হস্তশিল্পীদের প্রতিভার স্বীকৃতি ও সুনাম। আর্থিক ঝুঁকি নেওয়ায় বিরত হন। কর্ম বিষয়ে সুখবর পেতে পারেন। ... বিশদ
ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে গোটা বিশ্বকে অবাক করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ভোটাভুটি। দীর্ঘ মার্কিন নীতি থেকে সরে ইউরোপের বিরুদ্ধে গিয়েছে আমেরিকা। পক্ষ নিয়েছে রাশিয়ার। অর্থাৎ, রাশিয়াকে আর বড় বিপদ ভাবছেন না ট্রাম্প। বরং, নতুন বিশ্বে চীনই ‘মূল শত্রু’ ওয়াশিংটনের। আর তা বুঝেই এবার পাল্টা সুর চড়াল বেজিং। ঘটনাচক্রে, ভারতের মতো চীনের উপরও পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ট্রাম্পের ঘোষণা, ভারত ও অন্য দেশগুলির মতো চীনের উপরও বর্ধিত শুল্ক চাপছে আগামী ২ এপ্রিল থেকে। সেই প্রেক্ষিতেই চীনা বিদেশ মন্ত্রক এক্স হ্যান্ডলে লিখেছে, তুচ্ছ অজুহাতে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়েছে আমেরিকা। চীনা দূতাবাসের হুঁশিয়ারি, আমেরিকা যদি যুদ্ধ চায়, তাহলে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে প্রস্তুত বেজিংও। তা সে শুল্ক-বাণিজ্যযুদ্ধই হোক, বা অন্য যে কোনও যুদ্ধ। আর এই হুমকির মধ্যেই বুধবার প্রতিরক্ষা বাজেটে এক ধাক্কায় ৭.২ শতাংশ বরাদ্দ বাড়িয়েছে জি জিনপিংয়ের দেশ। মূলত সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে চীনের প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ২৪ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। সর্বাধুনিক যুদ্ধজাহাজ ও নিউ জেনারেশন ফাইটার জেট তৈরির লক্ষ্যেই এই বিপুল বরাদ্দ। আমেরিকার বিরুদ্ধে চীনের বিদেশ মন্ত্রকের হুমকি ও বিশাল বপু প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণার এই সমাপতনে স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা তুঙ্গে।
মূলত ফেন্টানাইল নামে একটি ড্রাগকে কাঠগড়ায় তুলে চীনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ফেন্টানাইল উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিকগুলি আমেরিকায় রপ্তানি এখনও বন্ধ করেনি চীন। মার্কিন মুলুকে ওপিঅয়েড ওভারডোজে মৃত্যুর মূল কারণ এই ফেন্টানাইল। যদিও বেজিংয়ের পাল্টা দাবি, আমেরিকায় ফেন্টানাইল জনিত সমস্যা বাস্তবে তাদের নিজেদেরই তৈরি। এক্স হ্যান্ডলে চীনের বিদেশ মন্ত্রক লিখেছে, আমাদের প্রচেষ্টাকে মান্যতা না দিয়ে বরং চীনের উপরই দায় চাপাচ্ছে আমেরিকা। শুল্ক বাড়িয়ে চাপ সৃষ্টি ও ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করছে। আমেরিকাকে সাহায্যের প্রতিদানে ওরা আমাদের শাস্তি দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। ফেন্টানাইল সমস্যার সমাধান চাইলে চীনকে ‘সমকক্ষ’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। কেউ যদি ভাবে চীনের উপর চাপ দিলেই কেল্লা ফতে হয়ে যাবে, তাহলে তারা অঙ্কে ভুল করছে। ভয় পাওয়ার বান্দা চীন নয়।
দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চীনা পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। অর্থাৎ, পুরোদস্তুর বাণিজ্য-যুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত। ইটের বদলে পাটকেল এসেছে বেজিংয়ের তরফেও। মার্কিন কৃষি ও খাদ্যদ্রব্যের আমদানিতে চীন পাল্টা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর চাপিয়েছে। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে আমেরিকার ২৫টি কোম্পানির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রক।
তাহলে কি আমেরিকা ও চীনের এই সংঘাতের আবহে নয়া মোড়কে ‘ঠান্ডাযুদ্ধে’র মুখে বিশ্ব? নাকি বাস্তবিকই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা মাথায় রেখে কোমর বাঁধছে দু’পক্ষ? ট্রাম্পের পদক্ষেপ ও বেজিংয়ের হুমকি সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।