নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নীতি আয়োগ বলেছে, ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বেকারত্ব। তাবৎ বণিকসভা ও শিল্পমহল বারংবার সরকারকে সতর্ক করছে, কর্মসংস্থান না বাড়লে অর্থনীতির ঝিমুনি কাটবে না। বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি আর্থিক সংস্থার রিপোর্টেও বলা হচ্ছে, আগে মানুষের হাতে নগদ টাকা পৌঁছতে হবে। যেহেতু মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব হাত ধরাধরি করে বাড়ছে, তাই অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের হার কমেই চলেছে। বিভিন্ন মহলের এধরনের অভিযোগ ও নানান রিপোর্ট যে সঠিক নয়, তা প্রমাণ করতে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক বছরের শুরুতেই তৎপর হয়েছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের একটি রিপোর্ট ও নিজেদের সমীক্ষা প্রকাশ করে মন্ত্রক দাবি করে, আদতে ২০১৪ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে ৩৬ শতাংশ বেড়েছে কর্মসংস্থান। প্রায় ৬৫ কোটিতে পৌঁছেছে কর্মসংস্থান। কিন্তু টাটা ইনস্টিটিউট অব সোস্যাল সায়েন্সের বিশেষজ্ঞ অথবা নীতি আয়োগের প্রাক্তন পরিসংখ্যানবিদ সদস্যরা প্রশ্ন তুলছেন মোদি সরকারের কর্মসংস্থান গণনার পদ্ধতি নিয়েই। তাঁদের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এ সংক্রান্ত রিপোর্টের তালিকায় প্রবেশ করে গিয়েছে খেতমজুর, পারিবারিক স্বনিযুক্তি এবং অনির্দিষ্ট বেতনের অস্থায়ী কাজও।
এই পরিসংখ্যানবিদদের বক্তব্য, সংগঠিত ক্ষেত্রে কেউ কাজ করে না, এমন পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য যদি নিজেদের মতো করে কোনও স্বনিযুক্ত ব্যবসায় শামিল হয়, তাহলে তা সরাসরি কর্মসংস্থান বৃদ্ধিহারের তালিকায় আসবে না। কিন্তু শ্রম মন্ত্রক এধরনের স্বনিযুক্তিকেও কর্মসংস্থানের তালিকায় ঢুকিয়েছে। আদতে কর্মসংস্থান যে বাড়ছে না তার অন্যতম বড় প্রমাণ হল কৃষিভিত্তিক কাজে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা। যখনই শহর ও গ্রামে সংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ থাকে না, তখনই কৃষি সংক্রান্ত কর্মীর সংখ্যাবৃদ্ধি হয়। অথচ সেটা সংগঠিত কর্মসংস্থান বলা যায় না। কিন্তু শ্রমমন্ত্রক কিংবা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঠিক সেটাই করেছে। এগুলিকেও কর্মসংস্থান দেখিয়েছে। বিগত ৬ বছরে দেখা গিয়েছে সরাসরি কৃষি নয়, কৃষিভিত্তিক কাজে যুক্ত হয়েছে বেশি মানুষ। যাদের বেশিরভাগই জমিহীন মজুর।