মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
শুক্রবার দুপুরে আহমদপুরের নেতাজি ক্লাব ময়দান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। দুই লোকসভা কেন্দ্রের দুই বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে প্রচুর দলীয় কর্মী, সমর্থকের সমাগম হয়। রাজ্যে অন্য দুই জায়গায় সভা সেরে দুপুর আড়াইটের কিছু পরে মঞ্চে আসেন মোদি। জেলার পাঁচ সতীপীঠকে প্রণাম করে বক্তব্য শুরু করেন। বোলপুর প্রার্থী পিয়া সাহাকে জেতানোর আহ্বান করার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, বীরভূমের সঙ্গে আমার আত্মিক যোগাযোগ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। সেই কারণে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। বীরভূমের মানুষ আমার খুব কাছের। আমি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২৫ বৈশাখ, গুরুদেবের জন্মদিনে বোলপুরে এসেছিলাম। আর সেখান থেকেই ‘সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্প’ ঘোষণা করেছিলাম। সেই প্রকল্পের জন্যই আজ বহু গরিব মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। আবার সামনেই আসছে ২৫ বৈশাখ, গুরুদেবের জন্মদিন। তার আগে এই মাটিতে এসে আমার আবেগ আর রুখতে পারছি না। এই মাটি থেকে নত হয়ে গুরুদেবকে প্রণাম জানাই। আর আপনারা একটা কথা দিন, যাঁরা এসেছেন তাঁরা সকলে বাড়ি ফিরে মোদির নমস্কার জানাবেন। মোদির বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি ভোটের মুখে বিশ্বভারতী আবেগ উসকে দিতে চাইছেন। ভোটের আগে রবীন্দ্রজয়ন্তীকে সামনে রেখে প্রচারের সুযোগে যেমন নিলেন, তেমনি বিশ্বভারতীর উন্নতিকল্পে আচার্য হিসাবে মোদিকে ফের পাওয়া যাবে এই দুই বার্তা কৌশলীভাবে তিনি বাজারে ভাসিয়ে দিতে চাইলেন। কিন্তু এতদিন আচার্য হিসেবে থাকা সত্ত্বেও যেভাবে বিশ্বভারতীর বিতর্ক, ডামাডোল নিয়ে কেন তিনি নীরব ছিলেন সেই প্রশ্নও উঠছে। প্রাক্তন উপাচার্যের সময়কালে একের পর এক বিতর্ক, বিশ্বভারতীর হেরিটেজ ফলকে কবিগুরুর বদলে মোদির নাম, ইত্যাদি বিতর্কে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাহলে হঠাৎ করেই ভোটের আগে কেন তিনি কবিগুরুর আবেগ উসকে দিচ্ছেন সেই প্রশ্নও তুলছে শাসকদল।
এদিকে নানুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভামঞ্চে বিশ্বভারতীর গৈরিকীকরণ করার চেষ্টা নিয়ে একটি নাতিদীর্ঘ ভিডিও দেখানো হয়। শাসকদল খোলাখুলি বিশ্বভারতীর অরাজকতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলছেন।
এদিন মোদি তাঁর বক্তব্যে কংগ্রেস ও তৃণমূলকে আক্রমণ করেন। বিজেপির নাম উচ্চারণ না করে আগাগোড়া নিজের বন্দনাতেই ব্যস্ত থাকেন। দুর্নীতি থেকে এই রাজ্যকে বাঁচাতে একমাত্র তিনিই পারবেন বলেন মোদি। এছাড়াও তিনি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিদিন দেশে একটা করে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। দুটো করে প্রতিদিন কলেজ তৈরি হচ্ছে। কংগ্রেস ৬০ বছরে যা করেনি মোদি তা ১০ বছরে করে দিয়েছে। এটা কেবল ট্রেলার মাত্র। এছাড়াও তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে বলেন, টিএমসি এখানে দুর্নীতির রেকর্ড করে দিয়েছে। যা কল্পনার অতীত। ব্যাঙ্কের মেশিন টাকা গুনতে গুনতে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এবার আমাদের ভোট দিয়ে ওদের সাজা দাও। কারণ এদের শাস্তি একমাত্র মোদিই দিতে পারে।
এদিন দর্শকাসনে থাকা কয়েকজনের থেকে শিব ও অন্যান্য দেবদেবীর ছবি চেয়ে নেন প্রধানমন্ত্রী। সভামঞ্চের খানিক দূরে থাকা শুকনো ঝোপে আগুন লাগায় চাঞ্চল্যও দেখা যায়। তবে দমকলবাহিনী দ্রুত সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিনের সভামঞ্চে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থী দেবাশিস ধরকে দেখতে পাওয়া যায়নি। যদিও সিউড়িতে যোগীজির সভায় বিজেপি নেতারা কথা দিয়েছিলেন দেবাশিসবাবু সব জায়গায় থাকবেন বলে। এদিনের বিজেপির হাই ভোল্টেজ সভা প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ বলেন, লোক হবে না জেনেই দুটো কেন্দ্র নিয়ে জনসভা করেছে। ওরা মোদিকে দিয়ে আরও ১০টা সভা করালেও বোলপুর থেকে দেড় লক্ষের বেশি ভোটে আমরা জিতব।