বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, আমি যখন প্রথমবার এখানে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসি তখন এলাকাবাসীর সমস্যা উপলব্ধি করেছিলাম। তারপর লাগাতার ব্রিজের দাবি জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী দেড়শো কোটির টাকার ব্রিজ অনুমোদন করেছেন কাজও শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ আমার কাছেও মন্থর গতিতে কাজ করা নিয়ে অভিযোগ করেছে। আমি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে এসেছি এখন নদী গর্ভে ভিত নির্মাণের কাজ চলছে বলে একটু সময় লাগছে। ওই অংশের কাজ হয়ে গেলেই দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন হবে।
জয়দেব বাংলার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মানচিত্রে এক উল্লেখযোগ্য নাম। অজয় পাড়ের এই জয়দেব কেন্দুলি গ্রামেই জন্ম গীতগোবিন্দের রচয়িতা, সাধক কবি জয়দেবের। সেখানেই বসে জয়দেবের মেলা। অজয় নদের উপর এই অস্থায়ী সেতু দিয়েই সেদিন হাজার হাজার মানুষ অজয়ের দুপাড়ে মেলায় ভিড় জমান। তাই ওই অস্থায়ী সেতুটিরও বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে। এই সেতু এলাকার যোগাযোগের মূল মাধ্যম। বীরভূমের জয়দেব, টিকরবেতা, জনুবাজার, রামপুর সহ বহু গ্রামের মানুষ সেতু পেরিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের শিবপুর, দুর্গাপুর পাড়ি দেয়। কেউবা ব্যবসার কাজে, কেউ চিকিৎসার জন্য। দুটি জেলার বাসিন্দারা শিক্ষাক্ষেত্রেও একে অপরের উপর নির্ভরশীল। ইলামবাজার কলেজ, জানুবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে যেমন পশ্চিম বর্ধমান জেলার বহু পড়ুয়া পড়তে আসে তেমনি দুর্গাপুরের বহু বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ে এই এলাকার পডুয়ারা। কিন্তু এই যোগযোগের মাধ্যমটিই বর্ষা পড়লে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পুজো পর্যন্ত পারাপার বন্ধ। এলাকাজুড়ে চরম সংকট শুরু হয়। অন্যবার বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে অজয়ের অত্যধিক জলে প্লাবিত হয়ে যায় পাইপ, বোল্ডার দিয়ে বানানো অস্থায়ী সেতুটি। কিন্তু এবার প্রথমেই ঘটল অঘটন। বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসী উঠে দেখেন সেতুর অনেক উপর দিয়ে নদের জল প্লাবিত হচ্ছে। তাই যোগাযোগ করার ঝুঁকি কেউ নেয়নি। জানা গিয়েছে, হিংলো জলাধারে অত্যধিক জল ছাড়ার জন্যই জলের স্রোত বেড়েছে অজয় নদে। তাই অঘটন। অন্যদিকে হঠাৎ এই ঘটনা ঘটায় নৌকারও ব্যবস্থা ছিল না। যারজেরে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পড়ুয়া রেশমি দে, রাজু দাস বলেন, এদিন সকালে টিউশন পড়তে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে ছিলাম। কিন্তু নদের জল বেড়ে গিয়েছে তাই যাওয়া হল না। স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রভাত নায়ক বলেন, দুই জেলাতেই ব্যবসা রয়েছে এই ক’মাস খুব কষ্ট করে চালাতে হয়। কারণ এই রাস্তা বাদ দিলে প্রায় তিরিশ কিলোমিটার ঘুরে ইলামবাজার হয়ে দুর্গাপুর যেতে হবে। এই এলাকায় একটি স্থায়ী ব্রিজের জন্য স্থানীয় বাউল সম্প্রদায়ও দরবার করেছিল।
মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু এলাকাবাসীর সমস্যা চিন্তা করে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করে ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এমনকী যেখানে কয়েক কিলোমিটার দূরেই ইলামবাজারে অজয় নদের উপর একটি নতুন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তারপরও সেই সেতুটির অনুমোদন দেয় রাজ্য। যা নিয়ে এলাকাবাসী খুশিতে আত্মহারা ছিল। কারণ তারা স্বপ্ন দেখেছিল, বর্ষার এই কয়েক মাসের কষ্ট লাঘব হতে চলেছে। কিন্তু অভিযোগ, এক বছর আগে থেকে ব্রিজের কাজ শুরু হলেও তা চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। এমনকী এনিয়ে তারা দরবার করেছিল মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার কাছেও। এদিন অস্থায়ী সেতু প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় এনিয়ে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। তাদের দাবি, যেভাবে কাজ চলছে তাতে আরও বেশ কয়েকটি বর্ষা এভাবেই এলাকাবাসীকে কষ্ট করতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দা দীনেশ পাল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তো সেতু দিয়েছেন। কিন্তু যেভাবে তা নির্মাণ হচ্ছে কবে শেট হবে জানি না। প্রয়োজনে উচিত দ্রুত এনিয়ে সদর্থক ভূমিকা নেওয়া। যদিও প্রশাসনের দাবি, ২০২০ সালে ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। আশা করা যায় সঠিক সময়েই কাজ শেষ হবে।