মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
কৃষ্ণনগর-শান্তিপুরের জাতীয় সড়কের ধারেই দিগনগর গ্রাম। নদীয়ার রাজা রাঘব রায় বিশাল এক দিঘি খনন করেছিলেন। সেই থেকেই এই গ্রামের নাম দিগনগর। এই দিগনগরেই রবীন্দ্রনাথের বড়দি সৌদামিনীর শ্বশুড়বাড়ি। যার সুবাদে এই গ্রামে আসা যাওয়া ছিল রবি ঠাকুরের। সেই দিঘির পাড়, চন্দনদহ, গ্রাম পোড়ো মন্দির, বটবৃক্ষ জীবন্ত হয়েছে রবি ঠাকুরের কবিতায়। সেই মন্দির থেকে বটবৃক্ষ, দিঘি, ওই গ্রামে আজও বিদ্যমান। কিন্তু সেসব অবহেলিত। ধ্বংসপ্রাপ্ত। সাধারণ মানুষকে সেই ঐতিহ্য জানানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। এই গ্রামের সৌন্দর্য্য রবি ঠাকুরের মনকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গিয়েছিল। দিগনগরের নাম পাওয়া গিয়েছে রবি ঠাকুরের ছড়ায়। ‘দিগনগরের মেয়েগুলি নাইতে নেমেছে/চিকন চিকন চুলগুলি ঝাড়তে লেগেছে/গলায় তাদের তক্তিমালা রক্ত ফুটেছে/পরণেতে ডুরে শাড়ী ঘুরে পড়েছে।’
দিগনগর গ্রাম থেকে একটু দুরে অঞ্জনা নদীর পাড়ে রয়েছে আড়বান্দি, পাটুলী, চন্দনদহ, গোপালপুরের মতো বহু গ্রাম। সেখানে থেকেও তাঁর কবিতা ও ছড়ার নানা উপাদান সংগ্রহ করেছিলেন কবিগুরু। অঞ্জনা নদী কৃষ্ণনগর শহরের এক সময়ের লাইফ লাইন। এই অঞ্জনা নদী নিয়ে রবি ঠাকুর কবিতা লিখেছিলেন, ‘অঞ্জনা নদীতীরে চন্দনী গাঁয়ে/পোড়ো মন্দিরখানা গঞ্জের বাঁয়ে...।’ এছাড়াও ক্ষণিকা কাব্যগ্রন্থে রবি ঠাকুর ‘এক গাঁয়ে’ কবিতায় অঞ্জনা নদীকে এঁকেছেন, ‘আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা, আমাদের নদীর নামটি অঞ্জনা,....।’
শোনা যায়, বাদকুল্লার এক খামারবাড়িতে রাত্রিযাপন করেছিলেন কবি। রবি ঠাকুরের ‘পণরক্ষা’ গল্পেও নদীয়ার ছবি ফুটে উঠেছে।
শান্তিপুরের নাম পাওয়া গিয়েছে, ‘উলোর মেয়ের কলকলানি শান্তিপুরের খোঁপা/নদের মেয়ের নথ নাড়া কলিকাতার চোপা।’
রাঘবেশ্বর মন্দিরের উত্তরদিকে কুমোরপাড়া পাশেই নাকি রবি ঠাকুরের বড় জামাইবাবু সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি ছিল। মালিকানা হস্তান্তর হলেও সেই বাড়ি অটুট রয়েছে। শোনা যায়, সেখানকার চিত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘কুমোরপাড়ার গোরুর গাড়ি, বোঝাই করা কলসি হাঁড়ি....।’ কবিতায়।
নদীয়ার প্রবীণ বাসিন্দা সঞ্জিত দত্ত বলেন,পল্লিকবি হিসেবে রবি ঠাকুরের আত্মপ্রকাশের অন্যতম উৎসভূমী নদীয়া। রবি ঠাকুরের কবিতার ইতিহাসে দিগনগরের নাম অমলিন। এইসব এলাকার বহু চিত্র প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের কলমের ছোঁয়ায়।