মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
কুম্ভমেলার মতো বিশাল জনসমাগমে কথা কাটাকাটি বা হাতাহাতি বড় কোনও বিষয় নয়। মাঝে মধ্যেই হয়। বহু ক্ষেত্রে আশপাশের লোকজনই রণংদেহী দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। নাহলে আসে লাঠি উঁচিয়ে পুলিসের ধমক। ওই যথেষ্ট। কিন্তু এবার ছোটখাট বিষয়েও নজর রাখছে সিআরপি! কথাটা শুনে মাথা নাড়লেন এস গুজ্জর। নির্মল আখড়ার বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। প্রথমবার প্রশ্ন শুনে কোনও উত্তরই দিলেন না। পরে সাংবাদিক শুনে বললেন, ‘সেফটি ফার্স্ট।’
শুধুই সেফটি? নিরাপত্তা? তার জন্য এত কড়াকড়ি! দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিস কর্তা জানালেন, ভিড় আছে। অন্যান্য রিস্কও তো আছে। সেটা কী, তা ভেঙে না বললেও সহজেই অনুমেয়। কিছুদিন আগেই এই মেলায় হামলা চালানোর হুমকি এসেছিল কানাডায় থাকা খালিস্তানি জঙ্গি নেতা গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুনের কাছ থেকে। সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি সংগঠনের একের পর এক গ্রেপ্তারির মতো ঘটনা। আশঙ্কা বাড়িয়েছে গোয়েন্দা রিপোর্টও। তাতে বলা হয়েছে, কয়েকটি ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের নিশানায় রয়েছে প্রয়াগরাজের পূর্ণকুম্ভ। সেই কারণেই কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। পূর্ণকুম্ভের নিরাপত্তায় একেবারে সাতস্তরীয় বলয়। প্রয়াগরাজে পূর্ণকুম্ভে নিরাপত্তায় যে কোনও ফাঁক থাকবে না, তা অবশ্য আগেই ঘোষণা করেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। তা যে শুধু কথার কথা নয়, সেটা বোঝা গিয়েছিল স্টেশনে পা রেখেই। যাত্রীদের সমান সমান না হলেও অন্তত ৫০০ আরপিএফ ও পুলিসকর্মী ছিল প্রয়াগরাজ জংশনে। প্রয়াগরাজ চৌকি স্টেশনে যাত্রীর থেকে পুলিস বেশি। প্রশাসন সূত্রে খবর, ৪৪ দিনের পূর্ণকুম্ভে শাহি স্নানের দিন রয়েছে ছ’টি। হামলার জন্য জঙ্গিরা এই দিনগুলি বেছে নিতে পারে আশঙ্কায় শাহি স্নানের স্থানে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। সঙ্গমে নিরাপত্তার ভার রয়েছে জলপুলিসের বিশেষ বাহিনীর কাঁধে। সঙ্গে থাকবে আন্ডারওয়াটার ড্রোন। কুম্ভমেলার ইতিহাসে এই প্রথমবার।
ডিজিপি প্রশান্ত কুমারের কথায়, এলাকাভিত্তিক নজরদারির জন্য সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি পুলিস রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে এনএসজি কমান্ডো ও স্নাইপার মোতায়েন করেছে যোগী সরকার। রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, বিমানবন্দর সহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নজরদারির জন্য মোট ৫৭টি অস্থায়ী পুলিস স্টেশন ও ২৩টি চেকপয়েন্টের পাশাপাশি প্রতিটি এন্ট্রি পয়েন্টে বসানো হয়েছে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্যামেরা। সব মিলিয়ে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে এ যেন অন্য পূর্ণকুম্ভ! নিজস্ব চিত্র