মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
অমৃতকুম্ভের টান বড় বিচিত্র। এই বিপুল চত্বরে প্রবেশ মাত্রই জাত, বর্ণ, সম্পদ ফ্যাকাশে রং ধরে। কেউ আসে প্রিয়জনকে হারানোর একবুক যন্ত্রণা নিয়ে, কেউ সন্তানের আশা, কেউ মুক্তিলাভ। সব পথই কিন্তু গিয়ে মিলে যায় এক অনন্য প্রাপ্তির গন্তব্যে—বিশ্বাস। রুক্ষ পথও তখন যে আর কঠিন মনে হয় না। ‘গুরু পেয়ে গিয়েছি। ব্যস, সব অপেক্ষা শেষ।’ কীসের অপেক্ষা? ‘জীবনের সারসত্য জানার। ঈশ্বরকে জানার, উপলব্ধির। ছেলেবেলা থেকেই ভিতরটা আনচান করে উঠত... অদ্ভুত একটা টান অনুভব করতাম। কিন্তু বুঝিনি, সেটা কী। সংসারে থেকেও সব সময় একটা অস্থিরতা তাড়া করত। তারপর একদিন শ্রী পঞ্চ দশনাম জুনা আখড়ার গুরু রামগিরি মহারাজের দেখা পেলাম। মনে হল, জীবনের যে উদ্দেশ্যের খোঁজে এতদিন হাতড়ে বেড়িয়েছি, সেই পথ এবার দেখতে পাব। ৮ তারিখে কুম্ভে এলাম। ৯ তারিখ সকালে সংস্কার হল। নিজের হাতে পিণ্ডদান করলাম সঙ্গম তীরে বসে।’ উদ্দেশ্য খুঁজে পেলেন? হাসলেন সোমগিরি মহারাজ—‘পথ চলার এই তো শুরু। খোঁজেরও। এই যে কুম্ভে এত সাধু সন্ন্যাসী আসছেন, কেন? জীবনের এই পথ খুঁজতেই তো! সন্ত মিলন কো জাইয়ে ত্যাজি মোহ মায়া অভিমান/জো জো পা আগে ধারে, কোটি যুগ সমান। কী বুঝলেন?’
গুরু মিলনের টান। আর সেই টানেই হাজার বাধা বিপত্তি উড়িয়ে প্রয়াগরাজে ছুটে এসেছেন ঢাকার বাসিন্দা সপ্তসিন্ধু গঙ্গোপাধ্যায় (নাম পরিবর্তিত)। ওদেশে এই অবস্থা! এলেন কীভাবে? বললেন, ‘আমি নির্মোহী আখড়ার ভক্ত। অনেক দিন ধরেই ঠিক করেছিলাম, একবার অন্তত প্রয়াগে আসব। তারপর আমাদের ওখানে যা অবস্থা হল, ভাবলাম... আর বোধহয় পূর্ণকুম্ভে আসা হবে না। কিন্তু গুরুর টান দেখুন, ২৯ ডিসেম্বর মেডিক্যাল ভিসার আবেদন করলাম। ৮ তারিখ ভিসা পেলাম হাতে। ৯ তারিখ সকালেই কলকাতায় এসে আজমির এক্সপ্রেস ধরে সোজা এই পুণ্যতটে।’ ক্লান্ত লাগছে না? ‘ট্রেনে আসার সময় লাগছিল। আজ সকালে গঙ্গায় ডুব দিলাম। সব ক্লান্তি ধুয়েমুছে সাফ। মনে হল, ভাগ্যিস গুরু টেনেছিলেন।’
সপ্তসিন্ধুর চোখে তৃপ্তি। ঠিক সোমগিরি মহারাজের চোখে যা ছিল। এই তৃপ্তি বিশ্বাসের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের। নিজেকে খুঁজে পাওয়ার।