নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এক হাজারেরও বেশি চিকিৎসকের পদোন্নতি আটকে রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রধান দু’টি শাখার একটি হল মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক চিকিৎসক। তাঁরা কাজ করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসের আওতায়। এই শিক্ষক চিকিৎসকদের একাংশের পদোন্নতি আটকে আছে। ৫৫টির মধ্যে চিকিৎসার ৪৩ শাখাতেই এই অবস্থা। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, প্রোমোশনের মাধ্যমে ৪২০ জন শিক্ষক চিকিৎসক প্রার্থীর সহকারী অধ্যাপক, ৪৩০ জন প্রার্থীর সহযোগী অধ্যাপক এবং ২৮২ জন প্রার্থীর অধ্যাপক পদে উন্নীত হওয়ার কথা। ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, বছরের পর বছর মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে ও ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে কাজের মর্যাদা হিসেবে পদোন্নতির আশা করে থাকেন তাঁরা। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ইন্টারভিউ দেওয়ার পর মাসের পর মাস, এমনকী বছর ঘুরেছে। ‘তীর্থের কাক’-এর মতো অপেক্ষা সত্ত্বেও প্রোমোশন লিস্ট আর প্রকাশিত হচ্ছে না। সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চেম্বার করা যাবে না, কর্মস্থলের ২০ কিমির বাইরে প্র্যাকটিস করা যাবে না ইত্যাদি একের পর এক নির্দেশনামা প্রকাশ করছে দপ্তর। কিন্তু পদোন্নতির তালিকা আটকে রাখছে কেন? ক্ষোভ প্রকাশ করে এমনও অনেকে জানিয়েছেন যে এর ফলে ক্রমেই তাঁরা কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘একে একে পদোন্নতির তালিকা প্রকাশিত হচ্ছে।’
দপ্তর সূত্রে খবর, ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় পদোন্নতিতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের জন্য নির্দেশনামা প্রকাশিত হয়। হাজারের বেশি পদে পদোন্নতির জন্য ২০২৩ সালের ১১-১৯ ডিসেম্বর প্রার্থীরা ইন্টারভিউতে বসেন। আরএমও থেকে সহকারী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক—এই তিনটি স্তরে উন্নীত হওয়ার জন্য ইন্টারভিউ হয়। সব মিলিয়ে চিকিৎসার ৫৫টি শাখার জন্য সেই ইন্টারভিউ হয়েছিল। ২০২৪ সালের ১১ মার্চ থেকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মাত্র ১২টি শাখার ফল প্রকাশিত হয়।
দপ্তর সূত্রে খবর, প্রথম প্রকাশিত হয় মনোরোগবিদ্যা বা সাইকিয়াট্রির পদোন্নতি প্রার্থীদের ফলাফল। তারপর ধাপে ধাপে অ্যানাটমি, বায়োকেমিস্ট্রি, কমিউনিটি মেডিসিন, ইএনটি, ফরেনসিক, গাইনি, মাইক্রো, অপথালমোলজি, ফার্মাকোলজি, ফিজিওলজি এবং শেষে ট্রপিক্যাল মেডিসিনের শিক্ষক চিকিৎসকদের পদোন্নতির তালিকা প্রকাশিত হয়। কিন্তু বছর ঘুরলেও প্রকাশিত হয়নি সিংহভাগ শাখার (৪৩টি) তালিকা। তাই ক্ষোভ বাড়ছে শিক্ষক চিকিৎসকদের অনেকের মধ্যেই।