এই অবৈধ কারবারে। অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। বিধান মণ্ডল, জ্যোৎস্না মণ্ডল বলেন, ডাম্পারের কারণে রাস্তা দিয়ে সাধারণ মানুষের চলা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধুলো আর ডাম্পারের আলোর তেজে সন্ধ্যার পর থেকে তো যাতায়াতই করা যায় না।