মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
রণহস্তীর ভূমিকা শেষ হল মানেই হাতি ধরার প্রক্রিয়াও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করল। এর সাত বছর পর ভারতবর্ষ স্বাধীন হচ্ছে। বড় বিচিত্র সেই সময়। জমিদারি প্রথা অনেক আগেই উঠে গিয়েছে। দেশীয় রাজ্যগুলি একে একে স্বাধীন ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শামিল হয়ে যাচ্ছে। ঐতিহ্য ও পরম্পরা বজায় রাখতে কিছু জমিদার বাড়িতে তখনও হাতি রয়ে গিয়েছে। কালে কালে সেটাও নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে।
উত্তরবঙ্গের উত্তরাঞ্চলেও স্মরণাতীত কাল ধরে হাতির গমনের পথ রয়েছে। এখন যাকে ‘করিডর’ বলা হয়। অসম হয়ে অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলা, ভুটান ও নেপাল সীমান্তের বিরাট এলাকাজুড়ে হাতিদের চলাচল আদিকাল থেকে। হাতিরা চলাচল করে তাদের নিজস্ব নিয়মে। সেই কবে ব্রিটিশরা ভারতে এসে উত্তরবঙ্গ, অসমে চা চাষ শুরু করেছিল! শুরু হয়েছিল রেললাইন পাতার কাজ। চা পাতা উৎপাদন করে, গাছ কেটে সেই চা ও কাঠ ট্রেনে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হতে সমস্যা আরম্ভ। যে হাতির পাল গহীন অরণ্য পথে বিচরণ করে এসেছে, তার চলার পথে গড়ে উঠল চা বাগান। বদলাতে হল পথ। আবার ফিরতি পথে কয়েক বছর পর গজিয়ে উঠল শ্রমিক বস্তি বা রেল লাইন। ফলে আবারও পথ বদলাতে হলো হস্তীযুথকে। শুরু হল মানুষ ও হাতির সংঘাত।
কোথাও সংকোশ আর কোথাও তিস্তা! এই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কয়েক দশক আগেও ছিল ঘন অরণ্য। স্বাধীনতা, ব্রিটিশ আমল বা তারও আগে রাজন্য শাসিত আমলে এই অঞ্চলে অরণ্য কত ঘন ছিল, তা অনেকেরই জানা। হাতির সংখ্যাও অনুমান করা যায়। কিন্তু মানুষের সংখ্যা ছিল কম। চা বাগান, দেশভাগ, বাংলাদেশের যুদ্ধ, শরণার্থীদের আশ্রয় সহ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধিই হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাতের পটভূমি রচনা করেছে। যা আজ চরম বিপদের মুখে দাঁড় করিয়েছে। হাতি ও মানুষের প্রাণ সংশয় হচ্ছে অহরহ।
বনদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক বিমল দেবনাথ বলেন, আগে যে সব জায়গায় হাতি বের হতো না, এখন সেখানেও দেখা যাচ্ছে। উত্তরবঙ্গ শান্ত জায়গা ছিল। এত মানুষের বসবাস হওয়ার কথা ছিল না। ব্যাপক হারে বসতি বৃদ্ধির কারণেই সমস্যা। (চলবে)